শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

বাজেটে আবাসন খাতে ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের দাবি রিহ্যাবের

স্টাফ রিপোর্টার: আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে আবাসন খাতে ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের দাবি জানিয়েছে রিয়েল এস্টেট এন্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।
গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় রিহ্যাবের প্রথম সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূইয়া এ প্রস্তাব দেন। প্রাক-বাজেট আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান। এ সময় এনবিআরের সদস্য এবং রিহ্যাব কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
নজিবুর রহমান বলেন, সরকার ব্যবসায়ীদের প্রতি আন্তরিক। আমরা করদাতাদের উৎসাহিত করতে চাই। ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে রিহ্যাবের দেয়া প্রস্তাবগুলো গভীরভাবে পর্যালোচনা করা হবে।
রিহ্যাবের অন্য দাবিগুলো - সিঙ্গেল ডিজিটে সুদের হারে দীর্ঘমেয়াদি রি-ফাইন্যান্সিং পদ্ধতি চালু, ফ্ল্যাট ও প্লট রেজিস্ট্রেশন সংশ্লিষ্ট কর ও ফি সর্বমোট ৭ শতাংশ নির্ধারণ, অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ, আবাসন শিল্প রক্ষার্থে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিদ্যমান মূসক (মূল্য সংযোজন কর) হ্রাস, শহর এলাকায় ৫ বছর ও শহরের বাইরে ১০ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধাসহ নতুন কোনো মূসক আরোপ না করা।
লিয়াকত আলী বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে রিহ্যাব থেকে গৃহায়ন শিল্পের উদ্যোক্তাদের আয়কর হ্রাস, গেইন ট্যাক্স ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ নির্ধারণ করার দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনকে তহবিল প্রদানের মাধ্যমে আবাসন খাতের ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধি করা, রাজউক ও সিডিএ-এর আওতাভুক্ত ও বহির্ভূত এলাকায় সব জমির ক্ষেত্রে আরোপিত কর প্রত্যাহার, ক্রেতা,জমির মালিক ও ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানকে সংকট থেকে উদ্ধারের জন্য অসমাপ্ত প্রকল্পগুলোতে বিশেষ ঋণের প্রচলন, নামমাত্র রেজিস্ট্রেশন ব্যয় নির্ধারণ করে আবাসন খাতে ‘সেকেন্ডারি বাজার’ ব্যবস্থার প্রচলন, বিকেন্দ্রীকরণ নগরায়ন ও পারিপার্শ্বিক উন্নয়নে শহর এলাকায় ৫ বছর এবং শহরের বাইরের এলাকায় ১০ বছরের জন্য ‘ট্যাক্স হলিডে’র মাধ্যমে উৎসাহিত করা এবং সাপ্লায়ার ভ্যাট ও উৎসে কর সংগ্রহের দায়িত্ব থেকে ৫ বছরের জন্য ডেভেলপারদের অব্যাহতি দেয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য তফসিলি ব্যাংকের গৃহ ঋণ প্রদান বন্ধ আছে। আবাসন শিল্প রক্ষার্থে অবিলম্বে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক রি-ফাইন্যান্সিং ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন। এতে ক্রেতারা ঢাকা শহরের আশপাশে বা মিউনিসিপ্যাল এলাকার পাশে ১৫০০ বর্গফুট বা তার চেয়ে ছোট ফ্ল্যাট কিনতে স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে ডিবিএইচ, আইডিএলসি, ন্যাশনাল হাউজিংয়ের মতো অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সহজ শর্তে গৃহ ঋণ দেয়া যেতে পারে। ফ্ল্যাটের সাইজের ওপর ভিত্তি করেও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ও স্বল্প সুদে ঋণ দেয়া যেতে পারে। এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নে বাজেটে ন্যূনতম ২০ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠনের দাবি জানানো হয়েছে।
লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, আবাসন খাতের গতিশীলতায় গেইন ট্যাক্স ২ শতাংশ, স্ট্যাম্প ফি ১ দশমিক ৫ শতাংশ, রেজিস্ট্রেশন ফি ১ শতাংশ, স্থানীয় সরকার কর ১ শতাংশ, মূসক ১ দশমিক ৫ শতাংশ- এভাবে মোট ৭ শতাংশ নির্ধারণ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য অর্থের উৎস প্রদর্শন না করার সুযোগসহ আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪ এর ১৯ বি ধারা পুনঃপ্রবর্তনের দাবি জানানো হয়েছে। আবাসন খাতের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৫-১০ বছরের জন্য গৃহায়ন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ ফ্ল্যাট, প্লট, বাণিজ্যিক ভবন ও বিপণি বিতানে বিনিয়োগের জন্য আয়কর অধ্যাদেশ-১৯৮৪-এর ধারা ১৯ বিবিবিবিবি- তে ইনডেমনিটি রেখে এই ধারা সংশোধন করা প্রয়োজন। এতে দেশের জাতীয় সম্পদ ও প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বর্তমানে পরিস্থিতিতে আবাসন শিল্প রক্ষায় প্রণোদনা হিসেবে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মূসকের হার হ্রাস করে ১ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা এবং নতুনভাবে মূসক আরোপ না করার দাবি জানানো হয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ