মধ্যপ্রাচ্য
যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনকে ছাড়াই সৌদীতে আলোচনায় বসলো যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া
এখন পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের আলোচনা এটি। গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে তারা প্রায় তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধের সমাপ্তি ও মার্কিন-রুশ সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা এ খবর জানিয়েছে।
Printed Edition
১৮ ফেব্রুয়ারি, বিবিসি, রয়টার্স : ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আলোচনায় বসেছেন মার্কিন ও রুশ কর্মকর্তারা। এখন পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ের আলোচনা এটি। গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে তারা প্রায় তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধের সমাপ্তি ও মার্কিন-রুশ সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা এ খবর জানিয়েছে।
রাশিয়ার পক্ষে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন পুতিনের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ ও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। আর মার্কিন প্রতিনিধিদলে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ এবং ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ। ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে গত বুধবার ফোনালাপের পর এই আলোচনা শুরু হয়েছে। এই আলোচনা ভবিষ্যতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের মধ্যে শীর্ষ সম্মেলনের পথ প্রশস্ত করতে পারে। তবে ইউক্রেনকে এই আলোচনা থেকে বাদ রাখা হয়েছে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ইউক্রেনকে বাদ দিয়ে কোনও শান্তিচুক্তি হবে না। তিনি আরও বলেন, আমরা একটি সার্বভৌম দেশ হিসেবে আমাদের মতামত ছাড়া কোনও চুক্তি মেনে নেব না। ইউরোপীয় দেশগুলোও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, কারণ ইউক্রেন ও ইউরোপকে উপেক্ষা করে ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা ইস্যুতে আলোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। তারা এই আলোচনায় ভূমিকা রাখতে চায়। সোমবার প্যারিসে ইউরোপীয় নেতারা একটি জরুরি বৈঠক করেন, যেখানে ইউক্রেনের জন্য প্রতিরক্ষা বিনিয়োগ বাড়ানোর এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে নেতৃত্ব দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ইউরোপীয় নেতারা।
ইউরোপীয় দেশগুলোও এখন বুঝতে পারছে যে, তারা ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও বেশি কিছু করতে হবে। ইউরোপীয় এক কর্মকর্তা বলেন, আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘শক্তির মাধ্যমে শান্তি’ নীতির সঙ্গে একমত । রাশিয়া বলেছে, এই আলোচনার লক্ষ্য শুধু যুদ্ধের অবসান ঘটানো নয়, যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করাও। ক্রেমলিনের মতে, বাইডেন প্রশাসনের সময় এই সম্পর্ক ছিল ‘শূন্যের নিচে’।বাইডেন প্রশাসন রাশিয়ার সঙ্গে জনসমক্ষে সংলাপে যেতে চায়নি। কারণ তাদের মত ছিল, মস্কো যুদ্ধ বন্ধে আগ্রহী নয়। তবে ট্রাম্প প্রশাসন নতুন কৌশলে এগোচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, এটি প্রাথমিক আলোচনা মাত্র। দেখতে হবে যে, মস্কো সত্যিই যুদ্ধ বন্ধ করতে চায় কিনা এবং উভয় পক্ষের স্বার্থ কী।
রিয়াদ বৈঠক দেখিয়ে দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যকার সম্পর্কের নতুন দিকনির্দেশনা কী হতে পারে এবং ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য কূটনৈতিক পথ খোলার সম্ভাবনা কতটুকু। তবে ইউক্রেনের সম্মতি ছাড়া কোনও শান্তিচুক্তি কার্যকর হবে কিনা, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।