DailySangram-Logo

কলাম

দিল্লিতে কেজরিওয়ালের দলের পরাজয় ও বিরোধী রাজনীতি

ভারতের রাজধানী দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে দশ বছর ধরে ক্ষমতাসীন আম আদমী পার্টির পরাজয় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

Printed Edition

আহমদ মতিউর রহমান

ভারতের রাজধানী দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে দশ বছর ধরে ক্ষমতাসীন আম আদমী পার্টির পরাজয় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। কেন দলটির পরাজয়, কেন কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন কট্টর হিন্দত্ববাদী দল বিজেপি বিজয় অর্জন করলো সে বিশ্লেষণ এখন চলছে। বিভিন্ন বার্তা মাধ্যমও একই কথা বলছে। তারা বলছে, ফল ঘোষণার পর বেশ কিছুটা সময় কেটে গেছে। কিন্তু ভারতের রাজধানীর রাজনীতিতে উত্তেজনার পারদ এখনও কমেনি।

কারণগুলো বিশ্লেষণের আগে কিছু সাধারণ তথ্য দিয়ে নিই। ১৯৫২ সাল থেকে দিল্লি জাতীয় রাজধানী অঞ্চলে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলের চৌধুরী ব্রহ্ম প্রকাশ থেকে শুরু করে ৭ জন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৫৬ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ৩৭ বছরের জন্য দিল্লির জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীর পদ বিলুপ্ত করা হয়েছিল। আবার দিল্লি বিধানসভা চালু হলে ভারতীয় জনতা পার্টি ১৯৯৩ সালের প্রথম নির্বাচনে জয় লাভ করে। দিল্লি বিধান সভার আসন সংখ্যা ৭০। ভোটে জিতে ৫ বছরের মেয়াদে দলের তিনজন নেতা সংশ্লিষ্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরের ১৫ বছর কংগ্রেসের হাতে ছিল শাসনক্ষমতা। পর পর তিনটি নির্বাচনে জয়ী হয়ে রাজধানীর একচ্ছত্র শাসক ছিল কংগ্রেস (আই)। কংগ্রেস দলের শীলা দীক্ষিত এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ২০১৩ সালে নতুন দল গঠন করে অরবিন্দ কেজরিওয়াল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন। তার বিজয় ছিল সে সময়ে চমকে দেয়ার মতো ঘটনা। তার ক্ষমতায় থাকা নিয়ে নাটকও কম হয়নি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে সারা ভারত শাসনকারী দুটি প্রধান দলের বিরুদ্ধে গিয়ে বিজয় অর্জন ছিল ভারতের রাজনীতিতে যুগান্তকারী ঘটনা। কিন্তু রাজনীতির পথ বড়ই বন্ধুর, একথার প্রমাণ মিললো এবারের নির্বাচনে কেজরির আম আদমি পার্টির পরাজয়ের মধ্য দিয়ে।

বিবিসি জানাচ্ছে, ভোটের ফল বলছে, দুর্নীতির ছোঁয়ামুক্ত রাজনীতি, নেতাদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি এবং দিল্লির উন্নয়ন, মূলত এ তিন ‘প্রতিশ্রুতি’ দিয়ে রাজনীতির ময়দানে প্রবেশ করা অরবিন্দ কেজরিওয়াল আম আদমি পার্টি (আপ) ভোটে পরাজিত হয়েছে। প্রায় ২৭ বছর পর বিধানসভা ভোটে জিতে দিল্লির ক্ষমতা আবার দখল করেছে গেরুয়া শিবির। প্রায় ১২ বছর আগে ‘অল্টারনেটিভ পলিটিক্স’-এর আমেজে ভারতের রাজনীতির ময়দানে নামা আপের ‘ন্যারেটিভ’ মন জিতেছিল দিল্লির শিক্ষিত সমাজের। আর আম জনতার মন কেড়েছিল দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি। বিদ্যুৎ ও পানি সংক্রান্ত বিভিন্ন নাগরিক সুযোগ-সুবিধার প্রতিশ্রুতিও ভোটারদের আগ্রহ তৈরি করেছিল। এর ফলস্বরূপ, পরের বিধানসভা ভোটগুলোয় নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে পেরেছিল আম আদমি পার্টি।

রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই বলা হয়ে থাকে। তারই ফল দেখা গেছে আম আদমি দলের ক্ষেত্রে। দলের পুরানো নেতাদের দলত্যাগ বা তাদের অন্য দলে যোগদান দেখা গেছে। দলটি আলাদা বক্তব্য নিয়ে হাজির হলেও দীর্ঘদিন সে ধারা বজায় থাকেনি। তবে নেতাদের দলত্যাগ সত্ত্বেও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দলের প্রতি ‘আস্থা’ রাখতে দেখা গিয়েছিল দিল্লিবাসীকে। এমনকি নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ বা মধ্যবিত্তসহ টার্গেট ভোটারদের মন জিততে কংগ্রেস ও বিজেপির পাল্টা প্রতিশ্রুতিও এই সমীকরণটা বদলাতে পারেনি বলে কোন কোন বিশ্লেষক বলছেন।

২০২৫-এর বিধানসভা ভোটে কেন আপের এ হার? দলের ‘অস্তিত্বের’ ওপর এ হার প্রভাব ফেলবে কি না তা নিয়েও বিশ্লেষণ চলছে। ২০২০ সালের বিধানসভা ভোটে আটটা আসন জিতেছিল বিজেপি। আর সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ আরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল সে বছর জিতেছিল ৬২টা আসন। কিন্তু ৫ বছরে পাশার দান উল্টে গেল। দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মি. কেজরিওয়াল এবং সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া দু’জনেই সাম্প্রতিক ভোটে হেরেছেন। আপের দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে আবগারি দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল এবং তাদের কারাগারেও কাটাতে হয়েছে। দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব সামলানো আতিশী অবশ্য নিজের আসনে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু সামগ্রিকভাবে ভোটের অঙ্কটাই বদলে গিয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে ৩৪-৩৮ শতাংশ ভোট শেয়ার বজায় রাখলেও বিজেপির ভোট শেয়ার বেড়ে ৪৫.৬ শতাংশ হয়েছে। আম আদমি পার্টির ভোট শেয়ার ১০ শতাংশ পয়েন্ট কমে ৫৩.৬ শতাংশ থেকে ৪৩.৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। কংগ্রেসে তাদের ভোট শেয়ার ২০২০ সালে ৪.৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬.৩ শতাংশ করতে পারলেও আখেরে লাভ হয়নি। কোন আসন পায়নি। অথচ ১৯৯৮ থেকে ১৫ বছর দিল্লি শাসন করেছে কংগ্রেস।

দলের পরাজয়ের একটা কারণ হাজির করেছেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী আতিশী। পরাজয় স্বীকার করেও পাল্টা অভিযোগ খাড়া করেছেন আতিশী। তিনি বলেছেন, এ মুহূর্তে বিশ্লেষণ চলছে কেন আপ হারলো। কিন্তু এটাই দিল্লির মানুষের আদেশ। আমরা তাকে সম্মান করি। তার মতে, এত গুণ্ডামির মধ্য দিয়ে এই নির্বাচন হয়েছে, দিল্লির ইতিহাসে এমন নির্বাচন কখনও হয়নি। প্রকাশ্যে টাকা ও মদ বিলি করা হয়েছে। পরাজয়ের পর তিনি এ কথা বলতেই পারেন। তাতে ফল পাল্টাবে না। কিন্তু ভারতের শাসক দল বিজেপি যে পরমতের উপর শ্রদ্ধাশীল নয়, জোরজবরদস্তি করে থাকে এ কথা তো অসত্য নয়।

আপের পরাজয়ের জন্য দায়ী যে কারণগুলো তার মধ্যে দেখা যাচ্ছে, আগের বিধানসভা নির্বাচনে দিল্লির বস্তি অঞ্চল থেকে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিল আপ। কিন্তু এবার সে চিত্র পাল্টে গেছে। মধ্যবিত্তদের ভোটও ধরে রাখতে পারেনি দলটি। বিশেষজ্ঞদের মতে, যে ‘স্বচ্ছ রাজনৈতিক ভাবমূর্তি’কে সামনে রেখে রাজনীতির ময়দানে নেমেছিল আম আদমি পার্টি, সেখান থেকে তারা অনেকটাই সরে গিয়েছিল, মানুষের কাছে সেটা মনে হয়েছে।

দিল্লির দূষণ কমানো, রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন, যমুনার পানি পরিশোধনের মতো একাধিক বিষয়েও তারা নজর দেয়নি। এর প্রভাব ভোটে পড়েছে। আর দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রীসহ আপের শীর্ষনেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ দলের ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করেছে। আম আদমি পার্টির সরকারের বিরুদ্ধে দিল্লির আবগারি নীতিতে বদল এনে কিছু লোককে ‘অনৈতিক’ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। লাইসেন্স ফি কমানো এবং উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই লাইসেন্সের মেয়াদ বাড়ানোর অভিযোগও ওঠে। মি. সিসোদিয়া এবং মি. কেজরিওয়ালকে এসব অভিযোগে গ্রেফতারও করা হয়। তৃতীয়ত, দিল্লির বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় মানুষদের চিকিৎসার জন্য তৈরি মহল্লা ক্লিনিককে কেন্দ্র করেও আম আদমি পার্টির বিরুদ্ধে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। চতুর্থত, কেজরিওয়ালের বিলাসবহুল বাসভবনকে ঘিরেও বিরোধীরা নানা আক্রমণ করেছে। তাতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক শিখা মুখার্জী বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছিলেন তিনি ও তার দল সম্পূর্ণ স্বচ্ছ এবং দুর্নীতিহীন একটা সরকার চালাবেন। কিন্তু তার ও মণীশ সিসোদিয়ার বিরুদ্ধে আবগারি দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে দেখা গেছে। বিজেপি তাদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে।” তবে আপ নেতাদের জামিন দেয়ার সময় আদালত জানিয়েছিল, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো অকাট্য প্রমাণ পেশ করতে পারেনি। তিনি আরো বলেন, সাধারণ মানুষের মনে হতে থাকে, আম আদমি পার্টিও কি অন্যান্য দলের মতোই যেখানে নানা কেলেঙ্কারি হয়, টাকা নয়-ছয় হয়? অথচ তারা শুরু থেকে অন্যরকম রাজনীতির কথা বলে এসেছিল। “আর ব্যক্তিগতভাবে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ভাবমূর্তির বিরুদ্ধে যা কাজ করেছে তা হলো তার বাসভবন সংস্কার। কারণ সাধারণ মানুষ ভাবতে থাকেন যে অরবিন্দ কেজরিওয়াল ক্ষমতায় আসার পর মধ্যবিত্তের জীবনযাত্রা ত্যাগ করেছেন এবং তিনি বিলাসবহুল জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। এতে তার ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।

নির্বাচনে কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়েও বিশ্লেষকরা মত দিয়েছেন। অনেকে মনে করেন, বিজেপি রোধে কংগ্রেসের হাত যদি আপের ঝাড়ু ধরতো তা হলে বিপর্যয় ঠেকানো যেত। ভোটের এ সমীকরণে ইন্ডিয়া জোটের শরিক কংগ্রেস কিছুটা হলেও আপের হয়ে ‘ব্যাটিং’ করতে পারত বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তারা বলেছেন, ভোটের ফলাফল থেকে এটা স্পষ্ট যে, কংগ্রেস এবং আপ একসঙ্গে লড়লে বিজেপিকে বেগ পেতে হতো। বরং কংগ্রেস আপের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছে। এখানে কংগ্রেস বিজেপির বি টিমের ভূমিকা পালন করেছে বলেও মনে করেন তারা। তারা বলেন, দলদুটো একে অপরের বিরুদ্ধে এই ভোটে লড়েছে। আপ জিততে পারত যদি কংগ্রেস তাদের সঙ্গে লড়ত। আসাদুদ্দিন ওয়াইসির দলের মতো একাধিক দলের পৃথক উপস্থিতির ফলে আপের ভোট কমেছে বলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। এ দলগুলোর ভোট ভাগ হয়ে যাওয়ায় বিজেপির সুবিধা হয়েছে। বিজেপি ভোট পেয়েছে প্রায় ৪৫.৮% জিতেছে ৪৮ আসনে। আম আদমি পার্টি পেয়েছে ৪৩.৫০% জয় ২২টি আসনে। দু দলের তফাৎ মাত্র ২.৩০%। কংগ্রেস ভোট পেয়েছে ৬.৩৬%। কোন আসন পায়নি। কংগ্রেস আপকে সমর্থন দিলে বিজেপি বিরোধী শক্তির ভোট হত ৫০%; যা বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখার জন্য যথেষ্ট হত। প্রশ্ন উঠেছে, এ পরাজয়ের প্রভাব আপের উপর কতটা পড়বে। বিশেষজ্ঞদের মতে বিজেপি এবং কংগ্রেসের তুলনায় আম আদমি পার্টি একেবারে নতুন। এর ভিত তেমন পোক্ত হয়ে ওঠেনি, তাই হারের পর আপের সামনে একাধিক ‘চ্যালেঞ্জ’ রয়েছে। কোন কোন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন, জনগণ এবার আম আদমি পার্টির বিনামূল্যের স্কিমগুলিতে বিশ্বাস করেনি। বিশেষ করে শিস মহল বলে কথিত নেতাদের বাসভবনে ব্যয় হয়েছে বিপুল অর্থ। এটা ভোটাররা ভালভাবে নেননি। হিন্দুস্তান টাইমস বলেছে, আপের ক্ষেত্রে ব্যাকফায়ার করেছে নিজেদেরই অস্ত্র। অর্থাৎ তারা দুর্নীতর বিরুদ্ধে কথা বলে ক্ষমতায় এলেও নিজেরাই তাতে লিপ্ত হয়েছে।

আম আদমির পরাজয় হলেও ভোটের হিসাব বলছে ব্যবধান খুবই কম, ২.৩ শতাংশ। দলের নেতা কেজরিওয়াল পরাজয় মেনে নিয়ে বিরোধী আসনে বসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দলের ভুলগুলো খতিয়ে দেখাই এখন তার প্রধান কাজ হওয়া উচিত। বিরোধী শিবির ঐক্যবদ্ধ না থাকলে গেরুয়া শিবির জয় ছিনিয়ে নেবে এটা ভেবে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা রচনায় দলগুলোকে মনোনিবেশ করতে হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

ভোটের ফল প্রকাশের পর মি. কেজরিওয়াল বলেছেন, “আমরা জনগণের রায় বিনয়ের সাথে গ্রহণ করি এবং আমি বিজেপিকে তাদের জয়ের জন্য অভিনন্দন জানাই। একইসঙ্গে তার দল ক্ষমতায় থাকাকালে দিল্লির যে উন্নয়ন হয়েছে তার খতিয়ান আরও একবার তুলে ধরতে ভোলেননি তিনি। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “আমরা দিল্লিবাসীর জন্য শিক্ষা, পানি, বিদ্যুৎ, অবকাঠামোতে অনেক কাজ করেছি।” “আগামী পাঁচ বছরে, আপ কেবল একটি গঠনমূলক বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে না, দিল্লির জনগণের জন্যও হাজির থাকবে। আগামী দিনগুলোতে স্পষ্ট হবে সেখানে কী ঘটছে।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক।