আন্তর্জাতিক
ইস্পাত–অ্যালুমিনিয়ামে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ ট্রাম্পের
ট্রাম্প আগামী মঙ্গলবার বা বুধবার শুল্কের ঘোষণা দেবেন, যা প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই কার্যকর হবে। এই শুল্ক সব দেশের ওপর প্রযোজ্য হবে। প্রতিটি দেশের ধার্য করা শুল্কের হার অনুযায়ী সমান হারে নির্ধারিত হবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্ক আরোপের হুমকিগুলো বেশ দ্রুত গতিতেই বাস্তবায়ন করছেন। তিনি জানালেন, যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হওয়া সব ধরনের স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছেন তিনি।
স্কাই নিউজের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, বাণিজ্য নীতিতে আরও একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আজ সোমবার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন তিনি।
গতকাল রোববার ফ্লোরিডা থেকে নিউ অরলিন্সে সুপার বোলের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি বলেন, নতুন শুল্ক বর্তমান ধাতব শুল্কের ওপর অতিরিক্তভাবে আরোপিত হবে। যে কোনো স্টিল যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হলে সেটির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসবে।
অ্যালুমিনিয়ামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অ্যালুমিনিয়ামের ক্ষেত্রেও একই শুল্ক প্রযোজ্য হবে।’
ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি আগামী মঙ্গলবার বা বুধবার শুল্কের ঘোষণা দেবেন, যা প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই কার্যকর হবে। এই শুল্ক সব দেশের ওপর প্রযোজ্য হবে। প্রতিটি দেশের ধার্য করা শুল্কের হার অনুযায়ী সমান হারে নির্ধারিত হবে।
এদিকে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব ইতিমধ্যে বৈশ্বিক স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম শিল্পে পড়েছে। জাপানি স্টিল নির্মাতাদের শেয়ারের দাম প্রায় ১ শতাংশ কমে গেছে।
মার্কিন আয়রন অ্যান্ড স্টিল ইনস্টিটিউটের তথ্য থেকে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে স্টিল আমদানির সবচেয়ে বড় উৎস হলো কানাডা, ব্রাজিল ও মেক্সিকো, এরপর রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া ও ভিয়েতনাম।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যালুমিনিয়ামের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী কানাডা। ২০২৪ সালের প্রথম ১১ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মোট অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ৭৯ শতাংশই কানাডা থেকে। মেক্সিকোও যুক্তরাষ্ট্রে অ্যালুমিনিয়াম স্ক্র্যাপ ও অ্যালুমিনিয়াম অ্যালয় সরবরাহ করে থাকে।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে (২০১৬-২০২০) ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি হওয়া স্টিলের ওপর ২৫ শতাংশ এবং অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন। পরে অবশ্য কানাডা, মেক্সিকো ও ব্রাজিলসহ কয়েকটি বাণিজ্যিক অংশীদারদের জন্য শুল্কমুক্ত কোটার অনুমতি দেন। কিন্তু এবার আর কোনো দেশকে ছাড় দিলেন না ট্রাম্প।
এর আগে ট্রাম্প কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি হওয়া সব পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ কর আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। পরে তা ৩০ দিনের জন্য স্থগিত রাখেন। তবে একই সময়ে, তিনি চীন থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক যোগ করেন।
সে সময় ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর খুব শিগগিরই শুল্ক আরোপ করা হবে। যুক্তরাজ্যের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “ব্রিটেনও আমাদের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ‘বেআইনি আচরণ’ করছে, তবে এ বিষয়টি শুল্ক আরোপ ছাড়াই সমাধান করা সম্ভব। ”
এর প্রতিক্রিয়ায় জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপীয় পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করলে ইইউ ‘১ ঘণ্টার মধ্যেই’ প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রস্তুত। এটি সম্ভাব্য বাণিজ্য যুদ্ধের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলছে।