শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

উখিয়ায় শিশু অপহরণ আতংকে শংকিত অভিভাবক মহল

উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা: উখিয়ার সর্বত্রে শিশু অপহরণকারী চক্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের টার্গেট রোহিঙ্গা বস্তি, স্কুল, মাদ্রাসা, এতিমখানাসহ খেলাধুলার মাঠ। অতি সু-কৌশলে শিশু অপহরণ পূর্বক অজ্ঞাত স্থান থেকে মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায় করার ঘটনায় অভিভাবকদের মাঝে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা। ফলে সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
এ প্রসঙ্গে আলাপ করা হলে উখিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাস্টার হারুন অর রশিদ তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, এ স্কুলে ৯৮৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। স্কুলে বাউন্ডারী ওয়াল থাকলেও জনসমাগম বেষ্টিত এলাকায় স্কুলটি বিদ্যামান বিধায় প্রতিষ্ঠানটি অরক্ষিত বললেই চলে। কখন দূর্ঘটনা ঘটবে তা কারো জানা নেই। তিনি বলেন, বর্তমানে শিশু অপহরণ আতংকে শিশুর মা অথবা বাবা তার ছেলে কে আনা নেওয়া করলেও অধিকাংশ ছেলে স্কুলে আসছে না। ফলে উপস্থিতির সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। থাইংখালী হেফজখানার কুরআনে হাফেজ পড়–য়া ছাত্র মোহাম্মদ আলী (১২) গত দেড় আগে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে তার পিতা আবুল হাসেম জানান, দীর্ঘ ৪৫দিনেও ছেলের সন্ধান মিলেনি। এ ব্যাপারে উখিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে।
উখিয়া সদর ঘিলাতলী পাড়া গ্রামের বাসিন্দা উখিয়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি একরামুল হক জানান, গত বুধবার ৮ মার্চ মাগরিবের নামাজের সময় অপহরণকারী চক্র তার বাসায় ঢুকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এসময় ঘুমন্ত অবস্থায় ২ বছর ৭ মাস বয়সের একমাত্র ছেলে আহমেদকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় বাড়ীর লোকজন চিৎকার চেচামেছি শুরু করলে অপহরণকারী আহমেদকে পার্শ্ববর্তী হলুদ ক্ষেতে রেখে পালিয়ে যায়। এঘটনায় পুরো এলাকা আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। শত শত নারী পুরুষ ভিড় জমাচ্ছে একরামের বাড়ীতে ওই শিশুকে এক নজর দেখার জন্য।  গত ২১ ফেব্রুয়ারী বিকেল ৫ টায় পার্শ্ববর্তী মাঠে খেলা করার সময় ফলিয়াপাড়া গ্রামের আকতার হোসেনের ছেলে সাকিব (৭) কে অপহরণকারী চক্র অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে মুঠোফোনে ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে কক্সবাজার র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক আশিকুর রহমান শিশু সাকিবকে উদ্ধার করে ২ জন অপহরণকারীকে আটক করে। এ প্রসঙ্গে উখিয়া বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী জানান, যাবতীয় অপরাধের নেপথ্যে কাজ করছে ইয়াবা। তিনি বলেন, ইয়াবা সেবন ও পাচার বন্ধ না হলে সামাজিক অস্থিরতা আরো বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।  উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের জানান, প্রতি মাসে অন্তত পক্ষে ১৮/২০ টি নিখোঁজ ডায়েরী হচ্ছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিখোঁজের ঘটনা ঘটছে আশংকা জনক। তিনি বলেন, নিখোঁজের ব্যাপারে তাৎক্ষণিক ভাবে দেশের প্রতিটি থানায় ম্যাসেজ পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং নিখোঁজ শিশু উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ