মতামত
জ্ঞানীদের জন্য অনেক নিদর্শন রয়েছে
কোন দেশ প্রকৃতিতে সুন্দর আবার কোন দেশ স্থাপনায় সুন্দর। আবার কোন দেশ প্রকৃতি ও স্থাপনায় দুটোয়ই সুন্দর। আশ্চর্যজনক ল্যান্ডস্কেপ এবং প্রাকৃতিক আশ্চর্যের সাথে পূর্ণ বিশ্বে, কিছু নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে তা তাদের নিছক সৌন্দর্য এবং মুগ্ধতার জন্য আলাদা।
Printed Edition
॥ এইচ এম আব্দুর রহিম ॥
পৃথিবীতে এমন অনেক জায়গা আছে যার সৌন্দর্য, মোহনীয় দৃশ্য অবাক করার মত। যে কোন মানুষ এ দৃশ্য দেখলে জ্ঞানের চোখ উন্মোচিত হয়ে যাবে। এমন জায়গা রয়েছে মনে হবে যেন এক টুকরো স্বর্গ। অবিশ্বাস্য সৌন্দর্যের আধার যে গুলোকে আল্লাহ তা’য়ালা ঢেলে সাজাতে কার্পণ্য করেননি। পৃথিবীর প্রত্যেকটি দেশের নিজস্ব কিছু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রয়েছে। এক একটি দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এক এক রকম। কোন দেশ প্রকৃতিতে সুন্দর আবার কোন দেশ স্থাপনায় সুন্দর। আবার কোন দেশ প্রকৃতি ও স্থাপনায় দুটোয়ই সুন্দর। আশ্চর্যজনক ল্যান্ডস্কেপ এবং প্রাকৃতিক আশ্চর্যের সাথে পূর্ণ বিশ্বে, কিছু নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে তা তাদের নিছক সৌন্দর্য এবং মুগ্ধতার জন্য আলাদা। নির্মল সমুদ্র সৈকত থেকে মহিমান্বিত পর্বত এবং প্রাণবন্ত শহর পর্যন্ত, পৃথিবীটির মনোরম গন্তব্যের আধিক্য দ্বারা সজ্জিত যা ভ্রমণকারীদের হৃদয় এবং হৃদয়-আত্মাকে মোহিত করে। ভ্রমণজ্ঞান মানুষের জ্ঞান ভান্ডার বিকশিত করে। পৃথিবীতে এমন কিছু পর্যটন কেন্দ্র আছে যা দর্শনে যার সৌন্দর্য, মোহনীয় দৃশ্য হৃদয় জুড়িয়ে যায়। সাধ্য থাকলে অন্যতম সুন্দর স্থানগুলো ঘুরে আসুন। মনের সব বিষাদ, দুশ্চিন্তা, খারাপ লাগা দূর করে ভুলিয়ে দেবে আপনার প্রতিদিনের জগৎ। আল্লাহ তা’আলা এই পৃথিবীকে সুন্দর করে সাজিয়েছেন। তার সৃষ্টির মধ্যে কোন বৈসাদৃশ্য দেখতে পারেন না। তুমি কোথাও গরমিল পাবে না। পৃথিবীতে এমন অনেক সৌন্দর্যের লীলাভূমি আছে যা এক নজরে দেখার জন্য সৌন্দর্য পিপাসুরা রীতিমত ব্যাকুল থাকেন। এমন কিছু জায়গার কথা নি¤েœ আলোচিত হলো।
সোকত্রা দ্বীপ : ইয়েমেনের সোকত্রা ভারত মহাসাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপ। এই দ্বীপের উদ্ভিদ প্রাণি জগৎ পর্যবেক্ষণ করে বলবে, এটি আসলে পৃথিবীর কোন অংশ নয়। অন্য কোন পৃথিবী থেকে খুলে পৃথিবীতে পড়া একটি ভূখন্ড। এর সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে অনেকে এ রকম দাবী করেছে যে এটা স্বর্গের খুলে পড়া ছোট্ট একটি অংশ। সোকত্রের জীববৈচিত্র্য খুবই বিচিত্র। সর্বত্র সুগন্ধে ভরা এই দ্বীপ যে কারো পক্ষেই ছুটি কাটানোর প্রিয় একটি স্থান হতে পারে। ধারণা করা হয়, প্রায় ৬০ লাখ বছর আগে এই এখানে প্রাণি প্রজাতির প্রায় নয়শ’ প্রজাতির বাস। তবে অবাক হওয়ার বিষয় হলো নয়শ’ প্রজাতির বেশীর ভাগ সোকত্রে ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোথাও দেখা যায় না। এখানে রয়েছে ‘ডেজার্ট রোজ’ বা মরুভূমির গোলাপ, যা যে কাউকে মুগ্ধ করে। এ ছাড়া আরো রয়েছে এলিফ্যান্টস লেগ বা হাতির পা। পৃথিবীতে যতবড় ফুলের বাগান রয়েছে তার প্রায় সবই নেদারল্যান্ডসে। তেমনি একটি কিউকেনহফ। এটি বিশ্বের বৃহত্তম ফুল বাগান। একে “কিচেন গার্ডেন” বা “গার্ডেন অফ ইউরোপ” বলা হয়। পঞ্চদশ শতাব্দিতে শুরু করা এই বাগানে বর্তমান জমির পরিমাণ প্রায় ৮০ একর। এই বাগান থেকে প্রতিবছর ৭০ লাখের বেশি টিউলিপ উৎপাদন করা হয়। সাধারণত মার্চ মাসে বাগানটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
ছোট বড় প্রায় আড়াই হাজার দ্বীপ নিয়ে গঠিত মালদ্বীপ। সবগুলো দ্বীপই অপার সৌন্দর্য বহন করে সমুদ্রের বুকে স্থান করে নিয়েছে। পর্যটকদের কাছেও মালদ্বীপ একটি অন্যরকম আকর্ষণ।
বলিভিয়ার সালারদে ইয়ুনি পৃথিবীর বৃহত্তম আয়না। বর্ষাকালে বলিভিয়ার বৃহত্তম এই লবণ ভূমি বিশাল এক প্রাকৃতিক আয়না তৈরি করে । লবণের এই আশ্চর্য মরুভূমিকে দেখার জন্য প্রতিবছর ছুটে আসে হাজার হাজার পর্যটক আর ফটোগ্রাফার।
সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৪ হাজার ফুট ওপরে অবস্থিত মরুভূমি আর পাহাড় বেষ্টিত এক প্রাকৃতিক নিসর্গের নাম প্যাংগং লেক। এটা ভারত ও চীনের সীমান্তবর্তী অঞ্চল লাদাখে অবস্থিত। এটি একেক ঋতুতে এক এক রূপ ধারণ করে। সুনীল এই লেকের অপার সৌন্দর্য অবলোকন করার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
রহস্যময় এই গিরিখাতের অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের এরিজনায়। লক্ষ লক্ষ বছর আগে জলপ্রবাহের ফলে সৃষ্ট এই গভীর ক্যানিয়ানের দেওয়ালে সূর্যরশ্মি আছড়ে পড়ে আশ্চর্য এক আলোকছায়ার সৃষ্টি করে। রঙিন এ খেলা দেখার জন্য পর্যটকরা ছুটে আসেন এখানে।
ঝাংজিয়াজি ন্যাশনাল পার্কটি চীনের হুনান প্রদেশের তিয়ানমেন পর্বতে অবস্থিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার এই পার্কটি দিন দিন পর্যটকদের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে। পার্কটি ১৪১০ ফুট উঁচুতে নির্মাণ করা হয়েছে। অসম্ভব সুন্দর এক কাচের সেতু।
উইস্টেরিয়া এক ধরনের ফুলের নাম। এই ফুলের গাছ দিয়ে তৈরি উইস্টেরিয়া টানেল। জাপানের কাওয়াচি ফুজি গার্ডেনে ব্যক্তি মালিকানাধীন তৈরি করা হয়েছে এই টানেল। এপ্রিল মে মাসে যখন উইসেইরয়া ফুলের মৌসুম তখন এই টানেল সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
নর্দান লাইটস হলো আরোরা। অর্থাৎ আকাশে প্রাকৃতিকভাবে রঙের ছড়াছড়ি। এই আরোরা বেশ কয়েকটি দেশ থেকে দেখা যায়। অপার্থিব সৌন্দর্য দেখার জন্য মানুষেরা এখানে ভীড় জমায়।
হা লংবে ভিয়েতনামের কুয়ানিং প্রদেশে অবস্থিত এ একটি প্রাকৃতিক নি:সর্গ। ১৯৯৪ সালে ইউনেস্কো একওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
হা লংবেতে আছে সুনীল পানি আর ছোট বড় প্রায় ২ হাজার চুনা পাথরের দ্বীপ। এতে কয়েকটি ভাসমান গ্রাম ও কৃত্রিম গুহা আছে।
লেখক : সাংবাদিক।