ঢাকা, শুক্রবার 29 March 2024, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী
Online Edition

নার্গিস বেগম ধর্ষিতা কি না, তদন্ত চাইল বাংলাদেশ

বাংলাদেশে খুলনার নার্গিস বেগমকে ভারতে একটি ট্রেনে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছে, তার পরিবারের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ ওঠার পর বাংলাদেশ সরকার বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে।

দিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে বিবিসি বাংলাকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে এই ব্যাপারে তারা ইতিমধ্যেই উদ্যোগ নিয়েছেন এবং ওই পরিবারের আশঙ্কার বিষয়টি ভারতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

গত মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাংলাদেশী নাগরিক নার্গিস বেগমের দেহ উত্তরপ্রদেশের ফিরোজাবাদ জেলায় একটি ট্রেন লাইনের পাশে পড়ে থাকতে দেখা যায় বলে ওই রাজ্যের পুলিশ জানিয়েছে।

প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ওই দেহটি আগ্রার মেডিক্যাল কলেজ মর্গে রাখা ছিল, অবশেষে এ সপ্তাহেই সেটি সীমান্ত পেরিয়ে খুলনায় তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

ফিরোজাবাদ জেলার পুলিশ-প্রধান পীযূষ শ্রীবাস্তব অবশ্য বিবিসির কাছে দাবি করেছেন নার্গিস বেগম আদৌ ধর্ষিতা হননি, বরং ময়না তদন্ত থেকে এটাই মনে হচ্ছে যে ট্রেনে কাটা পড়েই তার মৃত্যু হয়েছে।

    নার্গিস বেগমের পরিবার যে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ করেছেন, তাদের সেই বক্তব্যের রেশ ধরেই আমরা গোটা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের অনুরোধ জানাচ্ছি
    সালাউদ্দিন নোমান চৌধুরী, উপরাষ্ট্রদূত

তবে নার্গিস বেগমের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, মৃতদেহটির চেহারা দেখে তারা নিশ্চিত যে হত্যার আগে তার সঙ্গে চরম নির্যাতন করা হয়েছিল।

আজমির শরিফ জিয়ারত করতে যাওয়ার পথে ভারতের কানপুর রেল স্টেশনে নার্গিস বেগম তার মা ও মেয়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। তাঁর জন্মান্ধ মা-ও বলেছেন, ট্রেনের ভেতর কিছু লোক জোর করে নার্গিসকে আটকে রেখেছিল।

নার্গিস বেগমের মৃতদেহটি যখন সোমবার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় তখন সেটি রীতিমতো পচেগলে গিয়েছিল।

ফিরোজাবাদ জেলার পুলিশ অবশ্য এজন্য দিল্লির বাংলাদেশ দূতাবাসকেই প্রকারান্তরে দায়ী করেছেন। পুলিশ সুপার বিবিসিকে বলেছেন, ‘এক মাসেরও বেশি সময় ধরে আমরা হাইকমিশনকে এই দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য তাগাদা দিচ্ছি, কিন্তু তারা এতদিন কোনও গা করেননি।’

দেহটি নিতে যে কিছুটা দেরি হয়েছে তা অবশ্য স্বীকার করছে দিল্লির বাংলাদেশ দূতাবাসও। ডেপুটি হাই কমিশনার সালাউদ্দিন নোমান চৌধুরী জানান, এ ব্যাপারে তারা যখন নার্গিস বেগমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তখন তারা প্রথমে আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে বসেন।

ক্ষতিপূরণের বিষয়টি পরে দেখা যাবে – কিন্তু পরিবার দেহটি নিতে রাজি না-হলে পুলিশ ভারতেই তার দাফনের ব্যবস্থা করবে, পরিবারটিকে এ কথা বোঝানোর পরই তারা অবশেষে দেহটি ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়।

কিন্তু এই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েই কেটে যায় বেশ কিছুটা মূল্যবান সময় – যাতে দেহটির অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে।

এদিকে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ বিবিসিকে জানিয়েছে, এ ব্যাপারে কোনও তদন্ত হলে তাদের কোনও আপত্তি নেই – আর নার্গিস বেগমের সঙ্গে যে কোনও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি সেই মেডিক্যাল টেস্টের রিপোর্টও তাদের হাতেই আছে।
বিবিসি বাংলা

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ