কলাম
ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির ঘটনাবলীর বস্তুনিষ্ঠ মূল্যায়ন
গত ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব ঘটনা ঘটে গেল সে সম্পর্কে কোনো নির্মোহ
Printed Edition
আসিফ আরসালান
গত ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব ঘটনা ঘটে গেল সে সম্পর্কে কোনো নির্মোহ, বস্তুনিষ্ঠ এবং নিরপেক্ষ আলোচনা বা পর্যালোচনা চোখে পড়ল না। বরং ২৬ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির নামে যে বিবৃতিটি ইস্যু করা হয়েছে সেটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে সচেতন মানুষের বুঝতে কষ্ট হয় না যে, গত ৫ আগস্টের পর যারা গর্তে লুকিয়েছিল তারা অথবা তাদের প্রেতাত্মারা গর্ত থেকে মাথা বের করে চারিদিকে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। যারা পলিটিক্যাল প্রেডিকশন করতে পারেন, তারা দিব্যদৃষ্টিতে দেখছেন যে, জুলাই-আগস্ট বিপ্লব দমনে হাজার হাজার ছাত্র জনতার রক্তে যারা হাত রাঙ্গিয়েছেন তারা সদম্ভে ফিরে আসার পাঁয়তারা করছেন এবং তাদের এদেশীয় লোকাল এজেন্টরা তাদের ফিরে আসার পথ করে দিচ্ছেন। ঐ ২৬ জন তথাকথিত সুশীল শুধুমাত্র শেখ মুজিবের বাড়ি ভাঙচুর এবং আরো কয়েকটি জায়গায় ভাঙচুরই দেখলেন। কিন্তু তাদের চোখে পড়ল না শেখ হাসিনার ভারতে অপতৎপরতা এবং তারা কানে শুনলেন না ৫ ফেব্রুয়ারি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের উদ্যোগে আয়োজিত শেখ হাসিনার তথাকথিত বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের উদ্দেশে ৪৬ মিনিটের ভাষণের নামে হুমকি ধামকি এবং লম্ফঝম্প।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মি. জয়সোয়াল শেখ হাসিনার তথাকথিত ভাষণের ব্যাপারে এমন মন্তব্য করেছেন যেটা পড়ে মনে হয় যে, গায়ে যেন কোনো বাতাস না লাগে। শেখ হাসিনা নাকি নিজ উদ্যোগেই ঐ বক্তৃতাটি করেছেন। ভারতের নাকি এর সাথে কোনো যোগাযোগ নেই। উত্তরবঙ্গে একটি কথা ব্যাপকভাবে প্রচলিত রয়েছে। সেটি হলো, ‘ছোল শোতানো কথা’। অর্থাৎ ছোট শিশুকে ঘুম পাড়ানোর জন্য তাদেরকে যেসব ঘুম পাড়ানি গান শোনানো হয় সেই সব গান। ভারত, মনে হয়, বাংলাদেশের জনগণকে তেমন ছোল শোতানো কথা শোনাচ্ছে। প্রথম কথা হলো, শেখ হাসিনা কোথা থেকে এ বক্তব্য দিচ্ছেন? অবশ্যই ভারত থেকে। কারা তার এ বক্তৃতা প্রদানের আয়োজন করলো? অবশ্যই ছাত্রলীগ। সে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ। সেই নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন থেকে শুরু করে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের অন্তত সাড়ে ৩ হাজার নেতাকর্মী এই মুহূর্তে ভারতে রয়েছেন। তাদের অধিকাংশই রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গে। অবশিষ্ট রয়েছেন ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে। আর একটি ছোট অংশ রয়েছেন আসামে। একবার ভেবে দেখুন তো, ভারত থেকে পালিয়ে আসা কোনো ভারতীয় নেতা যদি বাংলাদেশে বসে ভারত বিরোধী প্রচারণা প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় তা প্রচার করে তাহলে ভারত কি বাংলাদেশকে ছেড়ে দেবে? অনুপ চেটিয়া এবং অন্যদের ক্ষেত্রে ভারত কী করেছিল? তারা শেখ হাসিনাকে বাধ্য করেছিল, উত্তর পূর্ব ভারতের বিদ্রোহী নেতাকর্মীদেরকে ভারতের হাতে তুলে দিতে। শেখ হাসিনা তো স্বকন্ঠে অর্থাৎ নিজের কন্ঠে বাংলাদেশের হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে গুলী করে মেরে ফেলে দেওয়ার হুকুম দিয়েছিলেন। আজ আন্তর্জাতিক মানদন্ডে তার বিচার হচ্ছে। বাংলাদেশ তাকে ফেরত চেয়েছে। কিন্তু ভারত এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারকে পাত্তাই দিচ্ছে না।
শেখ হাসিনা তার বক্তৃতার নামে হিংস্র উক্তিতে নতুন করে হুমকি ধামকি দিয়েছেন। বলেছেন, বাংলাদেশে ফিরে এসে তিনি ঐসব ছাত্র-জনতার তালিকা করবেন এবং সে তালিকা ধরে একটার পর একটাকে হত্যা করবেন। শেখ হাসিনার এ মানসিক বিকৃতিমূলক হুমকি ধামকি এবং উন্মত্ততা সর্বোচ্চ রাষ্ট্রদ্রোহিতায় পড়ে। কই, এ ব্যাপারে ঐ ২৬ সুশীলের গলা দিয়ে কোনো কথা বের হলো না কেন? দেখে তো মনে হচ্ছে, ওরা ভারতের কাছে আত্মা বিক্রি করেছে। এখন ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত ঘটনাবলী সম্পর্কে দুটি কথা।
॥ দুই ॥
এ ব্যাপারে আমরা ডেইলি স্টার বাংলার সম্পাদক গোলাম মোর্তজা এবং আরেকজন বিশিষ্ট টেলিভিশন আলোচক ব্যরিস্টার ফুয়াদের বক্তব্য তুলে ধরবো। গোলাম মোর্তজা বলেন, এ ধরনের ঘটনা আলোচনার সময় শুধুমাত্র যা ঘটলো তার পক্ষে বা বিপক্ষে বলা হয়। ফলে সেটি হয় এক অসমাপ্ত আলোচনা। সে আলোচনা বিক্ষিপ্ত এবং বিচ্ছিন্ন হয়। এ ধরনের সমস্ত আলোচনার একটি প্রেক্ষাপট থাকে। সে প্রেক্ষাপট হলো বাংলাদেশে সংঘটিত জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থান।
বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থান শ্রীলঙ্কার মতো গণঅভ্যুত্থান নয়। শ্রীলঙ্কার গণঅভ্যুত্থানকারীরা প্রেসিডেন্টের রাজপ্রাসাদ দখল করেছিলেন। সেখানে তারা রাজপ্রাসাদের জিনিসপত্র লুট করেছেন। রাজার বিছানায় শুয়েছেন, সোফা সেটে বসে আরাম করেছেন ইত্যাদি। কিন্তু বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানটি অত সোজা ছিল না। এটি ছিল ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থান বা বিপ্লব। গণভবনে পৌঁছতে ছাত্র-জনতার মধ্য থেকে দেড় হাজার বিপ্লবীকে শহীদ হতে হয়েছে। ২৬ হাজার বিপ্লবীকে আহত হতে হয়েছে। কয়েক হাজার বিপ্লবীর পা কেটে ফেলতে হয়েছে। প্রায় হাজার খানেক বিপ্লবী দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। এমন ভয়ঙ্কর রক্তক্ষয়ী ছিল এ বিপ্লব। শেখ হাসিনা দম্ভ করে বলেছিলেন যে, শেখ হাসিনা পালায় না। শেখ হাসিনা পালালেন ঠিকই, কিন্তু পালালেন হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করে বা গুরুতরভাবে আহত করে। সাধারণত একটি অভ্যুত্থানের পর যে ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং অভ্যুত্থানের অব্যবহিত পর যে পাল্টা রক্তপাত হয় তার বলতে গেলে কিছুই অভ্যুত্থানকারীরা করেনি। তার মানে আমি একথা বলছি না যে, অভ্যুত্থানকারী বা বিপ্লবীদের পাল্টা রক্তপাত ঘটানো উচিত ছিল।
আপনারা খেয়াল করুন যে, ৫ আগস্ট থেকে ৮ আগস্টের সন্ধ্যা পর্যন্ত ৭২ ঘন্টা বাংলাদেশে কোনো সরকার ছিল না। সরকারবিহীন এই ৩ দিনে সারা দেশ ভয়াবহ নৈরাজ্যের কবলে নিক্ষিপ্ত হতে পারতো। সেটিই ছিল স্বাভাবিক। মূলত অভ্যুত্থানকারীরা কোনো রাজনৈতিক দল কর্তৃক পরিচালিত হয়নি। তাদের কোনো রাজনৈতিক চেহারা বা চরিত্র ছিল না। তাই অভ্যুত্থানের পর অন্যান্য দেশে বিশেষ করে ফ্রান্স, সোভিয়েট ইউনিয়ন প্রভৃতি দেশে যেরকম বিপ্লবের পর তালিকা ধরে একে একে হত্যা করা হয় তার কিছুই বাংলাদেশের অভ্যুত্থানকারীরা করেনি। এমনকি ৮ আগস্ট ইউনূসের সরকার শপথ গ্রহণ করার পরেও তারা প্রতিশোধ গ্রহণের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
অভ্যুত্থানকারীরা বা অভ্যুত্থান থেকে গঠিত সরকার আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তারা একে একে দেশ থেকে বেরিয়ে গেল। শুধু শেখ হাসিনা নন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অনেক নেতা ও কর্মী বর্ডার ক্রস করলেন। যেহেতু তারা অক্ষত থাকলেন তাই তারা সীমান্তের ওপারে গিয়ে ভাবলেন যে, ইউনূসের সরকার খুব দুর্বল এবং তারা অর্থাৎ আওয়ামী লীগ খুব শক্তিশালী। যারা দেশে রয়ে গেল, তারাও সময়ের আবর্তনে সীমান্ত পাড়ি দিল। এই যে তারা চলে গেল, যাওয়ার পর ভারতে এবং বাংলাদেশে একটি ধারণার সৃষ্টি হলো যে এই সরকার খুব দুর্বল। আওয়ামী লীগের কোনো ক্ষতি করার ক্ষমতা তাদের নাই। এদিকে দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সরকার, এমনকি ছাত্র নেতাদের সমালোচনা শুরু করলেন। এর ফলে আরেকটি ধারণা বদ্ধমূল হলো যে, ইউনূস সরকার এবং ছাত্র নেতারা জনসমর্থন হারিয়েছেন। এভাবে বিপ্লবী ছাত্র এবং জনতার মধ্যে হতাশার বীজ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল। ছাত্র এবং জনতা মনে করলো যে, তারা যে ফুরিয়ে যায়নি এবং তাদের যে, জনসমর্থন রয়েছে এবং এখনো জনগণের মধ্যে বিপ্লবের যে আগুন জ¦লছে সে আগুনই হঠাৎ করে স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানলে পরিণত হলো। এটিই হলো ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারির ঘটনাবলীর প্রেক্ষাপট।
॥ তিন ॥
এ বিষয়ে টেলিভিশন টকশোর আলোচক ড. জাহেদুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনা ঐ বক্তৃতায় বলেন যে, ছাত্র সমন্বয়কদের কেউ কেউ বিয়ে করছেন। এখন শুধু সমন্বয়কদের খোঁজ নিলেই চলবে না, ওদের শ্বশুরবাড়িরও খবর নিতে হবে। তিনি বলেন, চিন্তা করুন, শেখ হাসিনা কোনো অনুতাপ অনুশোচনা তো দূরের কথা, আরো কতদূর হিংস্র হয়েছেন যে, এখন তিনি সমন্বয়কদের শ্বশুরপক্ষকেও হত্যা করতে চান।
আরেক আলোচক ব্যরিস্টার ফুয়াদ বলেন যে, হিটলার এবং মুসোলিনির ওপর পশ্চিমা বিশ্বে বিগত ৭৬ বছর ধরে তুমুল আলোচনা চলছে। তাদের স্বৈরতান্ত্রিক অপকীর্তির ওপর অনেক সিনেমা তৈরী হয়েছে। এছাড়া হাজার হাজার গ্রন্থও লিখিত হয়েছে। এখানে একটি কথা বলা দরকার। বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ বললেই হিটলারকে বোঝায়। কিন্তু হিটলারের মতাদর্শ ছিল নাৎসিবাদ। ইটালির মুসোলিনির মতাদর্শ ছিল ফ্যাসিবাদ। ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, হিটলারের জন্মস্থান হলো অস্ট্রিয়া। তার জন্মস্থানে যেসব চিহ্ন ছিল তার সমস্ত চিহ্ন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ দেখা গেছে যে, ৭০ বছর পরে কিছু কিছু নিও নাৎসি হিটলারের জন্মস্থানকে তাদের তীর্থভূমি বানানোর চেষ্টা করছিল। ইটালি এবং জার্মানিতে হিটলার ও মুসোলিনির দলকেই নিষিদ্ধ করা হয়নি, বরং সারা ইউরোপে হিটলার এবং মুসোলিনির যত স্মৃতিচিহ্ন, পোশাক পরিচ্ছদ, অবকাঠামোসহ ফ্যাসিবাদ ও নাৎসিবাদের সমস্ত চিহ্ন মুছে ফেলা হয়েছে অথবা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
হিটলারের হলোকাস্ট বা গণহত্যার কথা ইউরোপের সকলেই জানেন। সেখানে হলোকাস্ট বিরোধী আইন করা হয়েছে। এই আইন যদি কেউ ভঙ্গ করে তাহলে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। এসব কঠিন পদক্ষেপ এবং কঠোর আইনের উদ্দেশ্য হলো, আগামীতে কেউ যেন নাৎসিবাদ বা ফ্যাসিবাদ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পুনপ্রতিষ্ঠার দুঃসাহস না করে।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যে সংবিধান রচিত হয় সেখানে শুধু ইসলামী দলসমূহই নয়, ইসলামী রাজনীতিও নিষিদ্ধ হয়। অথচ মুক্তিযুদ্ধকালে পাক বাহিনী মানুষকে হত্যা করেছে। জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলামী বা মুসলিম লীগ তো কোনো মানুষকে হত্যা করেনি। তাহলে ইসলামী রাজনীতি নিষিদ্ধ হলো কেন? শেখ হাসিনা তো গত ১৫ বছর জামায়াতে ইসলামীকে ঘর থেকেই বের হতে দেয়নি। জামায়াত নেতাদেরকে মানবতাবিরোধী অপরাধে দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু তাদের সন্তানদেরকেও কোন নাগরিক সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়নি কেন? তাদের তো জন্ম হয়েছে বাংলাদেশের জন্ম হওয়ার পর। তখন তো এই ২৬ সুশীল এবং তাদের ঘরানা একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি। তাদের ঠোঁট সম্পূর্ণ সেলাই করে রেখেছিল। আজ ড. ইউনূসের সরকার সকলকে দিয়েছেন অবাধ স্বাধীনতা। যার যা ইচ্ছা সে তাই লিখছে। যার যা ইচ্ছা সে তাই বলছে। ড. ইউনূসের ৬ মাসে কোনো মিডিয়ার ওপর কোনো খবরদারি হয়নি, কারো বাকস্বাধীনতার ওপর বিন্দুমাত্র লাগাম টানা হয়নি। উপরন্তু এ সরকার, যারা সাড়ে ১৭ কোটি মানুষের বিপ্লবী রায় নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন, তারা এ ৬ মাসে ১৭০ টি আন্দোলন সামাল দিয়েছেন।
দুর্ভাগ্যের বিষয়, সরকারের এ সীমাহীন উদারতাকে এবং বিপ্লবী ছাত্রনেতাদের শান্ত থাকাকে জনবিচ্ছিন্নতা এবং শক্তি ক্ষয়ে যাওয়া বলে আওয়ামী ঘরানা মনে করেছিলেন। কোনো বিপ্লবী এমন উপেক্ষা, অবহেলা ও অপমান মেনে নিতে পারে না। শেখ মুজিবের বাড়ি কোনো ঐতিহাসিক স্থান নয়। শেখ মুজিবের বাড়ি ছিল ফ্যাসিবাদ এবং অর্থ লুটপাটের সুতিকাগার। শেখ মুজিব নিজেই সিরাজ শিকদারের হত্যার মাধ্যমে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরু করেন। রক্ষী বাহিনীর মাধ্যমে ২৭ হাজার বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়। শেখ মুজিবের এই হত্যাকাণ্ড ও লুন্ঠনকে শেখ হাসিনা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেন মাত্র।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ এবং গোলাম মোর্তজার মতে ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি যা ঘটল তার মাধ্যমে তারা জানান দিলো তাদের শক্তিমত্তা। তারা জানান দিলো যে, বিপ্লবের শক্তি অনির্বাণ।
তবে আমরা মনে করি যে ড. ইউনূস বিপ্লবীদেরকে ৭ ফেব্রুয়ারি থেমে যাওয়ার যে আহ্বান জানিয়েছেন সেটি ছিল সময়োপযোগী এবং সঠিক। বিপ্লবী ছাত্র জনতাও ড. ইউনূসের কথা মেনে নিয়েছেন। তারা শান্ত হয়েছেন। ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারির ঘটনাবলীতে এক ব্যক্তিকেও হত্যা করা হয়নি। যেটি ছিল ফ্যাসিবাদ ও লুন্ঠনের সুতিকাগার। সে সুতিকাগারের শেষ চিহ্নও মুছে ফেলা হয়েছে। এক ব্যক্তিরও ক্ষতি করা হয়নি। অথচ বিপ্লবের স্ফুলিঙ্গ যদি দাবানলে পরিণত হয় তাহলে অসংখ্য মানুষ তার শিকার হয়। ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারি ছাত্র-জনতা এ বিষয়টিতে অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন।