শিক্ষাঙ্গন
মেডিকেল ভর্তি
সনদ যাচাইয়ের ডাকে আসেননি ৪৯ মুক্তিযোদ্ধা কোটাধারী
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণের পর সনদ যাচাইয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ডাকে সাড়া দেননি ৪৯ জন কোটাধারী শিক্ষার্থী। এমনকি যারা অধিদপ্তরের ডাকে সাক্ষাৎকারে এসেছেন, তাদের মধ্য থেকেও যাচাই-বাছাই শেষে অনেকেই বাদ পড়তে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় উত্তীর্ণের পর সনদ যাচাইয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ডাকে সাড়া দেননি ৪৯ জন কোটাধারী শিক্ষার্থী। এমনকি যারা অধিদপ্তরের ডাকে সাক্ষাৎকারে এসেছেন, তাদের মধ্য থেকেও যাচাই-বাছাই শেষে অনেকেই বাদ পড়তে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চান্সপ্রাপ্তদের সবাই যাচাই-বাছাইয়ে আসেননি, যতদূর জেনেছি সংখ্যাটা ৪৯ জনের মতো। এমনকি যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাদের মধ্যে কিছু প্রার্থী প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হলেও বড় একটা সংখ্যা যাচাই-বাছাই শেষে বাদ পড়তে যাচ্ছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে বিষয়গুলো আরেকটু যাচাই করা দরকার। যাচাইয়ের প্রক্রিয়া শেষ হলে আগামী রোববার অথবা সোমবার প্রতিবেদন আকারে সংশ্লিষ্টদের কাছে জমা দেওয়া হবে। এরপর তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এসব প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. রুবীনা ইয়াসমীন বলেন, সনদ যাচাইয়ে আজকে শেষ দিন ছিল। কিন্তু ফলাফল এখন আমরা প্রকাশ করবো না, কারণ অনেকে অনুপস্থিত ছিল। যারা অনুপস্থিত ছিল তাদের আবারও নোটিশ দিচ্ছি রোববারে আসার জন্য। অনুপস্থিতরা রোববারে আসবেন, পরে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জানা গেছে, বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজে কোটায় আসন পাওয়া মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের চলতি মাসের ২৭, ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি সনদপত্র যাচাইয়ের জন্য ডেকেছিল স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। তাতে কোটায় চান্স পাওয়ার পরও সনদ যাচাইয়ের জন্য আসেননি ৬০ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। এর আগে ২৩ ও ২৬ জানুয়ারি পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর (পার্বত্য জেলার উপজাতীয় ও অ-উপজাতীয় এবং অন্যান্য জেলার উপজাতীয়) কোটায় নির্বাচিত প্রার্থীদের সনদপত্র যাচাইয়ের জন্য ডেকেছিল অধিদপ্তর।
অধিদপ্তর সূত্র আরও জানিয়েছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় মোট আসন রয়েছে ২৬৯টি। এর মধ্যে ১৯৩ জন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পেরেছেন। যাদের অধিকাংশেরই প্রাপ্ত নম্বর ৪০-৪৬। তবে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও মাহিন সরকার। ক্ষোভ জানাতে থাকেন শিক্ষার্থীরাও। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নির্বাচিতদের ফলাফল স্থগিত ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সারাদেশে একযোগে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করেছিলেন ১ লাখ ২৫ হাজার ২৬১ জন। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ১ লাখ ৩১ হাজার ৭২৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬০ হাজার ৯৫ জন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরীক্ষায় পাসের হার ৪৫ দশমিক ৬২ শতাংশ। এর মধ্যে ছেলে পরীক্ষার্থী ছিল ২২ হাজার ১৫৯ জন যা উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর ৩৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ। উত্তীর্ণ মেয়ে পরীক্ষার্থী সংখ্যা ৩৭ হাজার ৯৩৬ জন যা উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর ৬৩ দশমিক ১৩ শতাংশ।