রাজনীতি
নতুন রাজনৈতিক দল
নাগরিক শক্তি নাম বেশি আলোচনায়
নাগরিক শক্তি নামেই আসতে পারে নতুন রাজনৈতিক দল। তবে আরো কিছু নাম আলোচনায় রয়েছে। এরসাথে আলোচনা হয়েছে নতুন দলের মার্কা নিয়ে। সিনিয়রদের দায়িত্ব নিয়েও আলোচনায় চলছে মিটিংগুলোতে। গতকাল রোববার সন্ধ্যার মিটিংয়ের বিষয়ে কয়েকজনের সাথে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।
Printed Edition
ইবরাহীম খলিল : নাগরিক শক্তি নামেই আসতে পারে নতুন রাজনৈতিক দল। তবে আরো কিছু নাম আলোচনায় রয়েছে। এরসাথে আলোচনা হয়েছে নতুন দলের মার্কা নিয়ে। সিনিয়রদের দায়িত্ব নিয়েও আলোচনায় চলছে মিটিংগুলোতে। গতকাল রোববার সন্ধ্যার মিটিংয়ের বিষয়ে কয়েকজনের সাথে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনলাইন এবং অফলাইনে দুইভাবেই মানুষের কাছে দলের নাম আহ্বান জানানো হয়েছিল। অনলাইন এবং অফলাইনে দুই লাখের মতো নাম এসেছে। এর মধ্যে যে কয়টি নাম মিটিংয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে তা হলো নাগরিক শক্তি, নাগরিক জনতা এবং তারুণ্যের শক্তি। তবে মিটিংয়ে অংশ নেওয়া অংশীজনেরা নাগরিক শক্তির পক্ষে। তবে এটাই যে নাম থাকছে তা এখনো চূড়ান্ত নয় বলে জানিয়েছেন মিটিংয়ে অংশ নেওয়া একাধিক সিনিয়র নেতা। এদিকে দলের নামের পাশাপাশি আলোচনায় থাকছে মার্কাও। জনগণের পক্ষ থেকে মতামতগুলো থেকে তিনটি মার্কা বাছাই করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে কলম. জাতীয় ফুল শাপলা এবং উদীয়মান সূর্য। এছাড়া আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব আখতার হোসেনের বাইরে সিনিয়র দুইজনের সম্ভাব্য দায়িত্ব ঠিক করা হয়েছে।
এদিকে ২৬ তারিখ আত্মপ্রকাশের দিনক্ষণ ঠিক করা হলেও তা দুএকদিন পিছিয়ে যেতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন একজন কেন্দ্রীয় নেতা। তার যুক্তি মাসেরতো আরও দুই দিন রয়ে গেছে। তবে আপাতত ২৬ তারিখ-ই ঠিক রাখা হয়েছে। আর এদিন বড় ধরনের শোডাউন করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এজন্য সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত জুলাই বিপ্লবের সময় সামনের সারিতে থাকা ছাত্রনেতারাই নতুন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পদগুলোর দায়িত্বে থাকছেন। এরমধ্যে পদগুলোর মধ্যে রয়েছে আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব আখতার হোসেনের পর সারজিস আলমকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহকে যুগ্ম আহ্বায়ক করার বিষয়টি সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাকী পদগুলোর ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানা গেছে। এছাড়া জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিনকে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদকেও দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখা যেতে পারে।
নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি। রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে দলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হতে যাচ্ছে। নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশের আয়োজন সামনে রেখে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শতাধিক নেতার সমন্বয়ে প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তরুণদের নিয়ে নতুন এই রাজনৈতিক দল গঠনের প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।
জাতীয় নাগরিক কমিটি নির্বাহী সদস্য নাজমুল হাসান সোহাগ দৈনিক সংগ্রামকে জানান, অনেকগুলো নাম এসেছে আমাদের কাছে। তবে বেশি আলোচনায় নাগরিক শক্তি। তবে বিকল্প নামও আলোচনায় রয়েছে। তিনি বলেন, মার্কা হিসেবে কলম শাপলা আর উদীয়মান সূর্য আলোচনায় রয়েছে। দলের আত্মপ্রকাশের দিন লোকসমাগম নিয়ে গুরুত্বসহকারে আলোচনা চলছে।
নতুন ছাত্রসংগঠন
এদিকে নতুন দলের আগেই আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে নতুন ছাত্র সংগঠন। নতুন ছাত্র সংগঠনের আত্মপ্রকাশের ডেডলাইন ২৫ ফেব্রুয়ারি। নতুন ছাত্র সংগঠনের একজন শীর্ষ নেতার সাথে কথা হয় দৈনিক সংগ্রামের। তিনি গতকাল সন্ধ্যায় আলাপকালে জানান কাল পরশুর মধ্যে আমরা আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছি। অন্তত একদিন আগেতো জানাবেন কোন দিন আত্মপ্রকাশে আসছেন। তখন তিনি জানান হ্যাঁ একদিন আগে জানাবো আপনাদের। এতে বোঝা গেল কাল সোমবার (আজ) সাংবাদিকদের জানালে পরশুদিন অর্থাৎ ২৫ তারিখ মঙ্গলবার আপনারা আত্মপ্রকাশ করছেন ? তখন তিনি আর কথা বলেননি।
নতুন এই ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ দুটি পদে ঠিক কারা আসছেন তা নিয়ে মুখ খুলেননি কেউ। ছাত্র দলের নাম এবং কমিটি চমক হিসেবেই রাখতে চান সবাই। প্রসঙ্গত, নতুন এই সংগঠন সম্পর্কে ধারণা দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনের সামনে ১৭ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সামনের সারিতে থাকা অন্তত সাতজন সমন্বয়ক। তাঁরা জানান, এই ছাত্রসংগঠনের নীতি হবে ‘স্টুডেন্টস ফার্স্ট’ ও ‘বাংলাদেশ ফার্স্ট’। ছাত্র-নাগরিকের স্বার্থ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করবে তারা। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে এই ছাত্রসংগঠনের কোনো সম্পর্ক থাকবে না। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার আগে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করছেন সংশ্লিষ্টরা। নতুন ছাত্রসংগঠনের বিষয়ে ঢাকার সাতটি বড় সরকারি কলেজ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়া হচ্ছে।