বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কেভিন রাডের শপথ ॥ অবসরে জুলিয়া

সংগ্রাম ডেস্ক : অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতাসীন দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের একদিন পর  বৃহস্পতিবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছে কেভিন রাড।

 গবর্নমেন্ট হাউজে তিনি গবর্নর-জেনারেল কুয়েন্টিন ব্রাইসের সামনে শপথ নেন। এরপর কেভিন রাড পার্লামেন্টে সংক্ষিপ্ত ভাষণে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ডের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। গিলার্ড ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির প্রধানের পদ হারানোর পর বুধবারই রাজনীতি থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।

 আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর অস্ট্রেলিয়ায় পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনমত জরিপ বলছে, ওই নির্বাচনে লেবার পার্টি পরাজিত হবে।

ক্ষমতাসীন দল ও প্রধানমন্ত্রী পদে পরিবর্তন আসার পর সে নির্বাচন এগিয়ে আনা হবে কিনা তা মিস্টার রাডকে পরিষ্কার করতে বলেছেন বিরোধীদলীয় নেতা টনি অ্যাবোঁ। তিনি নয়া প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাডকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, অস্ট্রেলিয়ার জনগণকে এখন তাদের প্রকৃত প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের সুযোগ দেয়া উচিত। সেটি করতে হলে এখনই নির্বাচন দেয়ার বিকল্প নেই।

জুলিয়াকে চায় না তার দলই : দল চায় না তাকে ৷ নির্বাচনের কয়েক দিন আগেই হাড়ে হাড়ে টের পেলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ড৷ অস্ট্রেলীয় লেবার পার্টির নেতৃত্ব নিয়ে বহু দিন ধরেই তার বিরোধ চলছিল অন্য এক নেতা কেভিন রাডের। বিরোধের মীমাংসা করতে শেষ পর্যন্ত দলীয় পর্যায়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হয়। সেই নির্বাচনেই ৫৭-৪৫ ভোটে পরাজিত হয়েছেন ডাকসাইটে এই রাজনীতিবিদ। পুরনো শত্রুর কাছে দলকে নেতৃত্ব দেয়ার ‘প্রেস্টিজ ফাইটে’ হেরে গিয়ে জুলিয়া ঠিক করেছেন আর নয়, এ বার রাজনীতিকে বিদায় দেয়ার সময় হয়েছে তার।

ইতিহাসের চাকা ঘুরল আরো এক পাক। কয়েক বছর আগে যাকে হারিয়ে দিয়ে দলের রাশ নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলেন শেষ পর্যন্ত তার কাছেই হারতে হলো। শুধু হার নয়, সম্মান রক্ষার লড়াইয়ে পর্যুদস্ত হয়ে মাত্র ৫১ বছর বয়সেই রাজনীতি ছাড়ার কথাও ভাবতে হলো জুলিয়া গিলার্ডকে। সামনেই দেশে সাধারণ নির্বাচন। সমীক্ষা বলছে, এবার অস্ট্রেলিয়ায় লেবার পার্টির অবস্থা মোটেই ভালো নয়। নির্বাচনে বরাডুবি কেবল সময়ের অপেক্ষা। দলের এই অবস্থার জন্য সংগঠকদের একাংশ দায়ী করছেন প্রধানমন্ত্রীকেই। বেশ কিছু ক্ষেত্রে তার অনড় মনোভাবই দলকে ডুবিয়েছে বলে অভিযোগ। তবে, ভোটে জুলিয়াকে হারিয়ে যিনি দলের নেতৃত্ব পেলেন, সেই কেভিন রাড অবশ্য অন্য কথাই বলছেন। তার মতে, ‘কঠিন সময়ে দেশের হাল ধরেচিলেন জুলিয়া। প্রথমে উপপ্রধানমন্ত্রী, পরে প্রধানমন্ত্রী হয়ে যে দায় তিনি সামলেছেন তার তুলনা হয় না। ওর থেকে অনেক কিছু শিখেছি।’ লেবার পার্টির নেতৃবর্গের মধ্যে জুলিয়ার থেকে কেভিনের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। তাই ভোটে ভালো ফলের আশাও করছেন অনেকে। তবে হারকে মোটেই ভালো ভাবে নেননি জুলিয়া। দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের পদ খোয়ানোর পরই জানিয়েছেন, আর কোনো নির্বাচনেই লড়বেন না তিনি। ছেড়েই দেবেন রাজনীতি। তবে তিনিই প্রথম মহিলা যিনি অস্ট্রেলিয়ার শাসনভার সামলেছেন- এই অনুভূতি সব সময়েই আলাদা তৃন্তি দেবে তাকে। তিনি দাবি করেছেন, তার শাসনকাল রাজনীতির ইতিহাসে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতে তাকে মডেল করেই আরো অনেক মহিলা এই পদে আসবেন। দলের নেতৃত্বের ভার পেলেও এখনই প্রধানমন্ত্রীত্ব পাচ্ছেন না কেভিন রাড। তার জন্য গিলার্ডকে পদত্যাগ করতে হবে৷ দেশের গবর্নর জেনারেল কোয়েন্টিন ব্রাইসের কাছে প্রধানমন্ত্রী এখনই পদত্যাগপত্র পাঠাবেন কি না তা নিয়ে আলোচনা চলছে। ংউপপ্রধানমন্ত্রী ওয়েন সোয়ান অবশ্য ইতোমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ