আদালতে খালেদা জিয়া
স্টাফ রিপোর্টার : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অসমাপ্ত বক্তব্য উপস্থাপনে নতুন তারিখ দিয়েছে আদালত। হাইকোর্টে বেগম জিয়ার করা একটি আবেদন বিচারাধীন থাকার কারণ দেখিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার পক্ষে সময়ের আবেদন করা হয়। বেগম জিয়ার উপস্থিতিতে শুনানি নিয়ে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার ১৫ ডিসেম্বর নতুন দিন ঠিক করে দেন। বিচারক ওইদিন সাফাই সাক্ষীর তালিকাও দিতে বলেছেন।
গতকাল পুরান ঢাকার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট এবং জিয়া অরফান ট্রাস্ট মামলার শুনানি চলছে। এর আগে এই মামলার শুনানি হয় ১ ডিসেম্বর। ওইদিন খালেদা জিয়া এ মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে ১০-১৫ মিনিটের মতো বক্তব্য দিয়েছিলেন। ওই দিন তাকে এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ৩২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য পড়ে শোনানো হয়। এছাড়া জিয়া অরফান ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের আইনজীবী বোরহান উদ্দিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদকে আংশিক জেরা করেছিলেন।
গতকাল শুনানির শুরুতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন আদালতকে বলেন, সাক্ষীরা সাক্ষ্য দেয়ার আগে আইন অনুযায়ী শপথ গ্রহণ করেননি। এ ক্ষেত্রে তারা আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। এ বিষয়ে আমাদের একটি আবেদন হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। বিষয়টি নিষ্পত্তি হলে হয়তো যেসব সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে, সেগুলো বাতিল করে নতুন করে সাক্ষ্য নেয়া হতে পারে।
মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় আজ আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই আদালতের কাছে আবেদন, হাইকোর্টে এ মামলার নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত এ মামলার বিচার কার্যক্রম মুলতবি করা হোক।
খন্দকার মাহবুব হোসেনের বক্তব্যের বিরোধিতা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল আদালতকে বলেন, যেহেতু হাইকোর্ট ওই মামলার আদেশ দেননি, তাই এ মামলার কার্যক্রম চালাতে কোনো বাধা নেই। আইনজীবীদের বক্তব্য শেষে আদালত খালেদা জিয়ার পক্ষে সময় আবেদন মঞ্জুর করে আগামী এক সপ্তাহ এ মামলার কার্যক্রম মুলতবি করেন। শুনানি শেষে বেলা পৌনে ১টার দিকে এজলাস থেকে বেরিয়ে আসেন খালেদা জিয়া।
এর আগে গতকাল সকালে পুরান ঢাকার বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের অস্থায়ী আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে অসমাপ্ত বক্তব্য প্রদান করতে হাজির হন খালেদা জিয়া।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে ২০১০ সালে দায়ের হওয়া এ মামলায় মোট ৩২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। খালেদা জিয়া ছাড়া অভিযুক্ত অপর আসামীরা হলেন- বিগত চারদলীয় জোট সরকার আমলে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এদের মধ্যে জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।