জাতীয়
ছিনতাই রোধে নিতে হবে কঠোর পদক্ষেপ
দেশে ছিনতাই আগের তুলনায় বেড়েছে। পত্রিকার পাতা খুললেই চোখে পড়ছে ছিনতাইয়ের খবর।
দেশে ছিনতাই আগের তুলনায় বেড়েছে। পত্রিকার পাতা খুললেই চোখে পড়ছে ছিনতাইয়ের খবর। ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে দোকান বন্ধ করে মোটরসাইকেল নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন এক ব্যবসায়ী। পথিমধ্যে সেকশন বেড়িবাঁধ এলাকায় পৌঁছালে একাধিক মোটরসাইকেলে সাত-আট জন এসে তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে এবং তার বাঁ পায়ের হাঁটুতে গুলী করে। পরে তার কাঁধে থাকা স্বর্ণের ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তার ব্যাগে ৫০ ভরি স্বর্ণালংকার ও সাড়ে ৩ লাখ টাকা ছিল। পত্রিকান্তরের প্রকাশিত খবরটি বেশ গুরুত্ব বহন করে। আতংকও সৃষ্টি করে। বর্ধিত নজরদারি এবং বিশেষ অভিযানের মধ্যেও রাজধানীর সড়কে রাতের বেলায় বেড়েছে ছিনতাইকারী আতঙ্ক। যা জনজীবনে নতুন করে আতংক সৃষ্টি করেছে।
সাম্প্রতিক অপরাধের পরিসংখ্যান থেকে বলা হচ্ছে যে, ছিনতাইয়ের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এর মধ্যে মোহাম্মদপুর, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, মুগদা, সবুজবাগ, হাজারীবাগ, ধানমন্ডি, রামপুরা ও বাড্ডা থানা এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশি ঘটছে। পুলিশ বলছে, ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলে বা যখন কেউ হাতেনাতে ধরা পড়ে তখন তারা দ্রুত বিচার আইনে ঐ ঘটনা রেকর্ড করে। তবে পাঁচ জনের কম লোক ছিনতাই বা ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকলে তখন পেনাল কোডের অধীনে মামলা হয়। এসব মামলাকে পুলিশ ‘ডাকাতি’ (দস্যুতা) মামলা বলে থাকে। কামরাঙ্গীরচরে স্বর্ণালংকার ছিনতাইয়ের ঘটনায় ডাকাতির মামলা দায়ের করা হয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, পুলিশ সদর দপ্তরের ক্রাইম ডেটাবেজে দেখা যায়, গত ডিসেম্বরে সারা দেশে মোট ১৫৯টি ‘ডাকাতি’ মামলা করা হয়েছিল, যা নভেম্বরে ছিল ১৩৩টি। ২০২৪ সালে এই মামলার সংখ্যা আগের বছরের ১ হাজার ২২৭টি থেকে বেড়ে ১ হাজার ৪১২টিতে দাঁড়িয়েছে। আরেক পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, রাজধানীতে বিশেষ করে রাতে ও ভোরে চলাচল করতে মানুষ ভয় পাচ্ছেন। ঘটছে চুরি ও ডাকাতির ঘটনা। পুলিশ ও ঢাকার আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার ৫০টি থানা এলাকায় গত ১ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪০ দিনে অন্তত ৩৪ জন ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে মামলা করেছেন।
৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত রাজধানীতে বিশেষ অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, অভিযান চলাকালীন ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত ৮৬৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে সেপ্টেম্বরে ২৩ জন, অক্টোবরে ৯১ জন, নভেম্বরে ১৪৮ জন এবং ডিসেম্বরে এই সংখ্যা ছিল ৫৬৪ জন। জানুযারি মাসের চিত্র হয়তো পাওয়া যাবে কিছুদিন পর।
আমরা চাইব সাধারণ জনগণের মধ্যে ছিনতাই ও ডাকাতি নিয়ে যে আতংক আছে তা দূর করার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে সরকার। কারণ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেশি। ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান জোরদার করা হবে সেই আশাও আমরা করছি। আশা করি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখবে। দেশের মানুষ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দায়িত্বশীল ও কার্যকর পদক্ষেপ আশা করে।