শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেয়ে লেখাপড়ায় মনোযোগী হয়েছে তেরখাদার স্কুল ছাত্রী সুমি

খুলনা অফিস : বাল্যবিয়ের কবল থেকে রক্ষা পেয়ে লেখা-পড়ায় মনোযোগী হয়ে উঠেছে খুলনার তেরখাদা উপজেলার অর্জুনা বলরধনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী সুমি খাতুন (১১)। লেখা-পড়া শিখে ভবিষ্যতে সে স্কুল শিক্ষক হয়ে বাবা-মায়ের দারিদ্রতা দূর করার সংকল্প নিয়েছে। তবে তার এই স্বপ্ন পূরণে দারিদ্রতার অভিশাপ প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কারণে শিশু বয়সে তাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়েছিলো। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেনের হস্তক্ষেপে এ যাত্রা সে রক্ষা পায়।
অর্জুনা বলরধনা গ্রামের আলম শেখের কন্যা সুমি জানায়, দারিদ্রতার কষাঘাৎ থেকে মুক্তি পেতে গত বছরের ২ নবেম্বর পিতা আমাকে বিয়ে দেয়ার আয়োজন করে। মন থেকে বিষয়টি মেনে নিতে না পারলেও পিতার অসহায়তা আমাকে চুপ থাকতে বাধ্য করে। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিয়ে বন্ধ করে আমাকে বাল্যবিয়ের কবল থেকে মুক্ত করেন। উনার জন্য আমি আবারো স্কুলে যেতে পারছি। পারছি খেলাধুলা করতে। আমি অল্প বয়সে বিয়ে করতে চাইনা। লেখা-পড়া করতে চাই। বাবা-মা বলে, গরিব ঘরে জন্মনিয়ে বেশি লেখা-পড়া করতে নেই। নেই বড় কোন স্বপ্ন দেখতে। তবে লেখা-পড়া শিখে বড় হয়ে স্কুলের স্যার-ম্যাডামদের মত আমিও শিক্ষক হবো। বাবা-মায়ের দারিদ্রতা দূর করার জন্য তাদের পাশে থাকবো।
সুমির মা নাসরিন বেগম বলেন, সুমির পিতা একজন সামান্য কৃষক। ওরা ৪ ভাই-বোন মিলে ৬ সদস্যের পরিবার আমাদের। সংসার চালাতে হিমশিম খাওয়ার কারণে সুমিকে বিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। ওকে বিয়ে দিতে পারলে অভাবী সংসারের বোঝা কিছুটা হালকা হতো। বাকি তিন সন্তানকেও গড়ে তুলতে পারতাম। তবে ইউএনও স্যারের কারণে বুঝেছি, অল্প বয়সে মেয়ের বিয়ে দিতে গিয়ে ওর ভালোর স্থলে আমরা খারাপ করতে যাচ্ছিলাম।
অর্জুনা বলরধনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিপা অধিকারী বলেন, সুমি লেখা-পড়ায় বেশ ভালো। সরকার নারী শিক্ষা বাস্তবায়নে নানা উদ্যোগ নিলেও কিছু কিছু ব্যক্তি মেয়েদের বোঝা হিসেবে মনে করে। তাদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত না করে অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে দিয়ে ভবিষ্যৎ নষ্ট করে ফেলে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ