DailySangram-Logo

শিক্ষাঙ্গন

একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ টানা পাঁচ দিন

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ নার্সিং কলেজে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সহিংস হামলা

গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ নার্সিং কলেজে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর সহিংস হামলার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বহিরাগত ও কলেজের কিছু ছাত্রের দ্বারা এ হামলা চালানো হয় বলে দাবি করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

অনলাইন ডেস্ক
tunurshingc
গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ নার্সিং কলেজে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর সহিংস হামলার অভিযোগ উঠেছে

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর: গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ নার্সিং কলেজে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর সহিংস হামলার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বহিরাগত ও কলেজের কিছু ছাত্রের দ্বারা এ হামলা চালানো হয় বলে দাবি করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় অন্তত ১৬ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত হাসপাতালে ভর্তি শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন—

বর্ষা রানী (৪র্থ বর্ষ) তহুরা চৌধুরী (২য় বর্ষ),সুমাইয়া বিনতে নওশিন (২য় বর্ষ),রবিউস সানি (২য় বর্ষ)।

শিক্ষার্থীরা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. জামাল উদ্দিন ভূঁইয়ার অতিরিক্ত দায়িত্ব গ্রহণের বিরোধিতা করে পাঁচ দিন ধরে আন্দোলন করছিলেন। তারা অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষের আর্থিক লেনদেন ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বেচ্ছাচারিতা রয়েছে। আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা কলেজের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

বুধবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষ জামাল উদ্দিন ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, হামলাকারীরা বাঁশের লাঠি, লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ চালায়।

একজন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, "অধ্যক্ষ জামাল উদ্দিন নিজেই এই সহিংসতার নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং আমাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালানো হয়।"

ওই কলেজের আবাসিক শিক্ষক শামীমা নাসরিন সেলি জানান, "চতুর্থ বর্ষের গর্ভবতী শিক্ষার্থী শান্তা ইসলাম স্মৃতি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বসে ছিলেন। এ সময় এক ব্যক্তি তাকে লাথি মেরে ফেলে দেয়, এতে তিনি গুরুতর আহত হন। শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে গেলে আন্দোলন দমনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বেধে যায়।"

তিনি আরো অভিযোগ করেন, হামলার পর অধ্যক্ষপন্থী ব্যক্তিরা আবাসিক হলে গিয়ে দরজা খুলে দেওয়ার জন্য আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখায়।

এ বিষয়ে কলেজের শিক্ষক তাজুল ইসলাম উপরস্থ কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া কথা বলতে রাজি হননি। তবে, অনেক শিক্ষক জানিয়েছেন, "নবম গ্রেডের কাউকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিলে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না।"

শিক্ষার্থীরা এক জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত নেন— অধ্যক্ষ জামাল উদ্দিন ভূঁইয়ার দায়িত্ব বাতিল না করা পর্যন্ত একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

প্রভাষক সামসুন নাহারকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে।

কলেজের প্রশাসনিক ও আবাসিক সুবিধার উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে।

ওই ঘটনার পর অধ্যক্ষ জামাল উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার সাথে কলেজে কোন বহিরাগত প্রবেশ করেনি। শিক্ষার্থীদের মাঝে কি ভাবে সংঘর্ষ বেঁধেছে তা আমি জানিনা।

ঘটনার পর আহত শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে, এখনো পর্যন্ত কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে জানা গেছে, তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন এবং সহিংসতার ঘটনায় কলেজের একাডেমিক পরিবেশ নতুন মোড় নিতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা আশা করছেন, কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, যাতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় এবং শিক্ষার পরিবেশ স্বাভাবিক করা যায়।