শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

পানির দাম বাড়াচ্ছে খুলনা ওয়াসা

খুলনা অফিস : পানির দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে খুলনা ওয়াসা। ইতোমধ্যে পানির বর্ধিত মূল্য তালিকা ওয়াসার বোর্ড সভায় অনুমোদনও পেয়েছে। এতে আবারও ২০ শতাংশ হারে দাম বাড়ছে। জানুয়ারি মাস শেষে এই মূল্য কার্যকরের চেষ্টা করা হচ্ছে। চলতি বছর ২০১৬  সালের ১ জানুয়ারি পানির দাম ২০ শতাংশ বাড়িয়েছিল ওয়াসা।
এদিকে সেবার মান না বাড়িয়ে পানির দাম বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খুলনার নাগরিক নেতারা। নাগরিক নেতাদের দাবি, হঠাৎ করে নতুন মূল্য কার্যকর হলে মানুষের ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়বে।
তবে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল্লাহ বলেন, সারা দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম পানির দাম খুলনায়।  আয়ের তুলনা ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম না বাড়িয়ে উপায় ছিল না।
তিনি জানান, ২০ শতাংশ বৃদ্ধির ফলে প্রতি এক হাজার লিটারে সর্বোচ্চ ৯৬ পয়সা দাম বাড়ছে। বৃদ্ধির পর যে দাম থাকছে সেটিও আশপাশের পৌরসভা এবং ঢাকা-চট্রগ্রাম ওয়াসার দামের অর্ধেক।
ওয়াসা সূত্র জানায়, ২০০৩ সালে সিটি করপোরেশনের অধীনে থাকার সময় পানির দাম বৃদ্ধি করা হয়। এরপর ২০১৫ সালে নতুন মূল্যে তালিকা অনুমোদন করে ওয়াসা। যা ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। সম্প্রতি আগামী বছরের জন্য দাম আরও বাড়ানো হয়েছে। প্রস্তাবিত মূল্য তালিকায় আধাইঞ্চি পানির লাইনের মূল্য প্রস্তাব করা হয়েছে ৬৪ টাকা ৮০ পয়সা। বর্তমানে যা রয়েছে ৫৪ টাকা। এছাড়া ৩/৪ ইঞ্চি সংযোগের মূল্য আবাসিক ১০০ টাকা, ১ ইঞ্চি সংযোগের আবাসিক বাণিজ্যিক মূল্য ২৮৮ টাকা, দেড় ইঞ্চি লাইনের ১ হাজার ৭২৮ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে ওই মূল্য রাখা হচ্ছে ৩/৪ ইঞ্চি ৮৪ টাকা, এক ইঞ্চি ২৪০ ও দের ইঞ্চি এক হাজার ৪৪০ টাকা। এছাড়া যারা মিটারে পানির বিল পরিশোধ করেন তাদের জন্য প্রতি এক হাজার লিটার পানির দাম ধরা হয়েছে ৫ টাকা ৭৬ পয়সা। পূর্বে এই দাম ছিল ৪ টাকা ৮০ পয়সা। ঢাকা ওয়াসায় প্রতি এক হাজার লিটার পানির দাম ১০ টাকা এবং চট্্রগ্রামে ৯ টাকা।
পানির দাম বৃদ্ধির যৌক্তিকতা তুলে ধরে ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অর্থ) স্বপন কুমার মন্ডল বলেন, ওয়াসার মাসিক আয় মাত্র ১৭ লাখ টাকা। অথচ কর্মকর্তা- কর্মচারিদের বেতন ভাতা ৫২ লাখ, বিদ্যুৎ বিল ১৮ লাখসহ মাসে মোট ব্যয় হয় ৮২ লাখ টাকা। প্রতিমাসের ঘাটতি প্রায় ৬৫ লাখ টাকা। মন্ত্রনালয়ের মঞ্জুরি থেকে নির্বাহ হয়। কিন্ত পানির দাম না বাড়ালে এই সাহায্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন মূল্য বৃদ্ধির ফলে প্রতি মাসে ওয়াসার আয় বাড়বে ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। এতে ঘাটতি কিছুটা হলেও সমন্বয় হবে।
তবে সেবার মান না বাড়িয়ে মূল্য বৃদ্ধির উদ্যোগে ক্ষোভ প্রকাশ করে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ-উজ জামান বলেন, আয় আড়ানোর জন্য পানির দাম না বাড়িয়ে ওয়াসার উচিত নিজেদের খরচ কমানো। পাম্প অপারেটরের নামে অকাজে জনবল এবং একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার কমিয়ে দিলে মূল্য বৃদ্ধির চেয়েও বেশি টাকা সাশ্রয় হবে।
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল্লাহ বলেন, আধা ইঞ্চি ব্যসের বাণিজ্যিক পানি মূল্য বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা পৌরসভায় ৩০০ টাকা, যশোরে ৩৭০ ও ফরিদপুরে ৩৭৫ টাকা। সেখানে খুলনায় এই পানির দাম মাত্র ৬৪ টাকা ৮০ পয়সা। তিনি বলেন, গত বছর পানির মূল্য একসঙ্গে ৪০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছিল। মানুষের কষ্ট হবে ভেবে ২০১৬ সালে ২০ শতাংশ এবং ২০১৭ সালে ২০ শতাংশ করে বাড়নো হচ্ছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ