শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

ছড়া/কবিতা

এমন মধুর ফালগুনে
বিশ্বনাথ বিশ্বাস

চারিদিকে ঝলমলে কেমন যেন লাগছে,
শীতের বুড়ি তর-তরিয়ে এক পা-দু’পায় ভাগছে।
বৃক্ষ সাজে ফুলে ফুলে সাজে মিষ্টি গাঁওটা
কোকিল ছানায় পলাশ ডালে দিচ্ছে দারুন রাওটা।

তাইনা শুনে খোকা-খুকু ঢিলটা মারে ডালটায়-
ফুঁড়ুৎ করে যায় উড়িয়ে খোকা-খুকুর আলটায়।
কৃষ্ণ চুঁড়ায় রঙিন হলো বড্ড যে রাজ কন্যা,
নীল পরীরা আসলো ছুটে বইছে হাসির বন্যা।

বনের পাখির দুয়ার খোলা উড়ছে তারা স্বদেশে
মালা গেঁথে দূর আকাশে যাচ্ছে অথই স্ববেশে।
উষ্ণ বায়ুর সুড়-সুড়িতে লাগছে দোলা ফালগুনে
বারো মাসের শ্রেষ্ঠ চমক ঋতুর রাজা কালগুণে।

এমন মধুর ফাগুন এলো হৃদয় কোনে দেয় নাড়া,
সজীবতার প্রকৃতিতে শুভ্র সকাল দেয় তাড়া।
ঢেউয়ের দলে ঘোমটা খুলে নতুন জোয়ার ভরছে
নায়ের মাঝি রঙিন পালে নতুন রশি ধরছে।

সবুজ মাঠের পাতায় পাতায় নজর কাঁড়া সৌরভে
কৃষক ভাইয়ের শ্রমের ফসল শোভা ছড়ায় গৌরবে।
মৌ-মৌ-মৌ গন্ধে আকুল মেঠো পথের ফুলবনে
বসন্তেরই আগমনে রূপের বাহার এই ক্ষণে।


ডাক শুনে
মাহমুদ শরীফ

পদ্মা মেয়ে গড়াই নদীর
পাড়েই আমার বাড়ি
ফুলে ফলে ছায়ায় ঘেরা
আম কাঁঠালের সারি।
রোজ প্রভাতে সুর উঠিয়ে
গড়াই যে ডাক হাঁকে
ডাক শুনে তাই যাই ছুটে যাই
কেশবপুরের বাঁকে।
গড়াই আমার বন্ধু সে যে
আরো ডিঙ্গি নাও
দিই উঠিয়ে রঙিন পাল
উঠলে পূবাল বাও।
ঢেউয়ের পাহাড় - বন্ধু আমার
আমায় নিয়ে ছোটে
একদিন না দেখলে গড়াই
ভাল্লাগেনা মোটে।

গড়াইর সাথে এই দোস্তি
থাকবে বহুদিন
যদি না সে আমার গ্রাম
না করে বিলীন।


খোকার সাধ
আব্দুস সালাম
 
চড়বে ঘোড়ায় খোকনসোনা
শুনছে না সে মানা
বললো মাকে জিদ করে সে
সবকিছু তার জানা।
 
তেপান্তরে ছুটলো খোকন
টাট্টু ঘোড়ায় বসে
ভীষণ খুশি খোকন সোনা
ধরলো লাগাম কষে।
 পথের মাঝে আছড়ে পড়ে
ভাংলো খোকন পা
কেমনে ফিরে যাবে সে যে
অনেক দূরে গাঁ।
 
কেঁদে ভেজায় বুকের বসন
বাড়ল পায়ে ব্যথা
বুঝলো খোকন ভুল হয়েছে
না শুনে মার কথা।


মাটির ছোঁয়া পেতে
সৈয়দ মাশহুদুল হক

ইট-পাথরের এই শহরে
একলা যখন হাঁটি
হৃদয় পটে ভেসে উঠে
আমার সোনার গাঁ’টি।

দূর্বাঘাসে এই হেমন্তে
চাই দেখতে শিশির
কানে বাজে সাত সকালে
পাখির কিচিরমিচির।

ছোট নদী কলকলিয়ে
যেথায় বয়ে চলে
ছেলেমেয়ে গোসল ছলে
ঝাঁপিয়ে পড়ে জলে।

মেঠোপথের দুইধারে
দুলে গাছের পাতা
মাথার উপর যেন থাকে
প্রকৃতিরই ছাতা।

গাছে গাছে ফলফলারি
রঙবেরঙের ফুল
মৌমাছিরা মধু চুষে
ফুটিয়ে সরু হুল।

খালে বিলে কিলবিলিয়ে
খেলা করে মাছ
মনের সুখে চাষি যেথায়
করে জমি চাষ।

মনটা যেউ যায় হারিয়ে
মটরশুঁটির ক্ষেতে
ইচ্ছে করে যাই ছুটে ওই
মাটির ছোঁয়া পেতে।


চল গ্রামে যাই
আবু সাইদ

চল ফিরে যাই গ্রামে
যেথায় সন্ধ্যা নামে
পাখিরা সব নীড়ে ফিরে
দল বেঁধে আঞ্জামে।
বিশুদ্ধ বাতাসে
ফুলকলিরা হাসে
সুবাসে যার মন ভরে যায়
বুক ভরে তার শ্বাসে।
শ্যাম দূর্বা দলে
গায়ে গায়ে ঢলে
ইশারাতে ডাকে যেন
নুয়ে চরণ তলে।
বটগাছের ওই ছায়া
ছড়ায় মায়ের মায়া
শিকড়ে তার শয্যা পাতা
জুড়ায় মন ও কায়া।
চল ফিরে যাই গাঁয়ে
ময়ূর-পঙ্খী নায়ে
পাল উড়িয়ে মাঝির গানে
ধীরে পূবাল বায়ে।


শীত লেগেছে শরীরে
শরীফ সাথী

এদিক ওদিক বয়ে যাওয়া
হাড় কাঁপানো হিমেল হাওয়া
শীত লেগেছে শরীরে,
পথের ধারে করি বাস
এইতো মোদের পরিহাস
এখন কি যে করি রে?
ও বাবুরা ও বাবুসাব
একটি কম্বল দাওনা,
ঠা-া লেগে জীবন যাবে
এটা যখন চাওনা?

স্টেশনে পথের ধারে
আছিতো সব রথের সারে
একটু করো খেয়াল,
অভাগাদের সাহায্যার্থে
ছেঁদ করে মন দেয়াল।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ