শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

৩ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬১৮ জনকে শাস্তি ॥ ৪০৪৮টি গাড়ি ডাম্পিং

 

সংসদ রিপোর্টার : সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত (৩ বছর) ৯৫ হাজার ৫৭৯টি মামলার মাধ্যমে মোট ৮ কোটি ৪৯ লাখ ২৬ হাজার ৯১২ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এ সময়ে এক হাজার ৬১৮ জন আসামীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান এবং ৪ হাজার ৪৮টি গাড়ি ডাম্পিং স্টেশনে প্রেরণ করা হয়েছে।

গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে টেবিলে উত্থাপিত কামরুল আশরাফ খানের (নরসিংদী-২) এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়।

দেশের সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বর্তমান সরকারের বহুমুখী পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, সমীক্ষার মাধ্যমে মোট ২২৭ টি দুর্ঘটনা প্রবণ (ব্ল্যাক স্পট) স্থান চিহিৃত করা হয়েছে। তন্মধ্যে ২৭টি স্পট-এর প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করার উদ্যোগের কথা জানান তিনি

জঙ্গিবাদের পথ পরিহার করলে পুনর্বাসন

সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদারের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জঙ্গিরা জঙ্গিবাদের পথ পরিহার করলে আইনী সহায়তা দেয়া হবে। পাশাপাশি জঙ্গিদের পুনর্বাসন করার কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এদেশের মানুষ সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদকে ঘৃণা করে। দেশের মানুষের সুষম উন্নয়ন ও নিরাপত্তার জন্য সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ হুমকিস্বরূপ। সরকার জঙ্গিবাদ দমনে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এজন্য জঙ্গি দমনে সারাবিশ্বে বাংলাদেশ আজ রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত।

জঙ্গিদমনে সরকারের ধারাবাহিকতা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গি সংগঠনগুলোর অনলাইনভিত্তিক প্রচারণার দিকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজরদারি আরও বৃদ্ধি করা হবে। জনগণের মধ্যে জঙ্গিবাদী মতাদর্শের র‌্যাডিক্যালাইজেশন না ঘটে সেজন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দাসংস্থাগুলোর মাধ্যমে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কর্মকাণ্ড তাৎক্ষণিকভাবে মোকাবিলার জন্য একটি যুগোপযোগী স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) তৈরি প্রক্রিয়াধীন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভবিষ্যতে যেসব বিপথগামী জঙ্গিসদস্য জঙ্গিবাদের পথ থেকে ফিরে আসবে তাদেরকে আইনী সহায়তা দেয়াসহ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ডিজিটাল তদারকির আওতাভুক্ত হবে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

অনাকাঙ্খিত ঘটনারোধে বাংলাদেশ রিসার্চ এন্ড এডুুকেশন নেটওয়ার্ক (বিডিআরইএন)’র আওতায় সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যায় ডিজিটাল তদারকি সিস্টেমের আওতাভুক্ত হবে বলে সংসদে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মোরশেদ আলমের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়ন করতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষা ও গবেষণার মান উন্নয়নের জন্য বিশ্বব্যাংক এর সাথে যৌথ অর্থায়নে ২ হাজার ৫৪ কোটি টাকার “উচ্চ শিক্ষা মানোন্নয়ন প্রকল্প (হেকেপ)” বাস্তবায়ন করছে।

প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আন্তঃসংযোগ স্থাপন ও বহির্বিশ্বের শিক্ষা ও গবেষণা নেটওয়ার্কের সাথে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যুক্ত করার জন্য বাংলাদেশ রিসার্চ এন্ড এডুুকেশন নেটওয়ার্ক (বিডিআরইএন) স্থাপন করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে বাংলাদেশে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির সাথে ২০ বছর মেয়াদি চুক্তির আওতায় সারাদেশে ৩ হাজার কিলোমিটার ওভারহেড অপটিক্যাল গ্রাউন্ড ওয়্যার (ওপিজিডব্লিও) নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হচ্ছে। এর বাইরে সংযুক্ত করার জন্য ৩০৩ কিলোমিটার ৪২টি পয়েন্ট টু পয়েন্ট অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল কানেক্টিভিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলেও যোগ করেন তিনি।

এ প্রকল্পের আওতায় ৩৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাস নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা হাই স্পিড ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে। এছাড়া ৩১ টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভার্চুয়াল ক্লাসরুম স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিজস্ব ক্যাম্পাসে অবস্থান করে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত লেকচার ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করতে পারছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু বিডিআরইএন ট্যান্স এশিয়ান এডুুকেশন নেটওয়ার্ক (টিএইএন-১১) এবং এ জাতীয় অন্যান্য আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শিক্ষা নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত তাই বিশ্ব জ্ঞান ভান্ডারের দরজা আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিকট উন্মুক্ত হয়েছে। তিনি জানান, বিডিআরইএন’র মাধ্যমে পাইলট ভিত্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিটাল তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য সিসি ক্যামেরা ও একসেস কন্ট্রোল ডিভাইস স্থাপন করা হচ্ছে। অনাকাঙ্খিত ঘটনারোধে এ ব্যবস্থা কার্যকর প্রমাণিত হলে বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এ ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ