শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

সামাজিক অবক্ষয় রোধে নৈতিক শিক্ষার বিকল্প নেই -শিবির সভাপতি

গতকাল শুক্রবার সারাদেশের শাখাগুলো থেকে বাছাইকৃত দায়িত্বশীলদের লিডারশিপ ট্রেনিং ক্যাম্পে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান বলেছেন, নৈতিক অবক্ষয় রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য এখন ভয়াবহ সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। নৈতিক অধঃপতনের কারণে জাতিকে একের পর এক বিভৎস চিত্র দেখতে হচ্ছে। এই অশুভ প্রলয় থেকে জাতিকে রক্ষা করতে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের কাজ করে যেতে হবে। আর সামাজিক অবক্ষয় রোধে নৈতিক শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। 
গতকাল শুক্রবার সারা দেশের শাখাগুলো থেকে বাছাইকৃত দায়িত্বশীলদের নিয়ে আয়োজিত লিডারশিপ ট্রেনিং ক্যাম্পে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় দাওয়া কার্যক্রম সম্পাদক আনিসুর রহমান বিশ্বাসের পরিচালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে আলোচনা রাখেন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল ইসলাম বুলবুল, মোঃ সেলিম উদ্দিন, ড.রেজাউল করিম, আবদুল জব্বার ও কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত।
শিবির সভাপতি বলেন, নৈতিক অবক্ষয় মানুষের সামাজিক ও পারিবারিক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। একের পর এক এমন লোমহর্ষক ঘটনা দেখে জাতি শিউরে উঠছে। সম্প্রতি ছাত্রলীগ নেতা বদরুল কর্তৃক একজন ছাত্রীকে প্রকাশ্য দিবালোকে যেভাবে চাপাতি দিয়ে কোপানো হয়েছে তাতে প্রতিটি শান্তিকামী মানুষ চমকে উঠেছে। তা ছাড়াও তিন বছরের শিশু থেকে ৯২ বছরের বৃদ্ধা পর্যন্ত এদেশে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। সন্তানরা তার গর্ভধারিণী মাকে হত্যা করছে, কখনো রাস্তার পাশে ফেলে যাচ্ছে। বৃদ্ধ বাবাকে কুপিয়ে আহত করছে। স্কুলগামী ছাত্ররা বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িত হচ্ছে। মানবাধিকার রিপোর্ট অনুযায়ী শুধুমাত্র গত অক্টোবর মাসেই ৭৭টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে ৩০ জনই শিশু। আগামী দিনের তরুণ প্রজন্ম অল্প বয়সেই নেশা ও অনৈতিকতায় পা দিচ্ছে। যা প্রতিদিনই মিডিয়ার কল্যাণে দেশবাসী দেখছে। প্রতিটি মা-বাবা তাদের সন্তানদের নিয়ে এখন গভীর শঙ্কাবোধ করছে। এ এক ভয়াবহ অবস্থা। অথচ আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রে পাসের হার বাড়ছে। লক্ষ্যণীয় বিষয় এসব ভয়াবহ অবক্ষয়ের নজীর যারা স্থাপন করেছে তারা প্রায় সবাই শিক্ষিত।   
তিনি বলেন, যখনই কোনো ভয়াবহ অনৈতিক ঘটনা ঘটে তখন এদেশের বুদ্ধিজীবি মহল ও গণমাধ্যম তা নিয়ে তুলাধুনা করছেন ঠিকই কিন্তু সমস্যা সমাধানের জন্য আসল পথের দিশা কেউ দিচ্ছেন না। আজ দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে শিক্ষার হার বাড়ার পরও শুধুমাত্র নৈতিক শিক্ষার অভাবেই সামাজিক অবক্ষয় এই ভয়ানক আকার ধারণ করেছে। মানুষ ঘরে বাইরে অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। নৈতিক শিক্ষাকে বাদ দিয়ে এ সমস্যা সমাধানের অন্য পথের সন্ধান তামাশা ছাড়া কিছু নয়। আমরা সমাজের সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে আহবান রেখে বলবো, সন্তানদের শিক্ষার সাথে সাথে নৈতিক শিক্ষার ব্যবস্থা করুন। আর নৈতিক শিক্ষার একমাত্র পথ কুরআনের আলোকে নিজেদের ও আগামী প্রজন্মকে গঠন করা। অন্যথায় সামাজিক অবক্ষয়ের রাহুগ্রাস থেকে কেউ বাঁচতে পারবে না।
তিনি নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান রেখে বলেন, ছাত্রশিবির স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যায়, মাদরাসা ও সমাজে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত একদল মানুষ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। যারা সমাজের শান্তি বজায় রাখা ও নতুন প্রজন্মকে নৈতিক অবস্থানে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। জাতি গঠনের এ কাজকে অব্যাহত রাখতে হবে। যেহেতু অনৈতিকতা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে সেহেতু আমাদের কাজের গতীকে আরও তীব্র থেকে তীব্র করতে হবে। প্রতিটি ছাত্রকে কুরআনের আলোকে গড়ে তোলার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। নিজেদের মধ্যে কুরআন চর্চা আরও বাড়াতে হবে। ছাত্রশিবির দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে নৈতিক শিক্ষা ছাড়া সামাজিক অবক্ষয় রোধ করা সম্ভব নয় এবং ছাত্রশিবির সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ