DailySangram-Logo

রাজনীতি

ভারতে বসে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে -----------মেজর হাফিজ

ভারতে বসে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। গতকাল বৃস্পতিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই অভিযোগ করেন।

Printed Edition

স্টাফ রিপোর্টার : ভারতে বসে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। গতকাল বৃস্পতিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে বসে এদেশকে আনস্টেবল সিচ্যুয়েশনে নেবার জন্য, এদেশকে ধবংস করতে যেটুকু তিনি বাকি রেখেছেন সেটি পূর্ণ করার জন্যে নতুন ভাবে এই ফ্যাসিস্ট দল(আওয়ামী লীগ) কে নিয়ে মাঠে নামতে চান।

ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবেলায় ঐক্য প্রয়োজন উল্লেখ করে হাফিজ বলেন, অবিলম্বে এখন প্রয়োজন বাংলাদেশে সকল দেশপ্রেমিক শক্তির ঐক্য। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে থাকতে চাই। বিশেষ করে যে ছাত্র সমাজ অংশ গ্রহন করেছে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে তাদের এবং হাসিনা বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে ঈস্পাত কঠিন ঐক্য আমরা গড়ে তুলতে চাই।

ধানমন্ডির ৩২ নং বাড়ির ভাংচুরের ঘটনার প্রসঙ্গে টেনে হাফিজ উদ্দিন বলেন, বুধবার যে ঘটনা ঘটেছে সেটি এখনো চলমান, সেটি এখনো শেষ হয় নাই। এটি কারা করেছে এই তথ্য আমাদের কাছে নেই। এতে সরকারের কি ভূমিকা ছিলো সেই তথ্যও আমাদের কাছে নেই। সুতরাং আমরা অল্প কিছু সময় আশা করব, আজকের দিনের মধ্যে সব কিছু পরিস্কার হয়ে হবে, কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, কারা এজন্য দায়ী। সকল পূর্ণাঙ্গ তথ্য পেলে আমরা এই সম্পর্কে বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া মিডিয়ার সামনে জনগনের সামনে প্রকাশিত করব। অপূর্ণ তথ্য নিয়ে কোনো মন্তব্য করা সঠিক নয়। তিনি বলেন, আমরা ধারণা করছি, এগুলো গণতন্ত্রকে ধবংস করার জন্য, আগামী দিনে গণতন্ত্রের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে সেজন্য কেউ কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করতে পারেন। বিশেষ করে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ আছে তা জানার চেষ্টা করব। ভারতে পালিয়ে থাকা শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির ছয় মাস পূর্তির দিনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘বুলডোজার মিছিল’ কর্মসূচি থেকে এই ভাঙচুর শুরু হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে বাড়ি ভাঙার কাজ চলমান ছিল। জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে ‘বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রেরর ভবিষ্যৎ’ এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

হাফিজ বলেন, একাত্তর সালে অনেক যুদ্ধের পর আমরা আমাদের কাঙ্কিত বাংলাদেশ পেয়েছিলাম। কিন্ত স্বাধীনতার অব্যবহিত পর থেকে আমাদের স্বপ্ন ভঙ্গে হলো। যে লক্ষ্য ধারণ করে আমরা যুদ্ধ করেছিলোম সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায় বিচার ৃ ধীরে ধীরে হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো। গণতন্ত্রের পরিবর্তে স্থাপিত হলো একটি একদলীয় রাষ্ট্র। যেখানে সংবাদ পত্র থাকবে না, রাজনৈতিক দল থাকবে ন্,া সাধারণ মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে না..এমন একটি রাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এদেশে ১৯৭৫ সালে কায়েম হয়েছিলো। এর নাম হলো আওয়ামী লীগ। এদের কাছে কোনো দেশ নাই। এদের কাছে নিজের দল, নিজের পরিবার, নিজের স্বার্থ, নিজের সম্পদ আহরন মূল কাজ। আজকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাদের কত সম্পত্তি জানি না। আমরা মিডিয়াতে মাঝে মধ্যে খবর দেখিৃ আগে তো জানতাম না যে, শেখ পরিবারেই ৮টি বাগান বাড়ি রয়েছে গাজীপুর এলাকাতে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিয়ন সেখানে ৪‘শ কোটি টাকা আয় করেছে, হেলিকপ্টাররে ঘুরে বেড়ায় অপকল্পনীয়। কি ধরনের গণতন্ত্র তারা প্রতিষ্ঠা করেছে।

হাফিজ উদ্দিন বলেন, আমরা আশা করব, এখন অতি দ্রুত এদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হবে। কারণ গণতন্ত্র না থাকার ফলেই নানা ধরনের ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, এদেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য অনেক আত্মত্যাগ করেছে। বিশেষ করে আমাদের দল বিএনপি ৃ গত ১৫টি বছর কত মানুষ জীবন দিয়েছে, কত মানুষের জীবন কারা অন্তরালে গিয়েছে, আমাদের যুবকেরা বার্ধক্যে উপনীত হয়েছে ত্যাগের মাধ্যমেৃকিন্তু প্রত্যাশিত গণতন্ত্র এখনো দেখা পাওয়া যায়নি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠ্রা পথে বাধা হয়ে কারা দাঁড়ায়?

তিনি বলেন, একটি মহল চেষ্টা করে এখন নির্বাচন দলে পরে বিএনপি বিজয়ী হবে। সুতরাং এই নির্বাচনকে যত দীর্ঘায়িত করা যায়। বিএনপি যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে এটা তো অপরাধ হতে পারে না। বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখার জন্য কেনো নির্বাচন দীর্ঘায়িত করা হবে এটি আমরা বুঝতে অক্ষম। আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুসের প্রতি অনুরোধ রাখবো আপনি দ্রুত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে উদ্যোগ নিন। নির্বাচন হলো গণতন্ত্রের প্রধান অনসঙ্গ। এই নির্বাচনকে ঠুনকো অজুহাতের কারণে আর দূরে ঠেলে দেবেন না।

স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে এবং সহসভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ বাবলুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, তাঁতী দলের মনিরুজ্জামান মুনির, মৎস্যজীবী দলের ইসমাইল হোসেন সিরাজী, স্বাধীনতা ফোরামের সহসভাপতি হাফিজুর রহমান, একেএম রেজাউল করীম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।