বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

৫০ ভাগ ভোটার নিয়ে হিলারি ১১ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে

২৪ অক্টোবর, এবিসি/সিএনএন/বিবিসি/রয়টার্স : যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমক্র্যাটিক প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প থেকে ১২ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ৫০ ভাগ ভোটার বর্তমানে হিলারিকে প্রেসিডেন্ট পদে সমর্থন দিচ্ছেন। এবিসি নিউজের নয়া জরিপে এমন চিত্রই উঠে এসেছে। জরিপে দেখা যায়, যেখানে ৫০ ভাগ ভোটার হিলারিকে সমর্থন করছেন, সেখানে ট্রাম্পকে সমর্থন করছেন ৩৮ ভাগ ভোটার। ৫ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পাচ্ছেন লিবার্টারিয়ান প্রার্থী গ্যারি জনসন। আর গ্রিন পার্টির জিল স্টেইনকে মাত্র ২ শতাংশ ভোটার সমর্থন দিচ্ছেন বলে সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
হিলারি ও ট্রাম্পের মধ্যে সর্বশেষ তৃতীয় টেলিভিশন বিতর্কের পর তাৎক্ষণিকভাবে করা সিএনএন/ওআরসি জরিপে ওই বাক লড়াইয়ে হিলারিকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। আর এরপরই যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এবিসি নিউজের জরিপ চালানো হয়। এই জরিপে দেখা যায়, নারী ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্প থেকে হিলারির সমর্থন ২০ পয়েন্ট বেশি। আর পুরুষ ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্প থেকে ৩ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছেন সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ফার্স্টলেডি।
হিলারি শিক্ষিত ভোটারদের কাছেই সমর্থন পাচ্ছেন বেশি। কলেজের ডিগ্রি নেই এমন ভোটারদের কাছে তুলনামূলক কম সমর্থন পাচ্ছেন তিনি। শ্বেতাঙ্গ ও কলেজের কোনো ডিগ্রি নেই এমন ভোটারদের কাছে ট্রাম্পের জোর সমর্থন রয়েছে। ২০ থেকে ২২ অক্টোবরের মধ্যে এবিসি নিউজ এই জরিপ পরিচালনা করেছে। এতে সম্ভাব্য বিচ্যুতির হার ধরা হয়েছে প্লাস-মাইনাস ও .৫ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারির তুলনায় পিছিয়ে থাকার কথা স্বীকার করে নিয়েছে রিপাবলিকান প্রচার শিবির।
দলটির প্রচারণা শিবিরের ম্যানেজার ক্যালিয়ানি কনওয়ে বলেন, “আমরা পিছিয়ে আছি, তিনি (হিলারি) কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন। তবে আমরা হাল ছাড়ছি না, কারণ আমরা জানি আমরা জিততে পারি।”
এর আগে এক বক্তৃতায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘পরাজিত হতে পারেন’ বলে এক বিরল স্বীকারোক্তি দেন, জানিয়েছে বিবিসি। এদিন ট্রাম্প প্রথমবারের মতো বলেন, হার-জিত কিংবা ড্র সব ব্যাপারেই তিনি নিজেকে নিয়ে সন্তুষ্টু থাকবেন।
নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগের সব জনমত জরিপে হিলারির এগিয়ে থাকার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। জাতীয়ভাবে এগিয়ে থাকার পাশাপাশি ‘ব্যাটেল গ্রাউন্ড’ হিসেবে পরিচিত অঙ্গরাজ্যগুলোতেও ট্রাম্প ডেমোক্রেট প্রার্থীর তুলনায় পিছিয়ে আছেন বলে জরিপগুলোতে বলা হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও জরিপ সংস্থা ইপসোসের শুক্রবার প্রকাশিত জরিপে দেখা গেছে, হিলারি তার প্রতিদ্বন্দ¦ীর তুলনায় চার পয়েন্ট এগিয়ে আছেন। ইলেকটোরাল কলেজের ভোট জয়ের ক্ষেত্রেও হিলারির সম্ভাবনা ৯৫ শতাংশ বলে দেখা গেছে।
রিপাবলিকান দলের শক্তঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ইউটাহ ও অ্যারিজোনাও এবার কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো ডেমোক্রেট প্রার্থীকে সমর্থন করতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইলেক্টোরাল কলেজের মানচিত্রের এই পরিবর্তনের আভাসে হিলারি শিবিরকে তাদের কৌশলে কিছুটা পরিবর্তন আনার পক্ষে ইন্ধন যোগাচ্ছে। তারা যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটের আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দি¦তায় নামা ডেমোক্রেটিক প্রার্থীর পক্ষে অর্থ ব্যয় শুরু করেছে।
এক বক্তৃতায় হিলারি বলেছেন, তিনি ট্রাম্পের কথার উত্তর দেয়ার চেয়ে ডেমোক্রেট প্রার্থীদের বিজয়ী করার ক্ষেত্রেই বেশি মনোযোগী হবেন।
হিলারির প্রচার শিবির আশা করছে, এবারের নির্বাচন হবে মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নির্বাচন।
ডেমোক্রেট প্রচার শিবিরের ক্যাম্পেইন ম্যানেজার রবি মুক রোববার ফক্স নিউজকে বলেন, “এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি লোক ভোট দিতে যাবেন।”
অন্যদিকে ট্রাম্পের প্রচার শিবির বলছে, হিলারির প্রচার শিবির অর্থনৈতিকভাবে এতটা সুবিধা ভোগ করছে যে, তারা ট্রাম্পের নামে অপ-প্রচারও চালাতে পারছে।
 “হিলারির সঙ্গে আছে তার সাবেক প্রেসিডেন্ট স্বামী, যিনি তার হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। আছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্টলেডি, আছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। যারা হিলারির চেয়েও বেশি জনপ্রিয়, এবং তারা তাকে আশা দিচ্ছেন,” বলেন ক্যালিয়ানি কনওয়ে।
নির্বাচনে জয়ী হলে প্রথম ১০০দিনে কি করা হবে রিপাবলিকান নির্বাচনী অফিস থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে তদবিরকারী গোষ্ঠীগুলোর দৌরাত্ম কমানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করার বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্য।
 রোববার অন্য একটি নির্বাচনী বক্তৃতায় ট্রাম্প বলেছেন, তিনি তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা প্রত্যেক নারীর বিরুদ্ধে মামলা করবেন। পাশাপাশি নির্বাচনে কারচুপি হতে পারে এই অভিযোগও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
একইদিন ট্রাম্পের ছেলে এরিক ট্রাম্প বলেছেন, তার বাবা হার মেনে নেবেন, যদি নির্বাচন ‘স্বচ্ছ’ হয়।
এদিকে নির্বাচনী সমাবেশে হিলারি বলেছেন, ট্রাম্প হচ্ছেন সেসব পরাজিতদের একজন, যারা নিজেদের হারের জন্য অন্যদের দায়ী করতে চায়।
মুখোমুখি শেষ টেলিভিশন বিতর্কে নির্বাচনে পরাজিত হলে ফল মেনে নেবেন কী না, এমন প্রশ্নে ট্রাম্প কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানানোর প্রতিক্রিয়ায় হিলারি এ মন্তব্য করেন।
ট্রাম্পের আচরণকে ‘অগণতান্ত্রিক দেশের স্বৈরাচারদের মত’ উল্লেখ করেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি।
“শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের কারণেই আমেরিকা আজকের আমেরিকা হতে পেরেছে। দেখুন, কিছু লোক থাকবেই, যারা নিজেদের পরাজয়ের দায় অন্যদের দেবে; আমরা ঠিকই এগিয়ে যাবো,”বলেন তিনি।
যৌন হয়রানিসহ বিভিন্ন অভিযোগে এরইমধ্যে পল রায়ানসহ অনেক রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ