বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

সিরিয়া সম্মেলন শেষ: নতুন বৈঠকের প্রতিশ্রুতি দেয়নি সরকারপক্ষ

সংগ্রাম ডেস্ক : সুইজারল্যান্ডে জেনেভা-২ সিরিয়া শান্তি সম্মেলনের প্রথম দফা আলোচনা দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এবং পাকাপোক্ত কোনো চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়েছে।

১০ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফা আলোচনার দিন নির্ধারিত হলেও তাতে যোগ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়নি সরকারপক্ষ।

সপ্তাহব্যাপী আলোচনার শেষ অধিবেশনে শুক্রবার দু’পক্ষই একে অপরকে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করেছে।

সিরিয়া সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ালিদ মুয়াল্লেম বিরোধীপক্ষকে ‘অপরিপক্ক’ বলে অপমানজনক মন্তব্য করেন। অন্যদিকে, বিরোধীপক্ষের আলোচক লোয়াই সাফি বলেন, শাসকগোষ্ঠীর রক্তক্ষয় বন্ধের কোনো ইচ্ছা নেই। তবে দু’পক্ষের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পরও প্রথম দফা আলোচনা থেকে সামনের দিনগুলোতে এগিয়ে যাওয়ার একটি ভিত্তি তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মধ্যস্থতাকারী জাতিসংঘ দূত লাখদার ব্রাহিমি। তিনি বলেন, আলোচনা ধীরগতির হলেও বিভিন্ন বিষয়ে দুপক্ষের কিছুটা অভিন্ন মত দেখা গেছে। সরকারও বিরোধীপক্ষ মানবিক ত্রাণ সরবরাহ এবং সহিংসতার অবসান ঘটানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করেছে। ১০ ফেব্রুয়ারিতে আবার দু’পক্ষের আলোচনায় বসার দিনও নির্ধারিত হয়েছে। কিন্তু বিরোধীদল ফেব্রুয়ারির আলোচনায় অংশ নিতে রাজি হলেও ওয়ালিদ মুয়াল্লেম এ ব্যাপারে কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন বলে জানায় বিবিসি।

সাংবাদিকদের মুয়াল্লেম বলেন, “আমরা জনগণের উদ্বেগ এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর প্রতিনিধিত্ব করি। আমরা যদি বুঝি যে সেটি (আরেকটি বৈঠক) তাদের দাবি, তাহলে আমরা ফিরে আসব”।

ওদিকে, ব্রাহিমি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সিরিয়া সরকারের প্রতিনিধিরা তাকে বলেছেন, তারা যে পরবর্তী আলোচনায় ফিরবেন না বলেই ভাবছেন তা নয়। বরং তারা আলোচনায় ফিরবেন বলেই জানিয়েছেন। তবে তার আগে দামেস্কের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করার দরকার পড়বে বলে জানান প্রতিনিধিরা।

আলোচনায় ১০ টি বিষয়ে দু’পক্ষ একমত হয়েছে বলে ব্রাহিমি মনে করেন। তাছাড়া, দুপক্ষ মুখে স্বীকার না করলেও তাদের মধ্যে মতের মিল হওয়ার মতো আরো অনেক বিষয়ই আছে বলেও জানান ব্রাহিমি।

তবে দু’পক্ষের কেউই তাদের মূল অবস্থান থেকে একটুও সরে আসেনি। বিরোধীপক্ষ এখনো প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে অন্তর্র্বতী প্রশাসন গড়া নিয়ে আলোচনা করতে চায়। আর সরকার পক্ষও আগে ‘সন্ত্রাস’ দূর করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে চায়। সশস্ত্র শক্রুপক্ষকে বোঝাতেই সন্ত্রাস শব্দটি ব্যবহার করে আসছে সিরিয়া।

সদ্য শেষ হওয়া সম্মেলনে দুপক্ষের মধ্যে বিশাল ব্যবধান থেকেই গেছে। তবে ব্রাহিমি বলছেন, তারা অন্তত এক কক্ষে বসে আলোচনা করতে অভ্যস্ত হয়েছে। একে অপরের উদ্বেগ এবং সমস্যাগুলোও কখনো কখনো স্বীকার করে নিয়েছে। তিনি বলেন, “অগ্রগতি খুবই ধীর এবং শুরুটা আহামরি কিছু না হলেও এ সূচনা থেকেই আমরা অগ্রযাত্রার পথে যেতে পারি”।

তাই কূটনীতিকরা বলছেন, এ মুহূর্তে আলোচনা প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়টাকেই সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। এভাবে আলোচনা চলতে চলতে একসময় দুপক্ষই কট্টর অবস্থান থেকে কিছুটা সরে আসবে বলে আশা করছেন তারা।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ