শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

বিচারকদের চাকরিবিধিতে সরকারকে আরো এক সপ্তাহ সময়

স্টাফ রিপোর্টার : নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির বিধিমালার গেজেট প্রকাশে আরো এক সপ্তাহ সময় পেল সরকার। সরকারের দু সপ্তাহ সময় চেয়ে করা আবেদনের প্রেক্ষিতে এই সময় মঞ্জুর করেন সর্বোচ্চ আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৮ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই আদেশ দেন। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন-বিচারপতি আবদুল ওয়াহাব মিঞা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মো. নিজামুল হক।
আদালতে সরকার পক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।
গত ২৪ নবেম্বর শুনানি করে আদালত বিচারকদের চাকরির বিধিমালা গেজেট প্রকাশের জন্য সরকারকে সাত দিন সময় দিয়েছিল। এর ধারাবাহিকতায় বিষয়টি আদালতে আবার শুনানির জন্য আসলে অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা আরও সময়ের আবেদন করেন। দুই সপ্তাহ সময় চেয়ে তিনি বলেন, আইনমন্ত্রী ও এটর্নি জেনারেল দুজনেই দেশের বাইরে থাকায় আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে আরও সময় প্রয়োজন।
তার বক্তব্য শুনে আদালত আরও এক সপ্তাহ সময় মঞ্জুর করে এবং ওই সময়ের মধ্যে গেজেট আদালতে দাখিল করতে সরকারকে নির্দেশ দেয়। এর আগে গত ৭ নবেম্বর সর্বশেষ এই মামলার শুনানি হয়েছিল। সেদিন বিধি চূড়ান্ত করতে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ৮ সপ্তাহের সময় আবেদন করেছিলেন। ওইদিন আদালত ২৪ নবেম্বর পর্যন্ত সময় মঞ্জুর করেন।
গত ৭ নবেম্বর আদালত বলেছিলেন, আজ শেষবারের মতো সময় দিচ্ছি। এর মধ্যে বিধি চূড়ান্ত করে গেজেট আকারে জারি করবেন। সে অনুযায়ী মামলাটি আবারো শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসে। শুনানিতে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আবারো এক সপ্তাহ সময় চাইলে আদালত তা মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
১৯৮৯ সালে সরকার বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কিছু পদের বেতন স্কেল বৃদ্ধি করে। এতে অন্য ক্যাডারদের সঙ্গে অসঙ্গতি দেখা দেয়। তৎকালীন সরকার এই অসঙ্গতি দূর করার জন্য ১৯৯৪ সালের ৮ জানুয়ারি জজ আদালতের বেতন স্কেল বাড়িয়ে দেন। প্রশাসন ক্যাডারের আপত্তির মুখে সরকার ওই বেতন স্কেল স্থগিত করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে জুডিশিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মাসদার হোসেনসহ ৪৪১ জন বিচারক ১৯৯৫ সালে হাইকোর্টে একটি রিট মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে ১৯৯৭ সালে হাইকোর্ট পাঁচ দফা সুপারিশসহ ওই মামলার রায় দেন। মাসদার হোসেন মামলার রায় ঘোষণার আট বছর পর বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করা হয়। ওই সময় চারটি বিধিমালা গেজেট আকারে জারি করা হয়েছিল। এর মধ্যে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরি, নিয়ন্ত্রণ, শৃঙ্খলা বিধান এবং চাকরির অন্যান্য শর্তাবলি) বিধিমালা, ২০০৭ অন্যতম।
সেখানে বলা হয়েছে, পৃথক বিধি তৈরি না হওয়া পর্যন্ত অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলা বিধান করা হবে ১৯৮৫ সালের গভর্নমেন্ট সার্ভিস রুলস অনুযায়ী। তবে মাসদার হোসেন মামলার রায়ের ৭ নম্বর নির্দেশনা অনুযায়ী সেই জুডিশিয়াল সার্ভিসের সদস্যদের জন্য পৃথক শৃঙ্খলা বিধি এখনো তৈরি হয়নি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ