ইউরোপ
ইসরাইল প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে --- এরদোগান
ইসরাইল ‘সবসময়ের মতো’ গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান । এছাড়া ফিলিস্তিনী ভূখণ্ডে দখলদারিত্ব বন্ধ ও গাজায় সংঘটিত ধ্বংসযজ্ঞের ক্ষতিপূরণের জন্য ইসরাইলের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।
Printed Edition
![ear](https://static.dailysangram.com/images/ear.original.png)
ইসরাইল ‘সবসময়ের মতো’ গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান । এছাড়া ফিলিস্তিনী ভূখণ্ডে দখলদারিত্ব বন্ধ ও গাজায় সংঘটিত ধ্বংসযজ্ঞের ক্ষতিপূরণের জন্য ইসরাইলের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি। ডেইলি সাবাহ, এপি।
পুত্রজায়াতে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রজব তৈয়ব এরদোগান বলেন, ইসরাইল ‘সবসময়ের মতো’ গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।’ পাশাপাশি তিনি ফিলিস্তনী ভূখ-ে দখলদারিত্ব বন্ধ ও গাজায় সংঘটিত ধ্বংসযজ্ঞের ক্ষতিপূরণের জন্য ইসরাইলের প্রতি আহ্বানও জানান। গাজায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দীবিনিময় চুক্তি নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। ফিলিস্তনী স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে জানিয়েছে, আগামী শনিবার পণবন্দী মুক্তি স্থগিত করেছে কারণ ইসরাইল গাজায় হামলা চালিয়ে চুক্তি ভঙ্গ করেছে।
ফিলিস্তনী কর্মকর্তা চুক্তিটি ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে সতর্ক করে ইসরাইলের তিনটি প্রধান লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে গাজায় ফিলিস্তনীদের লক্ষ্য করে ইসরাইলের গুলীবর্ষণ; যার ফলে গত ১ জানুয়ারি থেকে কমপক্ষে ২৫ জন নিহত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় লঙ্ঘন হল- ইসরাইলের মানবিক সাহায়তার ওপর অব্যাহত অবরোধ। তৃতীয়ত, (ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা উপত্যকার সম্পূর্ণ জাতিগত নির্মূলে তাদের অভিপ্রায় সম্পর্কে বারবার বিবৃতি দিয়ে ফিলিস্তনীদের উত্তেজিত করেছেন।’ গাজা যুদ্ধের শুরু থেকেই ইসরাইলের নৃশংস হামলার তীব্র সমালোচনা করেছে তুরস্ক। ইসরাইলকে সমর্থন করায় অনেক পশ্চিমা মিত্রদের তিরস্কারও করেছে দেশটি। গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে ২০২৪ সালের মে মাসে ইসরাইলের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত করে এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরাইলের গণহত্যার বিচারের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্যোগে যোগদানের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করে। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, ‘গাজা ইস্যুতে তুরস্ক নেতৃত্ব দেখিয়েছে। মানবিক সহায়তায় তুরস্কের মতো অন্য কোনও দেশ এতটা কাজ করেনি।’
বাড়ছে ফিলিস্তনীদের লাশের মিছিল
অধিকৃত পশ্চিম তীরে সেনাদের গুলী চালানোর নির্দেশ বাড়িয়েছে ইসরাইলী সেনাবাহিনী। যার ফলে অঞ্চলটিতে সামরিক অভিযানে নিরস্ত্র ফিলিস্তনীদের মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসরাইলী সংবাদপত্র হারেৎজ বলছে, সেনাবাহিনীর কেন্দ্রীয় কমান্ড গাজা যুদ্ধে ব্যবহৃত গুলী চালানোর নীতি পশ্চিম তীরে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার কারণে সন্দেহভাজন হোক বা না হোক যেকোনও নিরস্ত্র ফিলিস্তনীকেই হত্যা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় কমান্ড কমান্ডার আভি ব্লটের এই নির্দেশ সেনাদের গুলী করা আরও সহজ করা তুলেছে।
পশ্চিম তীরে চলমান সামরিক অভিযানে অংশগ্রহণকারী ইসরাইলী সেনাদের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদপত্রটি বলেছে, আভি ব্লট ফিলিস্তনীদের গ্রেফতার না করে হত্যা করার উদ্দেশে গুলী করার অনুমতি দিয়েছেন। সেনারা ব্যাখ্যা করেছে, পশ্চিম তীরে নিরস্ত্র ফিলিস্তনীদের সাম্প্রতিক মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া ‘অস্বাভাবিক’। কারণ তারা ব্লটের নির্দেশে বিস্ফোরক স্থাপন বা ‘ভূমিতে বিশৃঙ্খলা’ করার সন্দেহে যে কোনও ফিলিস্তনীকে গুলী করে হত্যা করতে পারে।
হারেৎজ সেনাবাহিনীর ইউনিট কমান্ডারদের উদ্ধৃত করে বলেছে, সেনাবাহিনীর পশ্চিম তীর বিভাগের প্রধান ইয়াকি ডলফ, সৈন্যদের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আসা এবং চেকপয়েন্টের দিকে অগ্রসর হওয়া যেকোনোও যানবাহনে গুলী চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। পশ্চিম তীরে একটি সামরিক চেকপয়েন্টের দিকে এগিয়ে আসা একটি গাড়িতে ইসরাইলী সেনার গুলীতে দুই ফিলিস্তনী নিহত হন। তবে ইসরাইলী সেনাবাহিনী পশ্চিম তীরে গুলী চালানোর আদেশের কোনো পরিবর্তনের বিষয়টি অস্বীকার করেছে। হারেৎজকে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পশ্চিম তীরের জন্য ‘যুদ্ধের নিয়মে কোনো পরিবর্তন হয়নি’।
পশ্চিম তীরে ইসরাইলী অভিযানে বাস্তুচ্যুত ৭৬ হাজার ফিলিস্তনী
ফিলিস্তনী শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ ও কর্মসংস্থানে কাজ করা জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ সতর্ক করেছে যে, পশ্চিম তীরে ইসরাইলের সামরিক অভিযান ফিলিস্তনীদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতিকে উদ্বেগজনক পর্যায়ে বাড়িয়েছে। যার ফলে ওই এলাকার ৭৬ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত সোমবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, ইসরাইলের তথাকথিত ‘লোহার প্রাচীর’ সামরিক অভিযানের ফলে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শরণার্থী শিবির প্রায় সম্পূর্ণরূপে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।