DailySangram-Logo-en-H90

কৃষি

বরেন্দ্রে বহুমুখি ফসল আবাদ ॥ সেচ দেয়া হচ্ছে ১০ লাখ ৩৬ হাজার হেক্টর জমিতে

বরেন্দ্র অঞ্চলে চলছে বহুমুখি ফসলের আবাদ। এই কার্যক্রম সফল করতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) এবার ১০ লাখ ৬২ হাজার কৃষক পরিবারের প্রায় ১০ লাখ ৩৬ হাজার হেক্টর রবি শস্যের জমিতে পানি সরবরাহ করছে।

বিশেষ প্রতিনিধি
রাজশাহী ব্যুরো
Printed Edition

বরেন্দ্র অঞ্চলে চলছে বহুমুখি ফসলের আবাদ। এই কার্যক্রম সফল করতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) এবার ১০ লাখ ৬২ হাজার কৃষক পরিবারের প্রায় ১০ লাখ ৩৬ হাজার হেক্টর রবি শস্যের জমিতে পানি সরবরাহ করছে।

বিএমডিএ একাধারে গভীরনলকুপ, সৌর শক্তিচালিত এলএলপি, খাস মজা খাল পুনঃখনন, খাবার পানি সরবরাহের জন্য ওভারহেড ট্যাংক নির্মাণ, বনায়নসহ বিভিন্ন কাজ কাজ পরিচালনা করছে। গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়ার বাসিন্দা আতাউর রহমান (৫০) বলেন, “মৌসুম শুরুর দিকে বিএমডিএ-এর পানি ব্যবহার করে কফি চাষ করে ভালো অর্থ উর্পাজন করেছি। আগে আমাদের এলাকায় বছরে একটি ফসল হতো। সেটাও বৃষ্টির পানিতে। একরে ১৫ থেকে ২০ মণ ধান হতো। তবে যেবার বৃষ্টি সময়মতো হতো না সেবার কোনো ফসলে ঘরে আসতো না। এখন একরে ৮০ থেকে ৯০ মণ পর্যস্ত ধান হয়। কিছু কিছু জমিতে তিনটির বেশি ফসল হয়।” বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের স্থাপিত গভীর নলকূপের পানি গম, ধান, শাক-সবজি, আমের বাগানসহ সব ধরনের ফসল উৎপাদনের ব্যবহার হয়। সুপেয় পানিও সরবরাহ করছে এই বিএমডিএ। ১৯৯০ সালের আগেও মরুর মতো ছিল এলাকা। এখন সব পাল্টে সবুজে পরিণত হয়েছে। ১৯৮৫ সালে পূর্বে লাল কংকরময় মাটির উঁচু-নিচু টিলা, ছায়াহীন এক রুক্ষ প্রান্তর বরেন্দ্র অঞ্চল।

সেচ শাখার প্রধান অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) মো: জাহাঙ্গীর আলম খান জানান, বিএমডিএ ১৬ জেলায় ১৫৮২৮টি গভীর নলকূপ স্থাপন করেছে। ১৫৮৯৫.০৬ কিলোমিটার এলাকায় সেচের পানি বিতরণ ব্যবস্থা নির্মাণ, পাতকূয়া ৬৫০টি; বিদ্যুৎ চালিত এলএলপি ৫৭৬টি ও সোলার এলএলপি ৪৫০টি। ৪২৫৭ কি.মি. খাস/মজা খাল পুনঃখনন, ৭৭৮টি ক্রসড্যাম নির্মাণ, ১৩ টি নদীতে পল্টুন স্থাপন, ১৩০৫৭ হেক্টর জলাবদ্ধতা নিরসন- নওগাঁ জেলার রক্তদহ বিল, টেপাবিল, মনছুর বিল এবং রাজশাহী জেলার ছত্রগাছা বিল, দেবর বিল ইত্যাদি বিলের ৫৭২টি সোলার ডাগওয়েল নির্মাণ এবং ১১৪৪ কি.মি. সংযোগ রাস্তা নির্মাণ করেছে। তিনি আরো জানান, ১৫৯২টি পরিবারের খাবারপানি সরবরাহের জন্য ওভারহেড ট্যাংক নির্মাণ, বনায়নের লক্ষ্যে ২ কোটি ৫৮ লাখ গাছ লাগানো, প্রতি বছর ৬০০ মে. টন বীজ উৎপাদন, ১ লাখ ৪৮ হাজার ২১৮ কৃষককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আবাদযোগ্য জমি দাঁড়িয়েছে ২৫ লাখ ৫৩ হাজার হেক্টর এবং সেচকৃত জমি ১০ লাখ ৩৬ হাজার হেক্টর (আবাদযোগ্য জমির ৮৯.৩০%)। প্রায় ১০লাখ ৬২ হাজার কৃষক পরিবার উপকৃত হচ্ছে এই প্রতিষ্ঠান থেকে। গ্রামীন জনসাধারণের মাঝে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহের জন্য প্রামের বিভিন্ন স্থানে ১৫৯২টি ওভারহেড ট্যাংক স্থাপন করা হয়েছে।