বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

আইএসকে রুখে দেয়ার কৌশল প্রণয়নে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ

২৯ জানুয়ারি, সিএনএন : ধারাবাহিক নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগের এই পর্যায়ে নতুন করে আরও তিনটি আদেশে স্বাক্ষর করলেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আদেশে আইএসকে পরাজিত করার কৌশল, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের লবিং-এর ক্ষেত্রে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা, এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের কাঠামো পুনর্গঠন নিয়ে পরিকল্পনা তৈরি করে ৩০ দিনের মধ্যে তা জমা দিতে বলা হয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প যখন ওভাল অফিসে নতুন করে ওই তিনটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করছিলেন তখন বেশ কয়েকজন সহযোগী ও সাংবাদিকরা তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের লবিং এর ওপর ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা দিতে গিয়ে পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আরোপিত নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ টেনে আনেন ট্রাম্প।
আইএসবিরোধী ব্যবস্থা : আইএস-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনার ক্ষেত্রে সমন্বিত কৌশলসহ বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগের কথা মাথায় রাখা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সামরিক উপদেষ্টারা ট্রাম্পের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করছেন। কিভাবে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে মোকাবেলা করা যাবে সে পদ্ধতিগুলো পর্যালোচনা করছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস ও জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ জোসেফ ডানফোর্ড। শনিবার ট্রাম্প স্বাক্ষরিত নির্বাহী আদেশে ম্যাটিসকে ডানফোর্ড, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা পরিচালক এবং মন্ত্রিসভার অন্য কর্মকতাদের সঙ্গে একসঙ্গে পরিকল্পনাটি প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে।
এনএসসি সংক্রান্ত আদেশ : এনএসসি এর স্মারকে ট্রাম্পের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার টম বোসার্টের ভূমিকা কী হবে তা নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
ট্রাম্পের মতো ওবামাও ওয়াশিংটন সংস্কার-এর প্রচারণা চালিয়েছিলেন, লবিংজনিত চাকরিগুলোতে নিষেধাজ্ঞার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। দায়িত্বগ্রহণের পর প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের লবিং এর ওপর দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দেন ওবামা। শনিবার এ ব্যাপারে ট্রাম্প দাবি করেন, ওবামার নিষেধাজ্ঞা যথেষ্ট ছিল না। তিনি বলেন, ‘এখন দু’বছরের নিষেধাজ্ঞা প্রচলিত আছে এবং এর অনেক ফাঁকফোঁকর রয়েছে।’
লবিং মানে হলো কোনও একটি সরকারের কর্মকাণ্ড বিশেষ করে আইন প্রণেতা বা রেগুলেটরি এজেন্সিগুলোর কর্মকাণ্ড, নীতিমালা কিংবা সিদ্ধান্তের ওপর প্রভাব তৈরির চেষ্টা করা। আর যারা এ ধরনের কাজ করে থাকে তাদের লবিস্ট বলা হয়ে থাকে। লবিস্ট ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান দুই ধরনেরই হতে পারে। অনেক ধরনের মানুষ, অ্যাসোসিয়েশন ও সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী, আইনপ্রণেতা, সরকারি কর্মকর্তা কিংবা অ্যাডভোকেসি গ্রুপ লবিং করতে পারে। পেশাদার লবিস্ট হলেন সেইসব লোকজন যারা তাদের নিয়োগদাতা ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠীর হয়ে দেশের আইন, সরকারের সিদ্ধান্ত বা কর্মকাণ্ড কিংবা নীতিমালার ওপর প্রভাব তৈরির চেষ্টা করেন। গত নবেম্বরে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনে লবিস্টদের অর্ন্তভূক্তি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তার অন্তর্র্বতীকালীন উপদেষ্টা কমিটি। সেসময় ট্রাম্পের ট্রানজিশন টিমের মুখপাত্র শন স্পাইসার জানান, ট্রাম্পের দলে যোগ দেওয়া লবিস্টদেরকে এখন নতুন নিয়মের আওতায় তাদের লবিংসংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক নিবন্ধনপত্র বাতিল করতে হবে। তাদেরকে একটি অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করতে হবে।
অঙ্গীকারনামাটি হলো: ‘নিচে স্বাক্ষর করার মধ্য দিয়ে আমি ঘোষণা দিচ্ছি যে আমি বর্তমানে নিবন্ধনকৃত লবিস্ট নই এবং লবিং ডিসক্লোজার অ্যাক্ট-এর সংজ্ঞা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় লবিস্টও নই এবং জাতীয় পর্যায়ে ভারসাম্যমূলক লবিস্টও নই। আমি যদি সাম্প্রতিক লবিং ডিসক্লোজার ফর্মে লবিস্ট হিসেবে তালিকাভুক্ত হই কিংবা কেন্দ্রীয় বা অঙ্গরাজ্যভিত্তিক আইনের আওতায় লবিস্ট বলে বিবেচিত হই, তবে আমি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন দলকে বলব যে আমি যথাযথ সরকারি সংস্থাকে আমার নিবন্ধন বাতিলের জন্য প্রয়োজনীয় ফর্ম জমা দিয়েছি। যত শিগগির সম্ভব আমার লবিস্ট নিবন্ধন বাতিলের লিখিত প্রমাণ অন্তর্বর্তীকালীন দলের কাছে হাজির করব।’
প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে সিএনএন জানায়, শনিবার লবিং এর ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তার আওতায় বিদেশি সরকারের পক্ষের লবিংয়ে আজীবনের নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ