না’গঞ্জে গার্মেন্টের রফতানির ১৫ হাজার টি শার্ট চুরি
নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মাসদাইরে রফতানীমুখী গার্মেন্ট ফারিহা নিট টেক্স লিমিটেডের রফতানীকৃত ১৫ হাজার টি শার্ট চুরির ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ২ আসামী চুরির দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। গত মঙ্গলবার বিকেলে গ্রেফতারকৃত আলামিন নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহম্মেদ হুমায়ন কবিরের আদালতে ও গ্রেফতারকৃত মোক্তার ওরফে আজাদের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল মহসীনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়।
মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুলতান মাহমুদ স্বীকারোক্তি প্রদানের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গত সোমবার গভীর সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী এলাকা থেকে আলামিন (২৮) ও বাপ্পী ওরফে বাবু (২১) এবং বন্দরের কুশিয়ারা এলাকা থেকে মোক্তার ওরফে আজাদকে (৫৫) গ্রেফতার করা হয়। গত মঙ্গলবার বিকেলে আলামিন ও মোক্তার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। আদালতে জবানবন্দীতে তারা জড়িতদের নাম প্রকাশ করেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই তাদের নাম প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে। তবে গত মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে শীঘ্রই জড়িত বাকিদের গ্রেফতার ও লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করছেন।
জানা গেছে, ফতুল্লার মাসদাইরের বাড়ৈভোগ এলাকায় অবস্থিত ফারিহা নিট টেক্স নামে একটি রফতানিমুখী গার্মেন্ট থেকে গত ১৯ জানুয়ারি রাতে একটি কাভার্ডভ্যান (ঢাকা মেট্রো-ট ১৩-২৬৪৫) যোগে ২৫ লাখ টাকা মূল্যের ৮২২ কার্টন লেডিস টি শার্ট ইউরোপে রফতানির জন্য চট্টগ্রাম পোর্টে পাঠায়। পথিমধ্যে ওই কাভার্ডভ্যানের চালক বাবলু ও হেলপার রাসেলসহ একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র ৫০০টি কার্টন খুলে তার মধ্যে থাকা ১৫ লাখ ২০ হাজার ৬৮১ টাকা মূল্যের ১৫ হাজার পিছ লেডিস টি শার্ট সরিয়ে ফেলে তার মধ্যে গার্মেন্ট ওয়েস্টেজ (ঝুট) বোঝাই করে রাখে। গত ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কার্টনগুলো পরীক্ষার পরে দেখতে পান সেখানে লেডিস টিশার্টের বদলে গার্মেন্ট ওয়েস্টেজ (ঝুট) বোঝাই করে রাখা হয়েছে। পরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গার্মেন্ট মালিকপক্ষ জানালে তারা খোঁজ-খবর নিয়ে গত ৩ জানুয়ারি ফারিহা নিট টেক্স লিমিটেডের এসিস্ট্যান্ট কমপ্লায়েন্স জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে চালক ও হেলপারের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদী ফারিহা নিট টেক্স লিমিটেডের এসিস্ট্যান্ট কমপ্লায়েন্স জহিরুল ইসলাম জানান, রফতানিকৃত পোশাক চুরি করে তার স্থলে গার্মেন্ট ওয়েস্টেজ (ঝুট) বোঝাই করে রাখার বিষয়টি দেশের পোর্টে ধরা পড়ায় আমরা বিশাল ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে গেছি।
যদি ওই কার্টনগুলো ইউরোপে শিপমেন্ট হয়ে যেত তাহলে বিদেশীরা আমাদের প্রতারক বলতো। ইউরোপ থেকে পরবর্তীতে অর্ডার আনা কষ্টকর হয়ে পড়তো। বিষয়টি শুধু চুরি নয় ষড়যন্ত্র বলে আমরা মনে করছি।
উল্লেখ্য উৎপাদনমুখী বৃহৎ শিল্পখাতে ফারিহা নিট টেক্সের এমডি আসাদুল ইসলাম এবারও সিআইপি নির্বাচিত হয়েছেন।
দেশের রফতানি খাতে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে আসছে।