আন্তর্জাতিক আমেরিকা
ওয়াশিংটনে সামরিক হেলিকপ্টারের সঙ্গে উড়োজাহাজের সংঘর্ষ ॥ ৩০ লাশ উদ্ধার
আমেরিকান এয়ারলাইন্সের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ফ্লাইটটিতে ৬০ জন যাত্রী এবং চার জন ক্রু সদস্য ছিলেন। আর প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, তাদের হেলিকপ্টারটিতে তিন জন সেনা সদস্য ছিলেন, যারা প্রশিক্ষণ ফ্লাইটে ছিলেন।
সংগ্রাম ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের রোনাল্ড রিগ্যান ওয়াশিংটন ন্যাশনাল এয়ারপোর্টে মার্কিন সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টারের সঙ্গে একটি আঞ্চলিক যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের সংঘর্ষ হয়েছে। স্থানীয় সময় গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের পর পোটোম্যাক নদীতে রাতের অন্ধকারে উদ্ধার অভিযান চালানো হয় এবং ৩০টি লাশ উদ্ধার করা হয়। এটি গত ১১ বছরের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে। রয়টার্স।
দেশটির ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পিএসএ এয়ারলাইন্সের বোম্বারডিয়ার সিআরজে৭০০ উড়োজাহাজ এবং সিকোরস্কি এইচ-৬০ হেলিকপ্টারটি রানওয়েতে অবতরণের সময় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আমেরিকান এয়ারলাইন্সের আঞ্চলিক এই উড়োজাহাজটি কানসাসের উইচিটা থেকে ওয়াশিংটনে আসছিল।
আমেরিকান এয়ারলাইন্সের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ফ্লাইটটিতে ৬০ জন যাত্রী এবং চার জন ক্রু সদস্য ছিলেন। আর প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন, তাদের হেলিকপ্টারটিতে তিন জন সেনা সদস্য ছিলেন, যারা প্রশিক্ষণ ফ্লাইটে ছিলেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত ভিডিওতে সংঘর্ষের মুহূর্তে একটি অগ্নিগোলক দেখা গেছে। তবে এখনও দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেনি কর্তৃপক্ষ। দুর্ঘটনার পর উড়োজাহাজ এবং হেলিকপ্টারটি মার্কিন ক্যাপিটাল ভবনের কাছে পোটোম্যাক নদীর ওপর বিধ্বস্ত হয়েছে।
এক খবরে বলা হয়েছে, উড়োজাহাজটি বিধ্বস্তের পর নদী থেকে এখন পর্যন্ত চারজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে তাদের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
টেক্সাসের সিনেটর টেড ক্রুজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে বলেছেন, ‘সেখানে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জেনেছি আমরা। তবে কতজনকে হারিয়েছি, তা এখনও জানতে পারিনি।’ অবশ্য ক্রুজ তার তথ্যগুলোর কোনও উৎসও প্রকাশ করেননি।
উড়োজাহাজটি কানসাস থেকে ওয়াশিংটনে এসেছিল। ঘটনার পর বড় ধরনের জরুরি উদ্ধার অভিযান শুরু করা হয়েছে। রিগ্যান ওয়াশিংটন জাতীয় বিমানবনন্দর থেকে সব ধরনের বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ফক্স নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এটিকে ‘ভয়াবহ দুর্ঘটনা’ উল্লেখ করে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করেছেন। এরইমধ্যে উদ্ধার কাজের জন্য সব কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও বিবৃতিতে জানিয়েছেন তিনি।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মার্কিন ভূখ-ে সর্বশেষ বিমান দুর্ঘটনা ঘটে ২০১৩ সালের জুলাই মাসে, যখন সান ফ্রান্সিসকো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে একটি কোরিয়ান বিমান অবতরণের সময় দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত এবং ১৮০ জনের বেশি আহত হয়েছিলেন। আর মার্কিন এয়ারলাইন্সের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবশেষ দুর্ঘটনা ঘটে ২০০৯ সালে নিউইয়র্কের বাফালোর কাছে। যে দুর্ঘটনায় আঞ্চলিক জেট উড়োজাহাজের ৪৯ জন এবং নিচে থাকা একজন নিহত হন। এফএএ এবং এনটিএসবি উভয়ই এই ঘটনা তদন্ত করছে, তবে এনটিএসবি প্রধান তদন্তকারী সংস্থা হিসেবে কাজ করছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ রাত সাড়ে ৯টার দিকে এক্সে দেয়া এক পোস্টে জানিয়েছে, বিমানবন্দরের উড্ডয়ন ও অবতরণ সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে এবং জরুরি উদ্ধার কর্মীরা ঘটনাস্থলে কাজ করছেন।