বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

পরিবর্তন আসছে যুক্তরাষ্ট্রের সিরিয়া নীতিতে

২৪ নবেম্বর, দ্য গার্ডিয়ান/আল জাজিরা/দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল : বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা হোয়াইট হাউস ছাড়ার পরই পরিবর্তন আসছে যুক্তরাষ্ট্রের সিরিয়া নীতিতে। ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব নেয়ার পরই বিষয়টি স্পষ্ট হতে পারে। গতকাল বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের আগে সিরিয়ার আসাদপন্থী রাজনীতিক রানদা কাসিস-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ট্রাম্পপুত্র ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র। চলতি বছরের ১১ অক্টোবর প্যারিসে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রানদা কাসিস নামের ওই নারী সিরিয়ায় রুশ হস্তক্ষেপের কট্টর সমর্থক। মনে করা হচ্ছে, এ বৈঠকে ক্ষমতায় এলে সিরিয়ার চলমান সংঘাতে ট্রাম্প প্রশাসনের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আর সিরিয়া ইস্যুতে আসাদপন্থী তথা রুশপন্থী একজন রাজনীতিকের সঙ্গে এমন আলোচনা ট্রাম্প সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় কোনও প্রভাব ফেললে স্বভাবতই আসাদ ও রাশিয়ার জন্য তা হবে স্বস্তিদায়ক।
ধারণা করা হচ্ছে, সিরিয়া ইস্যুতে রাশিয়ার পথেই হাঁটতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। অন্তত দুই দেশের মধ্যে এক ধরনের সমঝোতা হতে পারে। এর পেছনে শুধু ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের প্রশংসাই একমাত্র কারণ নয়। নতুন করে আলোচনায় আসছে ১১ অক্টোবরের এ বৈঠক। কারণ রানদা কাসিস যে দলটির নেতৃত্ব দেন সেটিকে সিরিয়ার ‘দেশপ্রেমিক বিরোধীদল’ হিসেবে আখ্যায়িত করে রাশিয়া। নানা বিষয়ে ভিন্নমত থাকলেও ‘দেশপ্রেমিক বিরোধীদলের’ এই নেত্রীকে আসাদপন্থী রাজনীতিক হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। কারণ, সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিবর্তনের ইস্যুতে তিনি আসাদের পাশেই ছিলেন।
গত মঙ্গলবার আল জাজিরা টেলিভিশনের ‘অপজিট ডিরেকশন’ অনুষ্ঠানে বিতর্কে অংশ নেন রানদা কাসিস। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশকে বাঁচাতেই রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছে, তারা সিরিয়ার জন্যই এটা করেছে। সমস্যা হচ্ছে, আপনারা রাশিয়ানদের চেনেন না, তাদের সম্পর্কে বোঝেন না। আপনারা শুধু সিরিয়ার বিরোধী পক্ষগুলোর বিরুদ্ধে যাওয়ায় রাশিয়াকে দূষছেন। কিন্তু আপনাদের তাদের বোঝা উচিত।’
সিরিয়ার একজন পক্ষত্যাগী কূটনীতিক বাসাম বারাবান্দি। বর্তমানে তিনি ওয়াশিংটনে বসবাস করছেন। তিনি বলেন, রানদা কাসিস-এর দলের ব্যাপকভিত্তিক কোনও জনসমর্থন নেই। বাসাম বারাবান্দি’র ভাষায়, ‘এটা আসলে তার বন্ধুদের একটা গ্রুপ। আসাদ সরকার ছাড়া সিরিয়াকে অন্য কেউ তাকে বিরোধী রাজনীতিক মনে করে না।’
রানদা কাসিস-এর স্বামী ফ্যাবিয়ান বাউসার্ট একজন ফরাসি ব্যবসায়ী। প্যারিসে সেন্টার ফর পলিটিক্যাল অ্যান্ড ফরেন অ্যাফেয়ার্স নামে তার একটি থিংকট্যাংক প্রতিষ্ঠান আছে। এছাড়া কাজাখাস্তান ও রাশিয়ার সঙ্গে তার শক্তিশালী বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস একজন সিরীয় বিশেষজ্ঞ জোসেফ বাহৌত। তিনি বলেন, রানদা কাসিস রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের একজন ভালো বন্ধু। ল্যাভরভ ছাড়াও আরও অনেকে তাকে মস্কোতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তারা তাকে পরিচিত করেছে।
রানদা কাসিসকে ‘মস্কো অপজিশন’ বলেও আখ্যায়িত করেন জোসেফ বাহৌত। তিনি বলেন, জেনেভা শান্তি আলোচনায় রাশিয়া এ ধরনের ব্যক্তিদের বিরোধীদের প্রতিনিধি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে। অথচ এতে সিরিয়ার অন্য সব বিরোধী দলের আপত্তি রয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ