জাতীয়
জুলাই আন্দোলন খলনায়ক হিসেবে বিদ্যুৎ বিভাগের ১৪ কর্মকর্তার নামে মামলা
ফরিদ আহমেদ অভিযোগ করেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর আওতাধীন।

জুলাই আগস্ট আন্দোলনের সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও সাভারে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও জনতার ওপর ক্রাকডাউন চালানোর অভিযোগে দমন পীরণের মাস্টার মাইন্ড শেখ হাসিনা, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব হাবিবুর রহমান, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অজয় কুমার চক্রবর্তীসহ বিদ্যুৎ বিভাগের ১৪ কর্মকর্তা ও আমলার নামে সাভার থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। সেই মামলায় আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মামলার বাদী ফরিদ আহমেদ।
সার্বভৌমত্ব আন্দোলনের সংগঠক ফরিদ আহমেদ লিখিত বক্তব্যে দাবি করেন, জুলাই আগস্টে যারা স্বৈরাচারের পক্ষ অবলম্বন করে বিদ্যুতের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো বন্ধ করে দিয়ে গণহত্যা সংঘঠনে ইন্ধন দিয়েছে, প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছে তারা এখনো নিরাপদে বিচরণ করছে, ক্ষেত্র বিশেষ পুরস্কৃতও হচ্ছে। যা জুলাই আন্দোলনের নিহতদের স্বজন ও আহতদের পীড়া দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে ফরিদ আহমেদ অভিযোগ করেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও সাভার এলাকায় ১৫ জুলাই থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত ছাত্রদের আন্দোলন বানচাল করতে ও ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে দফায় দফায় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়া হয়। যেখানে সরাসরি ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মোল্লা মোঃ আবুল কালাম আজাদ জড়িত।
ফরিদ আহমেদ অভিযোগ করেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর আওতাধীন। কোন ধরনের কারিগরি ও যান্ত্রিক ত্রুটি না থাকার পরেও শুধুমাত্র বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের স্বার্থ চরিতার্থ করার লক্ষ্যেই দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোল্লা মোঃ আবুল কালাম আজাদ বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেন। এর সঙ্গে ইন্ধনদাতা হিসেবে, বিদ্যুৎ বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান অজয় কুমার চক্রবর্তী, সাবেক মেম্বার দেবাশীষ চক্রবর্তী, পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম, পরিচালক শফিকুর রহমান, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী বিশ্বনাথ শিকদার, পরিচালক এ কে এম ইস্কান্দার আলী, সাবেক নির্বাহী পরিচালক মোঃ আসাফউদ্দৌলা, উপ-পরিচালক কারিগরি মোঃ নুরুন্নবী, প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রহিম মল্লিক, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. নুরুল আলম, প্রক্টর ড. আলমগীর হোসেনসহ মামলার ৪১জন আসামী সরাসরি জড়িত ছিল। মুলত তাদের সম্মিলিত পরিকল্পনায়ই সেদিন পুলিশ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা নিরীহ ছাত্র জনতার ওপর নির্মম আক্রমণ করে হত্যাকাণ্ড চালায়।
ফরিদ আহমেদ বলেন, ২৪ এর এই গণহত্যায় সহযোগী এসকল মানুষরুপী পশুদের স্বাধীনভাবে মুক্ত বিচরণের অধিকার নাই। তাদের মুক্ত বিচরণ ও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা হবে দুই হাজার শহীদ ও ৩০ হাজার আহতদের রক্ত ও ত্যাগের সঙ্গে বেইমানি। যা এদেশের শান্তিকামী জনগণ মেনে নেবে না। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সরকার, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সচেতন কোন মহল এ বিষয়ে এগিয়ে না আশায় আমরা হতাশ। তাই একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে সার্বভৌমত্ব আন্দোলন ইমানী দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাদের নামে মামলা দায়ের করেছি এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে দ্রুত জুলাই গণঅভ্যুত্থান নস্যাতের পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিতের জোর দাবী জানাচ্ছি।