DailySangram-Logo-en-H90

রাজনীতি

জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রকাশের পর দেশে বিদেশে ঝুঁকির মুখে ফ্যাসিস্ট দলটি

আওয়ামী লীগ হত্যাযজ্ঞ পরিচালনাকারী দল হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে চিহ্নিত

আওয়ামী লীগে মূল নেতৃত্বে প্রকাশ্যে এমনকি নেপথ্যে ও দলটির সভাপতি পদে শেখ হাসিনার থাকা না থাকা নিয়ে দলের ভেতরে বাইরে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকারের দমন-পীড়ন নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশন প্রতিবেদন প্রকাশের পর দলটির ভেতরে বাইরে এনিয়ে এখন জমজমাট আলোচনা।

স্টাফ রিপোর্টার
Printed Edition

আওয়ামী লীগে মূল নেতৃত্বে প্রকাশ্যে এমনকি নেপথ্যে ও দলটির সভাপতি পদে শেখ হাসিনার থাকা না থাকা নিয়ে দলের ভেতরে বাইরে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকারের দমন-পীড়ন নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশন প্রতিবেদন প্রকাশের পর দলটির ভেতরে বাইরে এনিয়ে এখন জমজমাট আলোচনা। গণআন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া এই নেত্রীর পক্ষে আগামী দিনগুলীতে ভারতে বসে দল পরিচালনা থেকে নিয়ে বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলনের কর্মসূচি বা কোনো ধরনের বিবৃতি-ও দেয়া আদৌ সম্ভব হবে কি-না তা চলে আসছে ব্যাপক আলোচনায়। এর পাশাপাশি দেশে বিদেশে হাসিনার পক্ষে কাজ করা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে নানান ধরনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকারের দমন-পীড়ন নিয়ে সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের ঘটনা বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর)। ১১৪ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় জেনেভায়। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশনার ভলকার টুর্ক নিজে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে এধরনের প্রতিবেদন ঢাকায় প্রকাশ করা হয়নি বা সরকারের কাছে আগে হস্তান্তর করা হয়নি। কেননা তাদেরও ধারণা হয়েছে যে, ঢাকা থেকে অন্তর্বর্তী সরকার এটি প্রকাশ করলে এ-র গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হতো। এসব বিবেচনায় রেখে জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশনার ভলকার টুর্ক নিজে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। আর এই রিপোর্টের চুম্বক অংশ হলো ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সরকার ও সেই সময়ের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল। বলা হয়েছে ওই স্বৈরাচারী সরকার নিরাপত্তা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা এবং দল ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে যুক্ত করে মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগ করেছে। বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বিচার মারণাস্ত্র দিয়ে গুলী, গ্রেপ্তার, নির্যাতন, চিকিৎসা পেতে বাধা দেওয়ার মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে সরকার। বলা হয় যে, মূলত ক্ষমতায় টিকে থাকতে আন্দোলনকারীদের ওপর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগে সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। জাতিসংঘের হিসাবে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ১১৮ জনই শিশু। শেখ হাসিনার নির্দেশেই নির্বিচারে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি গুলী করে হত্যাযজ্ঞ পরিচালনা করেছে।

আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশন প্রতিবেদন প্রকাশ করে তারা কিন্তু আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করার পরামর্শ দিয়েছে। তবে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ভারতে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগের কথা বলেছে। এমনকি দরকার হলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে সহায়তার কথাও বলা হয়েছে সংস্থাটির পক্ষ থেকে। আর এখানেই খোঁজা হচ্ছে নানান ধরনের প্রশ্ন। কেননা বলা হচ্ছে জাতিসংঘের এমন প্রতিবেদনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ হত্যাযজ্ঞ পরিচালনাকারী দল হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে চিহ্নিত হয়ে গেছে। এতে করে সারা দুনিয়ায় আওয়ামী লীগ’কে পাকা খুনীদের দল বলে চিহ্নিত করা হবে। আর এমন একটি দলের পক্ষে এবং এর সভাপতি শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য নেতাদের পক্ষে দাঁড়ানো বা প্রচার চালানো পক্ষান্তরে গণহত্যা পরিচালনাকারীদের পক্ষে উকালতি করার সামিল বলে গণ্য হবে। দেশে তো দূরে থাক বিদেশের মাটিতেও আওয়ামী লীগ ও দলটির সভাপতি শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ নেতাদের পক্ষে দলটির সাধারণ কর্মী বা শুভানুদায়ীদের পক্ষে আন্দোলন সংগ্রাম করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে। গণহত্যাকারী কোনো দলের পক্ষে সহজে কেউ কাজ করতে গিয়ে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও নানান ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়ে যেতে পারেন বলে কারো কারো আশঙ্কা।

ভারতও বেকায়দায় পড়বে

ধারণা করা হচ্ছে আওয়ামী লীগের মধ্যে যারা সব সময় ভারতের বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা আশা করে বসে আসেন তারা-ও এখন নানান শংকায়। তাদের মতে, শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার কারণে ভারতও সংকটের মুখোমুখি হতে পারে। কেননা ভারত জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত গুরুতর মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে যুক্ত অপরাধীর পক্ষে দাঁড়াবে না। তাছাড়া অন্তর্র্বতী সরকার বাংলাদেশ শেখ হাসিনাকে ফিরত দেওয়ার জন্য ভারতকে বিভিন্ন ভাবে যে অনুরোধ জানিয়ে আসছে তা-ও এখন বেশ জোরালো হচ্ছে। আর এমন প্রক্রিয়ায় যদি বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘকে এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করে ফেলে সেক্ষেত্রে ভারত আসলেই কি করবে বা করতে পারবে তা-ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ভাবিয়ে তুলেছে।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম সম্প্রতি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা, তাঁর অনুগত কিংবা বঙ্গবন্ধু পরিবারের কারোর নেতৃত্বে শত বছরেও আওয়ামী লীগ মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না বলে। এর পাশাপাশি ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন-অনেকের ধারণা, শেখ পরিবারের কেউ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এলে ভালো হবে। না, তেমন মনে হয় না। সেটি হবে না। বাংলাদেশে আর কখনও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ওই পরিবারের নেতৃত্ব কাজে আসবে না। কাদের সিদ্দিকী আরো বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের কিছু কিছু লোক ভাবছেন– দুই-এক মাস পরেই দেশে চলে আসবেন শেখ হাসিনা। এটি হতেও পারে। দুনিয়াতে এ রকম অনেক কিছুই হয়। আমার কাছে এটি ষোল আনাই ভোগাস মনে হয়। অন্য কোনো দেশ হাসিনাকে আমার দেশের সরকারপ্রধান বানিয়ে দিতে পারে, এটি এখনও আমি বিশ্বাস করি না। তিনি আরো বলেন, অন্যায় স্বীকার এবং ক্ষমাপ্রার্থনা করে সংশোধিত হলে আবার রাজনীতিতে হয়তো ফিরে আসতেও পারবেন শেখ হাসিনা। সেজন্যে তাঁকে এক দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। আমাদের অনেকের মতো জেল-জুলুমও সহ্য করতে হতে পারে। সে সময় দয়াময় আল্লাহ তাঁকে দেবেন কিনা জানি না।

শেখ হাসিনা ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছর ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। এখন এই নেত্রীর বিরুদ্ধে নানান ধরনের অভিযোগের একটি হলো, তিনি তার আপনজনদের পাশাপাশি সুবিধাভুগীদের নিয়েই সটকে পড়েছেন। কোটি কোটি নেতা কর্মীর প্রতি তার কোনো ধরনের টান অনুভব করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। আর একারণে জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কোনো ধরনের নির্দেশনা বা বক্তব্য রাখার যোগ্যতা কিংবা গ্রহণযোগ্যতা আছে কি-না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর পাশাপাশি আইনগতভাবে নেতাকর্মীদেরকে আহবান জানিয়ে তিনি আর বক্তব্য-ও বিবৃতি দিতে পারবেন কি-না সেসব বিষয়গুলোও আলোচনায় চলে এসেছে।

আলোচনায় এসেছে শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি পদ থেকে অপসারণ করে অন্য কাউকে এর দায়িত্ব দেয়া নিয়ে। কারো কারো মতে, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশন প্রতিবেদন বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী দলটির ওপর মরন ছোবল। কারো কারো অভিমত এধরনের বিপোর্ট প্রকাশের পর দলে ঐক্য আদৌ থাকবে কি-না কিংবা দলটির ভেঙ্গে ভেঙ্গে খান হয়ে যাবে কি-না সে প্রশ্নই দ্রুত সামনে চলে আসছে। তাদের মতে, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশন প্রতিবেদন আওয়ামী লীগের মতো দলের মহাবিপর্যয় ডেকে এনেছে যা দেখতে খুব সময় লাগবে মনে করেন না রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকমহল।

আওয়ামী সরকারের পতনের কারণ উদঘাটন

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত ধারাবাহিক ঘটনাবলীর ফলেই তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার পতনের মুখে পড়েছিল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণঅভ্যুত্থানের চূড়ান্ত সময়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ আন্দোলনকারীদের আরও উস্কে দেয়, যা শেষ পর্যন্ত সরকারের বিদায়ের পথ তৈরি করে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন দমনে সরকারের বিলম্বিত সিদ্ধান্ত এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ আন্দোলনকারীদের কাছে প্রতারণামূলক মনে হয়েছিল। ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই সরকার হাইকোর্টের কোটা রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেয়, যা মূলত এই আন্দোলনের সূত্রপাত করেছিল। তবে, আন্দোলনকারীরা সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিল এবং আলোচনার পরিবর্তে বিক্ষোভ আরও জোরদার হয়।

গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ এবং গণবিক্ষোভ ঠেকাতে নিরাপত্তা বাহিনী শক্তি প্রয়োগের দিকে ঝুঁকে পড়ে। প্রতিবেদন অনুসারে, ১৮ জুলাই থেকে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি অস্ত্র ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে, যেখানে উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে প্রাণহানি ঘটে এবং আহতদের চিকিৎসা নিতে বাধা দেওয়া হয়। এ সময় জনগণও রাস্তায় নেমে আসে, যা আন্দোলনকে আরও বেগবান করে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আন্দোলনের এক পর্যায়ে কিছু বিক্ষোভকারী সরকারি ভবন, পরিবহন অবকাঠামো এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার ১৮ জুলাই বিজিবিকে সর্বোচ্চ শক্তি ব্যবহারের নির্দেশ দেয় এবং ২৩ জুলাই পর্যন্ত দেশব্যাপী ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রাখে। ১৯ জুলাই সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হলেও তারা বিক্ষোভ দমন করতে ব্যর্থ হয়।

২১ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট কোটা সংস্কার নিয়ে নতুন একটি রায় দেয়, যেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কোটা ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। সরকার দ্রুত এই পরিবর্তন মেনে নিলেও আন্দোলনকারীদের দাবি তখন আরও বিস্তৃত হয়ে গিয়েছিল। তারা তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তার অপসারণ এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায়।

২৬ জুলাই বিএনপি সরকার পতনের দাবিতে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানায়, যা আন্দোলনকে আরও বেগবান করে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার সাময়িকভাবে বিক্ষোভ দমন করতে পারলেও নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক গ্রেপ্তার অভিযান এবং ছাত্রনেতাদের আটক করা জনসাধারণের ক্ষোভ বাড়িয়ে তোলে।

২৮ জুলাই গোয়েন্দা শাখা ছয়জন আটক ছাত্রনেতার একটি স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে তারা বিক্ষোভের নিন্দা জানায়। তবে, জনসাধারণ এটিকে জোরপূর্বক নেওয়া স্বীকারোক্তি বলে মনে করে, যা নতুন করে ক্ষোভের জন্ম দেয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট আন্দোলনকারীরা ঢাকায় গণমিছিলের পরিকল্পনা করে, যা সরকার দমন করতে চাইলেও সেনাবাহিনী ও বিজিবি কঠোর পদক্ষেপ নিতে রাজি ছিল না। সেনাপ্রধান জুনিয়র কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে জানান, তারা বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলী চালাতে চান না।

শেষ পর্যন্ত, ৫ আগস্ট দুপুরে লাখো বিক্ষোভকারী যখন ঢাকার কেন্দ্রস্থলে প্রবেশের চেষ্টা করে, তখন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নিরপেক্ষ অবস্থান নেয়। দুপুর ২টার দিকে সেনাপ্রধান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়ে দেন যে, সেনাবাহিনী আর শক্তি প্রয়োগ করবে না। পরিস্থিতির চাপে সেদিনই তিনি সশস্ত্র বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে ঢাকা ত্যাগ করেন এবং সরকার পতনের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের পরিসমাপ্তি ঘটে।