কবিতা
ছ ড়া ক বি তা
কবিতা
পটে আঁকা ছবির মত যেদিক পানে চাও- সবুজ-শ্যামল শোভা ঘেরা এই আমাদের গাঁও!
Printed Edition
এই আমাদের গাঁও
শ.ম. শহীদ
পটে আঁকা ছবির মত
যেদিক পানে চাও-
সবুজ-শ্যামল শোভা ঘেরা
এই আমাদের গাঁও!
মাঠে মাঠে সোনার ফসল
পুকুর ভরা টলটলে জল
পাবে অঢেল আদর স্নেহ
যার উঠানে যাও!
ঠোঁটে লয়ে মধুর হাসি-
জমিতে চাষ করে চাষি
মাটি দেখে নেয় বুঝে সে
ফসল বোনার ভাও!
গাঁয়ের পাশে একটা নদী
চলছে বয়ে নিরবধি-
তার বুকে যে কত মাঝি
বাইছে পালের নাও!
সারাটা দিন পাখির গানে
ছন্দ খুঁজে পাবে প্রাণে
ফুলে ফুলে ভ্রমর খেলে-
দেখতে পাবে তাও!!
মাঘের শীতে
মান্নান নূর
মাঘের শীতে কাঁপছে বাঘ
কাঁপছে ছাগী কাঁপছে ছাগ
কাঁপছে সাথে টুনটুনি।
কাঁপছে হুলো কাঁপছে গাছ
ঝরছে পাতা কাঁপছে মাছ
থামছে খোকার ঝুনঝুনি।
কাঁপছে বুড়ি কাঁপছে মাঠ
শূন্য একা খেয়া ঘাট
হুক্কাহুয়া কাঁপছে দেখ।
কাঁপছে টোকাই কাঁপছে হাত
কাঁপছে দুখাই রাতকে রাত
কাঁপছে বসে দীন মালেক।
মাঘের শীতে কাঁপে না
অট্টালিকার সুর-বীণা
তাদের তো সুখ সব কেনা।
ইচ্ছে করে
হোসাইন মোস্তফা
ইচ্ছে করে যাইরে ছুটে
সবুজ শ্যামল গাঁয়ে
দুর্বাঘাসের কোমল পরশ
লাগবে কখন পায়ে।
মেঠোপথে হাঁটবো আমি
পুকুর জলে ডুব
সুঠাম দেহের কৃষক হতে
ইচ্ছে করে খুব।
অবারিত সবুজ মাঠে
টঙে কাটাই রাত
বেগুন ভর্তা, শুটকি মেখে
খাবো আমি ভাত।
ইচ্ছে করে ক্ষেতের আলে
বসি বটের ছায়ায়,
সহজ জীবন দেই কাটিয়ে
ফুল পাখিদের মায়ায়।
ভাষা
তোরাব আল হাবীব
বললো সেদিন অমল
ভাষা হবে মিষ্টি মধুর, মার্জিত আর কোমল
মুখের ভাষা এমন হওয়া চাই
যেই ভাষাতে কাঠিন্য আর নিষ্ঠুরতা নাই
ভাষা হবে সহজ সরল
ভাষা হবে নরম
মুখের ভাষা নেয় না যেন কেড়ে চোখের শরম।
পাখির ভাষা কিচিরমিচির
চাঁদের ভাষা আলো
নদীর ভাষা জল কলকল, কয়লা আঁধার কালো
বনের ভাষা হরিৎ বরণ
ঝিঁঝির ভাষা গান
মাঠের ভাষা হেসে ওঠা হলদে পাকা ধান।
মেঘের ভাষা জমাটবাঁধা
বৃষ্টি টাপুরটুপুর
কিশোরবেলা দুরন্তকাল লম্ফ ঝাপুরঝুপুর
হাঁসের ভাষা প্যাঁক্ প্যাঁক্ প্যাঁক্
কাকের ভাষা কা কা
নাচের ভাষা ফড়িং নাচন দুষ্টু ঝাঁকানাকা।
মোরগ ডাকে কুক্ কুরু কু
কী মায়াবী ভাষা
কৃষির ভাষা ধান কাউন আর লাঙল-জোয়াল খাসা।
রোদের ভাষা ঝলমলানো
ফুলের ভাষা শোভা
গানের ভাষা সুর মনোহর, কণ্ঠ মনোলোভা
চিঠির ভাষা হৃদয়ভেদী
বাছাই শব্দ চয়ন
সকল ভাষার উৎস সে তো জাগ্রত দু'নয়ন।
আওয়াজ উডা
মুরাদ-আল-হাসান চৌধুরী
আওয়াজ উডা, কথা ক’,
আগবাড়িয়ে চলতে হ।
মন বাড়ে না ভীতুর দল,
প্রাণে প্রাণে মন বদল।
আয়রে তোরা জেগে ওঠ,
চোখ রাঙিয়ে সামনে ছোট্ ,
পেছন ফিরে চাবি-নে,
খালি হাতে যাবি-নে।
বিজয় তোদের সুনিশ্চিত,
হাসি মুখে গাইবি গীত॥
পুঁটির লড়াই
জাহাঙ্গীর চৌধুরী
দু-পুটিতে লড়াই লেগে
দৌড়ে ঘাটে ঘাটে
শোলেরা সব ঘাপটি মেরে
পিছে পিছে হাঁটে।
বোয়াল মাছে দেখে বলে
দাঁড়াও ওরে বাছা
গালটা আমার মস্ত বড়ো
দেখতে একটা খাঁচা।
লড়াই তোদের বন্ধ করবো
গিলে খেয়ে আমি
এ তল্লাটে কে-বা আছে
আমার চেয়ে দামি।
যেমন কথা তেমন কর্ম
পুঁটি খেলো গিলে
বোয়ালমাছকে তুলে নিলো
খামচি দিয়ে চিলে।।
বই
আহমাদ মুস্তাকীম
বইকে তোমার বন্ধু বানাও
বানাও আপনজন
বইয়ের সাথে গল্প করো
থাকবে ভালো মন।
বই দেখাবে আলোর দিশা
সত্য পথের দেখা
বিপদআপদ মসিবতে
আর হবে না একা।
গল্প ছড়া ইতিহাসে
জানবে কত কিছু
বুঝবে তখন বই ছাড়া এই
জীবন যেনো মিছু।
ভালো বইয়ে আলো পাবে
আর যদি হয় মন্দ
আলোকছটা দূরের কথা
আসবে শুধু গন্ধ।
এই কথাটি মনে রেখো
যেয়ো নাকো ভুলে
জীবন কানন সাজবে তখন
সুগন্ধিময় ফুলে।