বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

ঘৃণ্য রাজনৈতিক সংকীর্ণতার কারণে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিকৃত হতে চলেছে

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেছেন, ৫২’র ভাষা আন্দোলন ও রাজপথে রাষ্ট্রভাষার জন্য জীবনদান পৃথিবীর ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ঘটনা। ভাষার মর্যাদা রক্ষার এমন দৃষ্টান্ত বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের মর্যাদাকে করেছে সমুন্নত। তিনি ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন ও তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শহীদদের পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
গতকাল সোমবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারি এডভোকেট ড. মু. হেলাল উদ্দিন, মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য কামাল হোসাইন, মহানগরী শূরা সদস্য মুহিবুল হক ফরিদ ও মো: আল আমীন প্রমুখ।
মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ শ্লোগানটি ছিল বাংলার আপামর জনসাধারণের শ্লোগান। বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডের ছাত্র-শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, সাধারণ মানুষ সকলেই ভাষার জন্য নেমে এসেছিলেন রাজপথে। মহান একুশের চেতনাই পরবর্তীতে ৭১-এর আন্দোলনের বীজ বপন করেছিল। তাই ভাষা আন্দোলন কোন ব্যক্তি বা দলের আন্দোলন ছিল না। ভাষা শহীদগণ দেশের সম্পদ। কিন্তু এক শ্রেণীর মানুষের ঘৃণ্য রাজনৈতিক সংকীর্ণতার কারণে ভাষা ও ভাষা আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস আজ বিকৃত হতে চলেছে। ভাষা সৈনিকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে। তিনি অধ্যাপক গোলাম আযমকে ভাষা সৈনিক হিসেবে স্বীকৃতিদান ও মরণোত্তর একুশে পদক প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি আরো বলেন, মূলত ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল প্রিন্সিপাল আবুল কাসেমের নেতৃত্বাধীন তমুদ্দন মজলিশের মাধ্যমে। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহও মহান ভাষা আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। ডাকসুর সাবেক জিএস ও মেধাবী ছাত্রনেতা অধ্যাপক গোলাম আযম ছিলেন ভাষা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তি। তিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ডাকসুর জিএস হিসাবে লিয়াকত আলীর খানের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছিলেন। মূলত ইসলমপন্থীরাই ছিলেন ভাষা আন্দোলনের নেতৃত্বে। কিন্তু মহলবিশেষ ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিকৃত করে প্রকৃত ভাষা সৈনিকদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়ার পরিবর্তে বামপন্থী ও সরকারের প্রতি আনুগত্যশীলদের মূল্যায়ন করছে। প্রকৃতপক্ষে যে জাতি গুণিজনের কদর করে না, সে জাতির মধ্যে গুণিজন জন্মায়ও না এবং সে জাতি আত্মনির্ভরশীল ও আত্মমর্যাদাবান জাতি হিসাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে মহান ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিকৃতি রোধ এবং প্রকৃত ভাষা সৈনিকদের যথাযথ সন্মান প্রদর্শনের কোন বিকল্প নেই।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ভাষা শহীদগণ জীবন দিয়েছিলেন রাষ্ট্রভাষা ঊর্দুর পরিবর্তে বাংলা করার দাবিতে। কিন্তু আজ রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমেই বাংলাকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। তিনি উচ্চ আদালতের রায়সহ সচিবালয়ের সর্বস্তরে বাংলাকে একমাত্র ভাষা করার দাবি জানান। তিনি বলেন, মূলত একুশের চেতনা ধারণ করেই দেশ থেকে স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ ও অগণতান্ত্রিক শক্তিকে রুখে দিয়ে দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন, সাম্য ও মৈত্রী প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
কামাল হোসাইন বলেন, ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ ভাষার জন্য প্রথম আন্দোলন হয়। ভাষা নিয়ে রাজনীতি নয়, এটি মানুষের জন্মগত অধিকার। ভাষার মাধ্যমেই শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশ সাধন হয়ে থাকে। কিন্তু স্বাধীনতার ৪ দশক অতিক্রান্ত হলেও আমরা সে লক্ষ্যে এখনো পৌঁছতে পারিনি। বিজাতীয় আগ্রাসনে আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি আজ অরক্ষিত। তাই মায়ের ভাষা ও নিজস্ব সংস্কৃতি রক্ষায় আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মহান একুশের দিনে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
কলাবাগান থানার ক্রিকেট টুর্নামেন্ট : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেছেন, আমাদের জীবনের প্রতিটি কাজই হবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। ভালভাবে ইবাদাত করার পাশাপাশি ইসলামী আন্দোলনের কাজকে দুর্বার গতিতে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা অপরিহার্য। তাই ব্যায়াম ও নির্দোষ খেলাধুলার মাধ্যমে শরীরকে চাঙ্গা রাখতে হবে। জীবন পরিচালনার প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের আদেশ নিষেধ মেনে চলতে হবে এবং রাসূল (সা:) আদর্শ অনুসরণ করতে হবে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে গতকাল সোমবার জামায়াতে ইসলামী কলাবাগান থানার উদ্যোগে আয়োজিত ক্রিকেট টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কলাবাগান থানা আমীর নূরুন্নবীর সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি আবু জয়নবের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কলাবাগান থানার সাবেক আমীর আবু তানজীম। উপস্থিত ছিলেন মাহবুবুল আলম, সহিদুল ইসলাম, জাহিনূর রহমান, মোতাহার হোসেন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য, ক্রিকেট টুর্নামেন্ট এ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কলাবাগান ভিক্টোরিয়ানস এবং রানার আপ হয় কাঁঠালবাগান ডায়নামাইটস। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ