বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

এ পর্যন্ত শতাধিক ঘরবাড়ি ভাংচুর॥ আ’লীগ নেতাসহ ৬৫ জনকে আসামী করে মামলা

শরীয়তপুর সংবাদদাতা : জাজিরায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বোমার আঘাতে মাথার খুলি উড়ে গিয়ে হোসেন খাঁ নামে একজন নিহত হওয়ার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৬৫ জনকে আসামী করে জাজিরা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের লাশ ময়না তদন্ত ও জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হলেও পুলিশের চোখের আড়ালে গত দুই দিনে নিহতের সমথর্করা প্রতিপক্ষের শতাধিক বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটতরাজ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশ বলছে, অপ্রীতিকর কোন ঘটনার সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বর্তমানে এলাকার পরিবেশ পরিস্থিতি শান্ত আছে।

জাজিরা থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার বড় কান্দি ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সিরাজ সরদার ও সাবেক চেয়ারম্যান শফিউদ্দিন খলিফার মধ্যে দীর্ঘ দিন যাবত আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে গত রোববার থেকে উভয়পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় বড়কান্দি ইউনিয়নের খলিফাকান্দি, মীর আলী মাদবর কান্দি ও জাজিরা ইউনিয়নের দুর্বাডাঙ্গা ও পাথালিয়া কান্দিসহ ৫/৬টি গ্রামের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও শতাধিক ককটেল বোমার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরই সূত্র ধরে মঙ্গলবার সকালে উভয়পক্ষ ককটেল বোমা ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বড়কান্দি ইউনিয়নের মীর আলী মাদবরকান্দি গ্রামের মজিবুর মাদবরের বাড়ির উত্তর পার্শ্বে ফসলী জমির মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় সাবেক চেয়ারম্যান শফি খফিলার সমর্থক হোসেন খান ককটেল বোমার আঘাতে মাথার খুলি উড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় আরো অন্তত ১০ জন আহত হয়। এ ঘটনার পর গতকাল বুধবার নিহতের ভাই আলমগীর খান বাদী হয়ে বড়কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম সিরাজুল ইসলামকে এক নম্বর এবং তার ছোট ভাই বাংলাদশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহসম্পাদক আমিনুল ইসলাম রতনসহ ৬৫ জনকে আসামী করে জাজিরা থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এদিকে নিহত হোসেন খার ময়না তদন্ত শেষে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় বড়কান্দি মডেল একাডেমি মাঠে জানাযা শেষে পারিবারিক কবর স্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।

ঘটনার পর পুনরায় সংঘাত এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হলেও পুলিশের চোখ ফাকি দিয়ে নিহতের সমর্থকরা ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে গত দুই দিনে দুর্বাডাঙ্গা হাওলাদার কান্দি, মীর আলী মাদবর কান্দি, আব্দুল বেপারী কান্দি ও বড়কান্দি গ্রামের মেহবুব পোরী, খবির হাওলাদার, ইউছুফ মেম্বার, আলী হোসেন বেপারী, মজিবুর হাওলাদার, হামেদ সরদার, ফারুক মাদবর, দিল মোহাম্মদ বেপারী, জালাল বেপারী, আলী আহমদ বেপারী, ইসমাইল মাদবর ও সামেদ আলী মাদবরের বাড়িঘরসহ শতাধিক বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের। 

বড়কান্দি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শফিউদ্দিন খলিফা বলেন, আমার জানামতে কোন লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি। তবে দুর্বাডাঙ্গা ও বিলাশপুর এলাকায় কিছু বাড়ি ভাংচুরের কথা শুনেছি। 

ঘটনাস্থলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা জাজিরা থানার এস আই জহুরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে এলাকা শান্ত আছে। তবে কোন গ্রামে অপ্রীতিকর কোন ঘটনার সংবাদ পাওয়া মাত্র ব্যবস্থা নিচ্ছি।

জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে ৬৫ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছে। আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ