ঢাকা, শুক্রবার 29 March 2024, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী
Online Edition

সরকার আতঙ্কিত, তাই সন্ত্রাস সৃষ্টি করে দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে: জামায়াতে ইসলামী

সরকারের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসী তান্ডব উপেক্ষা করে ২০ দলীয় জোটের ঘোষিত দেশব্যাপী মিছিল, সমাবেশ ও অবরোধ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে অব্যাহত রেখে জালেম সরকারের পতন ঘটানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী  জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন,
“২০ দলীয় জোটের শান্তিপূর্ণ মিছিল, সমাবেশ ও গণঅবরোধ কর্মসূচির প্রতি ব্যাপক জনসম্পৃক্ততার কারণে সরকার আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। আতঙ্কিত সরকার সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের বাঁচার অধিকার আদায়ের আন্দোলনের বিরুদ্ধে দলীয় ক্যাডার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস সৃষ্টি করে দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
বিরোধীদলকে গণতান্ত্রিক পন্থায় রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে সরকার হত্যা, খুন ও দমন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এখন অস্ত্রের ভাষায় কথা বলতে শুরু করেছেন। গত ১৮ জানুয়ারী ঢাকার বিয়াম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপে আওয়ামী লীগ নেতা ও খাদ্যমন্ত্রী এডভোকেট কামরুল ইসলাম ‘অস্ত্র দিয়েই আন্দোলন দমন করার ঘোষণা দিয়ে’ প্রমাণ করেছেন যে, তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন না। গত ১৮ জানুয়ারী চট্টগ্রামের এক মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এম. হাফিজ আক্তার ‘অর্পিত ক্ষমতা বলে পুলিশ অবশ্যই গুলি করবে’ বলে বেআইনী মন্তব্য করে খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি করেছেন। এর আগে বিজিবি মহাপরিচালক ও আইজিপি জনগণের বুকে গুলি চালানোর প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের বক্তব্য দেশের সাড়ে ১৬ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে। আমি তাদের এ ধরনের অন্যায়, অযৌক্তিক, উস্কানীমূলক, অসাংবিধানিক এবং বেআইনী বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তারা এ ধরনের দায়িত্বহীন ও অনৈতিক বক্তব্য দিয়ে সহিংসতাকেই উস্কে দিচ্ছেন।
২০ দলীয় জোটের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে দিশেহারা সরকার আন্দোলন দমনের জন্য আওয়ামী ক্যাডার ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে সারাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে ও জ্বালিয়ে দিয়ে এবং লুটপাট করে গ্রামগুলো জনশূন্য করে বিরানভূমিতে পরিণত করছে। ঐ উপজেলায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। সরকার নিজেই যদি তান্ডব সৃষ্টি করে তাহলে মানুষ কোথায় যাবে? আমরা সরকারের এ ধরনের সন্ত্রাসী তান্ডব বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি।
শান্তিপূর্ণ অবরোধ চলাকালে আজও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, সিলেট, বগুড়া, পাবনা, ভোলা, সুনামগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নারায়ণগঞ্জ, ফেনী, চাঁদপুর, কক্সবাজার, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, চুয়াডাঙ্গা, যশোর ও মাগুরাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে দুই শতাধিক নেতা-কর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। ১৮ জানুয়ারী সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জামায়াতে ইসলামীর নেতা সাইফুল ইসলামকে সরকার অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে।
নড়াইল পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলার ও ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি এডভোকেট ইমরুল কায়েস উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেয়ার জন্য ঢাকায় আসলে তাকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। আজ ১৯ জানুয়ারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তার লাশ পাওয়া গিয়েছে। গত ১৭ জানুয়ারী রাতে ঢাকা মহানগরীর কাফরুল থানা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী আব্দুল মতিনকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোক হিসেবে পরিচয় দিয়ে আটক করে নিয়ে যায়। তাকে এখন পর্যন্ত আদালতে হাজির করা হয়নি। তার পরিবার-পরিজন চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে আছেন। তাকে কোথায় কি অবস্থায় রাখা হয়েছে তা অবিলম্বে প্রকাশ করে তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি এবং জামায়াতে ইসলামীসহ ২০ দলীয় জোটের সারাদেশে গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি প্রদান করার জন্য আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
সরকারের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসী তান্ডব ও গণগ্রেফতার অভিযান উপেক্ষা করে ২০ দলীয় জোটের ঘোষিত মিছিল, সমাবেশ ও অবরোধ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে অব্যাহত রেখে এ জালেম সরকারের পতন ঘটানোর জন্য আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ