দৈনিক সংগ্রাম লোগো

জাতীয় বাংলাদেশ

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে ড. ইউনূস

দ্রুত নির্বাচন করা সবসময় ভালো সমাধান নাও হতে পারে

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে সম্প্রতি সুইজারল্যান্ড সফর করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই সফরে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রধান বৈদেশিক বিষয়ক আলোচক গিডিয়ন র‌্যাচম্যানের পডকাস্টে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে সম্প্রতি সুইজারল্যান্ড সফর করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই সফরে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রধান বৈদেশিক বিষয়ক আলোচক গিডিয়ন র‌্যাচম্যানের পডকাস্টে অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। ‘র‌্যাচম্যান রিভিউ’ নামের ওই পডকাস্টে তিনি আলোচনা করেছেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপট থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সংক্রান্ত একাধিক ইস্যুতে।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমস ওই পডকাস্টটি লিখিত আকারে বৃহস্পতিবার তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। তার চুম্বক অংশ নিয়ে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা জানতে চান র‌্যাচম্যান। সিরিয়ার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, দ্রুত নির্বাচন করা সবসময় ভালো সমাধান নাও হতে পারে। কারণ, তাড়াহুড়োর কারণে পুরো জাতি আরও বিভক্ত হয়ে যেতে পারে। এ বিষয়ে ড. ইউনূসের মতামত জানতে চান তিনি।

জবাবে ড. ইউনূস বলেছেন, তিনি জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতে এমনও হতে পারে, শিক্ষার্থীরাই হয়ত নতুন দল গঠন করে দেশের হাল ধরার চেষ্টা করবে। বর্তমান সরকারেও তিন শিক্ষার্থী আছেন। আমার কথা হচ্ছে, তারা যদি দেশের জন্য জীবন দিতে পারে, তবে যার উদ্দেশ্যে জান বাজি রাখলো সেটা সামলানোও উচিত। এখন আমি শুনতে পাচ্ছি, অন্যান্য শিক্ষার্থীরা একদম তরুণদের নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে আগ্রহী। তবে শিক্ষার্থীদের আশঙ্কা, তারা একটা আসনও পাবে না, কারণ তাদের কেউই চেনে না। কিন্তু আমি তাদের বলেছি, তোমাদের পুরো দেশ চেনে। তোমরা একটা সুযোগ নিয়ে দেখতেই পারো।

তবে শিক্ষার্থীরা মূলধারার রাজনীতিতে জড়ালে তাদের ঐক্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও স্বীকার করেছেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সরাসরি মাঠে নামলে সবরকম রাজনীতিবিদদের সঙ্গে তারা যুক্ত হবেন। তারা তখন নিজেদের স্বকীয়তা ধরে রাখতে পারবে কিনা, তা এখন নিশ্চিত করে তো বলা যাচ্ছে না। তবে একটা সুযোগ তো আমাদের নিতেই হবে। শিক্ষার্থীরা প্রস্তুত। তারা প্রচারণা চালাচ্ছে। দেশব্যাপী নিজেদেরকে তারা সংগঠিত করে তুলছে।

আলোচনার এ পর্যায়ে বাংলাদেশে ইসলামপন্থি ও ভারতের ইস্যু নিয়ে জানতে চান র‌্যাচম্যান। বাংলাদেশের অবস্থা বেশ নাজুক এবং ইসলামপন্থিরা দেশের দখল নিয়ে নেবে- ভারতের দিক থেকে এ ধরনের একটা বক্তব্য শোনা যায় বলেছেন তিনি। এ বিষয়ে ড. ইউনূসের প্রতিক্রিয়া জানতে চান সঞ্চালক।

এ প্রশ্নের উত্তরে আবারও শিক্ষার্থীদের ওপরই নিজের আস্থার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন নোবেলজয়ী উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ভারতের আশঙ্কা বাস্তবে রূপান্তরিত হওয়ার কোনও আশঙ্কা তিনি দেখেন না। দেশের বিষয়ে তরুণরা যথেষ্ট নিবেদিত। নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য রাজনীতি করার মতো অসৎ মানসিকতা তাদের নেই।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান লক্ষ্য নিয়ে র‌্যাচম্যান জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেছেন, আগের সরকার ও সরকার ঘনিষ্ঠ লোকজন সব লুট করে নিয়ে গেছে। ব্যাংকগুলোকে ফাঁকা বানিয়ে দিয়ে গেছে। তাই, আমাদের প্রধান ও প্রথম লক্ষ্য, অর্থনীতির চাকা সচল করা।