DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

বই

সন্তোষজনক জবাব দিতে পারছে না কেউ

একুশে বইমেলার কো-স্পন্সরের বাড়তি টাকা কার পকেটে?

মাসব্যাপী মহান একুশের বইমেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানী ‘ড্রিমার ডংকি প্রাইভেট লিমিটেড, হাউস নম্বর- ৩০৯. রোড নম্বর-২১ডিওএইচএস’র সঙ্গে চুক্তি করে বাংলা একাডেমি। বাংলা একাডেমির পক্ষে চুক্তিপত্রে সাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির সচিব।

স্টাফ রিপোর্টার
Printed Edition

ইবরাহীম খলিল : মাসব্যাপী অমর একুশের বই মেলায় চুক্তির বাইরে আরও বাড়তি কো-স্পন্সর নিয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আদায় করা টাকা নির্দিষ্ট কিছু মানুষের মধ্যে ভাগাভাগির হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা কর্মচারিদের মধ্যে তুমুল আলোচনা চলছে। তবে বিষয়টি নিয়ে বাংলা একাডেমির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং স্পন্সর কোম্পানী ‘ড্রিমার ডংকি প্রাইভেট লিমিটেড’র পক্ষ থেকে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

মাসব্যাপী মহান একুশের বইমেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানী ‘ড্রিমার ডংকি প্রাইভেট লিমিটেড, হাউস নম্বর- ৩০৯. রোড নম্বর-২১ডিওএইচএস’র সঙ্গে চুক্তি করে বাংলা একাডেমি। বাংলা একাডেমির পক্ষে চুক্তিপত্রে সাক্ষর করেন প্রতিষ্ঠানটির সচিব। চুক্তির দুই নম্বর শর্তে উল্লেখ আছে, দ্বিতীয় পক্ষ অর্থাৎ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি একাডেমি কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে, মূল স্পন্সর ১টি এবং ৩টি প্রতিষ্ঠানকে কো-স্পন্সর বা সহযোগী হিসেবে গ্রহণ করতে পারবে। কিন্তু সরেজমিনে বাংলা একাডেমির বইমেলা প্রাঙ্গণে চুক্তির বাইরে একাধিক কো-স্পন্সরের দেখা মিলেছে। চুক্তি অনুযায়ী তিনটি প্রতিষ্ঠান কো-স্পন্সর পাওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে অন্তত ৯টি প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে অমর একুশের বইমেলাতে। এগুলোর মধ্যে তিনটি বাদ দিলে আরও ৬টি কোম্পানীকে চুক্তির শর্ত ভেঙে অতিরিক্ত লাভের জন্য নেওয়া হয়েছে। কো-স্পন্সর কোম্পানিগুলো হলো ডাচ বাংলা ব্যাংকের দুটি ব্যাংকিং সেবা রকেট ও নেক্স-পে, আমা কফি জুস, আকিজ গ্রুপের বিভিন্ন সেবা, গুড লাকের বিভিন্ন প্রোডাক্ট, প্রাণ গ্রুপ, পোলার আইসক্রিমের ৯/১০টি প্রতিষ্ঠানের অনেকগুলো বুথ, স্যাভলন ও সেভয় আইনক্রিম।

অভিযোগ রয়েছে বাড়তি কো-স্পন্সরের কাছ থেকে বিপুল অংকের টাকা আদায় করে সুনির্দিষ্ট কিছু কর্মকর্তা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।

কো-স্পন্সরের বিষয়ে চুক্তির শর্তে আরও বলা হয় বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান/ প্রতিষ্ঠানসমূহ কেবল স্পন্সর হতে পারবে। উল্লেখ্য প্রথম পক্ষ ও দ্বিতীয় পক্ষ সমঝোতার ভিত্তিতে প্রয়োজনে অতিরিক্ত স্পন্সর গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে বাংলা একাডেমির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। এদিকে ৪ নম্বর শর্তে বলা হয়েছে, একাডেমি কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে স্পন্সরকারীর বা ব্যবস্থাপনা সহযোগীর নাম ও সহযোগীর লোগো ব্যবহার করা যাবে। কোন অবস্থাতেই অননুমোদিত প্রতিষ্ঠানের নাম ও লোগো ব্যবহার করা যাবে না। অন্য কোন প্রতিষ্ঠান বা কোন পণ্য কিংবা সেবার অনুকূলে প্রচারণার ব্যবস্থার উদ্যোগ নিলে উভয়পক্ষ আলোচনাক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবে।

কিন্ত এসব চুক্তির কিছুই মানছে না কো-স্পন্সর কোম্পানিগুলো। জানতে চাইলে বাংলা একাডেমির পরিচালক ও মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব সরকার আমীন দৈনিক সংগ্রামকে বলেন, বিষয়টি তার চোখে পড়েনি। কো স্পন্সর প্রদানের ক্ষেত্রে চুক্তি অমান্য করা হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখতে হবে। এছাড়া চুক্তির কাগজ তার হাতে নেই বিষয়টি নিয়ে পরিচালক সমির কুমার সরকারের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। তবে সমির কুমার সরকারকে একাধিকবার চেষ্টা করেও ফোনে পাওয়া যায়নি।