শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

পরবাসীরা খুলনা মহানগর জাপার কর্ণধার

খুলনা অফিস : গেল ফেব্রুয়ারিতে বিতর্কীত ব্যক্তি জাতীয় পার্টিতে (জাপা) যোগদান করার পর দলের স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ শুরু হয়েছে। দলের অভ্যন্তরে তার অনুপ্রবেশ স্থানীয় প্রতিষ্ঠাতা সদস্যরা দলীয় প্রতীক লাঙ্গল ছেড়ে ঘরমুখো হয়েছে। আবার অনেকে সরকারি দলে নামও লিখিয়েছে। মহানগর জাপার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দল থেকে পদত্যাগের পর যারা নয়া কমিটির নেতৃত্বে এসেছেন তারা স্থানীয় রাজনীতিতে অপরিচিত। এমনকি এ অঞ্চলের ভোটারও নন কেউ কেউ। পরবাসী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে স্থানীয় জাপার রাজনীতিতে। এতে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি মহানগর জাপার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

নগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক শেখ আবুল কাশেম হত্যা মামলার আসামী এস এম মুশফিকুর রহমানকে খুলনায় জাপার মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করলে স্থানীয়দের একটি অংশ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা এক এক করে দল ত্যাগ করে। জাতীয় পার্টি নেতা শেখ আবুল কাশেমের সহোদর নগর জাপার সভাপতি শেখ আবুল হোসেন দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে সতীর্থদের নিয়ে দল ত্যাগ করেন। নগর জাপার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য এম এ আল-মামুন দল থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন।

দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় খুলনার রাজনীতির অঙ্গণে কখনো পরিচিত ছিলেন না। তিনি দশম সংসদ নির্বাচনে খুলনা-১ আসন থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েও ভোটের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। হঠাৎ করে খুলনার রাজনীতিতে জুড়ে বসেছেন। অপরদিকে গত ২২ মার্চ দলীয় প্রধান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ খুলনা সফরে এসে এস এম মুশফিকুর রহমানকে মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করায় জাপার রাজনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। জাপার পরীক্ষিত কর্মীরা বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবে নেয়নি। এ ঘটনার জের হিসেবে নগর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দল ত্যাগ করলে পরবাসীদের দিয়ে শূন্যতা পূরণ করা হয়েছে। এছাড়া সদ্য জাতীয় পার্টিতে যোগদান করা ১৯ জন আইনজীবীর মধ্যে শান্তকে নিয়ে রয়েছে বিতর্ক।

দলীয় সূত্র বলেছে, ২০১৪ সালে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জাপার মেয়র প্রার্থী তিন হাজার ৭০ ভোট পান। কাজি আমিন হকের পর ১৯৯০ সাল থেকে গত ২৭ বছরে কেসিসিতে জাপার কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। ব্যক্তির প্রভাব প্রতিপত্তি এবং অর্থ দিয়ে কয়েকজনকে পোষার কারণে স্থানীয় জাপা কার্যালয়ে সরগম দেখা গেলেও জনমত গঠনে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। শুধুমাত্র রঙিন প্যানা আর খবরের কাগজে বিবৃতি দিয়ে রাজনৈতিক ইমেজকে ধরে রাখতে ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। সংসদ নির্বাচন, কেসিসি, উপজেলা, জেলা পরিষদ ও ইউপি নির্বাচন প্রমান করেছে এখানে জাপার জনসমর্থন শূন্যের কোঠায়। মহানগরীর পাঁচ থানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম সদ্য নগর জাপার নয়া কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে না রাখায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে এসব নেতাদের মধ্যে। 

দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পার্টির নগর শাখার আহ্বায়ক সুনীল শুভ রায় বলেন, নতুন কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম সুন্দরভাবেই চলবে। সম্মেলনের মাধ্যমে ৩১ ওয়ার্ড ও ৫ থানার সম্মেলন শেষে সম্মেলনের মাধ্যমে নগর কমিটি গঠন করা হবে।  পার্টির নগর কমিটির সদস্য সচিব ও কেসিসি মেয়র প্রার্থী এস এম মুশফিকুর রহমান বলেন, সম্মেলনের মাধ্যমে থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন হলে সম্মেলনের মাধ্যমে নগর কমিটি গঠন করা হবে। 

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা-কর্মী জানান, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যারা খুলনা জাপার হাল ধরেছিল তারা যোগ্য মূল্যায়ন না পেয়ে ক্ষুব্ধ। যে কারণে অনেকে দলত্যাগ করেছে, আবার অনেকে নিষ্ক্রিয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ