বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

উলামায়ে কেরাম ও ইসলামপন্থীদের সাথে উপহাস বন্ধ না করলে জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে -শীর্ষ উলামায়ে কেরাম

দেশের শীর্ষ ওলামায়েকেরাম এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, সরকার ও সরকারের মন্ত্রী-এমপিগণ জঘন্য মিথ্যাচার ও ইসলাম-ওলামা বিরোধী ন্যক্কারজনক বক্তব্য দিয়ে চরম সীমালংঘন ও ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছেন। গত বুধবার জাতীয় সংসদে শেখ সেলিম এবং ইতঃপূর্বে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বলেছেন; ‘৫ মে কোন হেফাজতের কর্মী মরে নাই তারা গায়ে রং মেখে শুয়ে ছিলেন” বলে আলেম হাফেজদের রক্তের সাথে যে চরম উপহাস ও তামাশা শুরু করেছেন তার প্রতিবাদের ভাষা আমাদের জানা নেই। ১৫ জুন চার সিটি নির্বাচনে ৫ মে শাপলা চত্বরে নির্মম নৃশংস গণহত্যার শিকার হেফাজতী আলেম-হাফেজদের রক্তের নীরব প্রতিবাদ করেছেন এদেশের সর্বস্তরের তৌহিদী জনতা। এখনো যদি সরকার বাহাদুর তওবা করে ইসলাম নির্মূল নীতি পরিহার না করে এবং ওলামায়েকেরামের রক্তের সাথে উপহাস বন্ধ না করে তাহলে গাজীপুর সিটি নির্বাচনসহ ভবিষ্যতে সকল নির্বাচনে উক্ত ইসলাম বিদ্বেষী চক্রকে শান্তিকামী তৌহিদী জনতা গণপ্রত্যাখ্যান করবে।

শীর্ষ ওলামায়েকেরাম বলেন, ৫ মে কালরাতে শাপলা চত্বরে বাতি নিভিয়ে মিডিয়া বন্ধ করে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, সাদা পোশাকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের মির্মম, বর্বর হত্যা, গণহত্যা দুনিয়ার সকল সভ্যতাকে ¤¬ান করেছে। ক্লান্ত, শ্রান্ত, ঘুমন্ত, ইবাদতরত আলেম ও হাফেজদের উপর নৃশংস হামলার দৃশ্য দেখে যখন বিশ্ববিবেক ডুকরে ডুকরে কাঁদছে, বিদেশী মিডিয়া ও বিভিন্ন ওয়েবসাইটে এ রাতে গণহত্যার ৯২ মিনিটের ভিডিও ক্লিপ দেখে কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছে না। তারা  প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট সকলকে উদ্দেশ করে বলেন, আমাদের দেশের মিডিয়ার গলা চেপে ধরে নিরীহ ওলামায়েকেরামের রক্তের ¯্রােত দুনিয়ার চোখ থেকে আড়াল করতে পারেননি। আলজাজিরা, ইকনোমিস্ট, গার্ডিয়ানসহ অগণিত মিডিয়া ও ওয়েবসাইটে উক্ত গণহত্যার বিভৎস চিত্র দেখে আপনারা চোখের পানি ধরে রাখতে পারবেন? আলেম, হাফেজ হওয়ার কারণে কি এ গণহত্যার কোন ন্যায় বিচার হবে না? বিভিন্ন মহল থেকে বার বার দাবি করা হয়েছে বিচার বিভাগীয় তদন্ত হোক। কিন্তু কেন তা হলো না? বিভিন্ন মিডিয়ায় নৃশংস গণহত্যার ভিডিও ক্লিপ ও লাশের স্তূপের অগণতি ছবি প্রকাশের পরও ডি.এম.পি কমিশনার মাত্র ১১ জন কর্মীর লাশ পেয়েছেন বলে সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন। অপরদিকে প্রধানমন্ত্রী কোন হত্যাকা-ই ঘটেনি বলে ঘোষণা দিলেন। দেশের অভিভাবক মাননীয় সরকার প্রধানের এ ঘোষণায় বিশ্ববিবেক হতবাক।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা অনুরোধ করছি ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে আলেম, হাফেজদের রক্ত নিয়ে যারা খেলা করেছে তাদের পক্ষ নিবেন না। আপনার চারপাশে নাস্তিক, মুরতাদ, বাম ও ইসলামের দুশমনরা আপনাকে ডুবানোর জন্য ভুলপথে পরিচালিত করছে। আপনি এখনি সর্তক না হলে ওরা আপনাকে সর্বনাশ করে ছাড়েব।

তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনার ঘোষণা অনুযায়ী আপনি কুরআন পড়েন, নামায পড়েন অতএব ইসলাম ও কুরআন বিরোধী সকল আইন সংসদের বর্তমান অধিবেশনেই বাতিল করুন। অন্যথায় সর্বস্তরের আলেম-ওলামা, পীর মাশায়েখ শাহাতাদের তাম্মানা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের ঈমানী অধিকার আদায় করে ছাড়বে ইনশাআল¬াহ।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর ও ঐতিহ্যবাহী হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা আহমদ শফী, শীর্ষ আলেমেদ্বীন রাবেতা আলম আল ইসলামীর স্থায়ী সদস্য ও সম্মিলিত ওলামা-মাশায়েখ পরিষদের সভাপতি মাওলানা মুহিউদ্দীন খান, খেলাফত আন্দোলনের প্রধান আমীরে শরীয়ত ও ইসলামী দল সমূহের আহ্বায়ক মাওলানা শাহ আহমাদুল্লাহ আশরাফ, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের সভাপতি শাইখ মাওলানা আবদুল মোমিন, দারুল মাআরিফের মহাপরিচালক মাওলানা সুলতান যওক নদভী, ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক পটিয়া মাদরাসা ও সম্পাদক, আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস মাওলানা আব্দুল হালিম বুখারী, মাওলানা মোহাম্মাদ ইসহাক, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর আল্লামা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, মাওলানা আবদুর রহমান চৌধুরী, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম নির্বাহী সভাপতি মাওলানা মোস্তফা আযাদ, ইসলামী ঐক্যজোটের আমীর মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী, মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন, ইসলামী দলসমূহের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, সম্মিলিত ওলামা-মাশায়েখ যুগ্ম-মহাসচিব ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, ফরায়েজী আন্দোলনের আমীর মাওলানা আবদুল্লাহ মোহাম্মাদ হাসান, হক্কানী পীর মাশায়েখ পরিষদের সভাপতি শাহতলীর পীর মাওলানা আবুল বশর, মুফতি ইজহারুল ইসলাম, তাহরিকে খতমে নবুয়াতের চেয়ারম্যান ড. মাওলানা সৈয়দ এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী পীর জৈনপুরী, শর্ষীনার পীর মাওলানা শাহ আরিফ বিল্লাহ সিদ্দিকী, মীরের সরাইর পীর মাওলানা আ. মোমেন নাছেরী, টেকেরহাটের পীর মাওলানা কামরুল ইসলাম সাঈদ আনসারী, মুফতি কেফায়েত উল্লাহ, মুফতি ফখরুল ইসলাম, মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, আল্লামা শামসুল ইসলাম, মুফতি তাজুল ইসলাম, মাওলানা রফিকুর রহমান, মুফতি আবুল কাশেম, মুফতি নাসির উদ্দীন, মুফতি ফজলুর রহমান, মুফতি এ.বি.এম. শরিফুল্লাহ, মুফতি মাসুদুর রহমান, মুফতি নাজমুস সালেহীন প্রমুখ।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ