বগুড়ায় জামায়াত-শিবির কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশ-আ’লীগের বাণিজ্য
বগুড়া অফিস : জামায়াত-শিবিরের ব্যাপারে সরকারের যুদ্ধংদেহী মনোভাবের সুযোগ কাজে লাগিয়ে বগুড়ায় জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে বাণিজ্য করছে আওয়ামী লীগ। এই বাণিজ্যে পিছিয়ে নেই পুলিশও। পুলিশ-আ’লীগ মিলে মামলা বাণিজ্যে লাখ লাখ টাকা লুটে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বগুড়ার গাবতলী উপজেলার নশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম (বিপ্লব) গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়া প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করেন, গত ৩ মার্চ ১৩ চাঁদে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছবি দেখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জামায়াত ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা নশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এ ঘটনায় ৫ মার্চ ১৩ গাবতলী থানায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো প্রায় দুশ’ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, বাগবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ নজরুল ইসলাম আসামীদের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়ে আসামীদের ধরছে না। বরং আসামীরা প্রকাশ্যে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে যাতায়াত করছে। এসব বিষয়ে উক্ত পুলিশ কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি মামলার বাদীকে তার অফিসে ডেকে নিয়ে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন এবং আ’লীগ করার সাধ মিটিয়ে দেবেন বলে হুমকি দেন। সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে মামলার বাদী অবিলম্বে উক্ত পুলিশ কর্মকর্তার শাস্তির দাবি করেন।
এদিকে, গাবতলী থানার বাগবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ নজরুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মামলার আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। কোন আসামীর নিকট থেকে অবৈধ অর্থ নেয়া হয়নি। বরং মামলার বাদী নিজে আসামীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চার্জশিট থেকে নাম কেটে দেয়ার কথা বলে মোটা অংকের টাকা দাবি করেছে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে অফিসে এসে সাধারণ মানুষকে মামলার আসামী করার জন্য চাপ দিয়েছে। তার কথামতো কাজ না করার কারণেই পুলিশের বিরুদ্ধে এসব মিথ্যাচার করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩ মার্চের সহিংস ঘটনার পর জেলায় অর্ধশতাধিক মামলায় জামায়াত-শিবিরের লক্ষাধিক নেতা-কর্মীকে আসামী করা হয়। এসব মামলায় অসংখ্য নেতা-কর্মীকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়। এই অজ্ঞাতের সুযোগ কাজে লাগিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সরকারি দলের নেতা-কর্মীরা ব্যাপক বাণিজ্য শুরু করে। জামায়াত-শিবিেেরর নেতা-কর্মীর পাশাপাশি গ্রামের সহজ-সরল মানুষকে মামলায় জড়ানোর ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের অর্থ আদায় করতে থাকে। তাদের সেই বাণিজ্য এখনো অব্যাহত রয়েছে। এই মামলা বাণিজ্যে পুলিশের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাও জড়িত বলে বিভিন্ন সময় অভিযোগ উঠেছে। নন্দীগ্রাম থানার ওসির বিরুদ্ধে উপজেলা চেয়ারম্যান সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করার পর তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই অভিযোগে একাধিক থানার ওসি বদল করা হয়েছে। ৩ মার্চের গণবিস্ফোরণের ঘটনায় জামায়াত-শিবির বেকায়দায় পড়লেও সরকারি দলের নেতা এবং পুলিশের ভাগ্য খুলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনেরা।