অপরাধ
কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার তানভীর আরাফাত সাময়িক বরখাস্ত
কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম তানভীর আরাফাতকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।
কুষ্টিয়ার সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম তানভীর আরাফাতকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতকে (সাবেক পুলিশ সুপার কুষ্টিয়া) কুষ্টিয়া সদর থানার মামলায় গত ২৬ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়।
একই দিন আদালতে হাজির করা হলে তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান আদালত। তাই সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নম্বর আইন)-এর ৩৯(২) ধারার বিধান মোতাবেক সরকারি চাকরি থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
উল্লেখ্য, পুলিশের এই কর্মকর্তা কুষ্টিয়ায় বিএনপির কর্মী সুজন মালিথা হত্যা মামলার প্রধান আসামি। পাঁচ বছর আগে এক বিএনপি কর্মীকে ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা’র অভিযোগে তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামের বাসিন্দা ইসমাইল মালিথার ছেলে সুজন মালিথা (৩২) একজন একনিষ্ঠ বিএনপি কর্মী ছিলেন।
২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে দলীয় কাজ শেষে সুজন মালিথা বাড়ি ফেরার পর আসামিরা তার বাসায় প্রবেশ করে এবং জোরপূর্বক তাকে তুলে নিয়ে অজ্ঞাতস্থানে চলে যায়।
পরদিন সকালে সুজনের পরিবার জানতে পারে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পরস্পরের যোগসাজশে আসামিরা ১৩ সেপ্টেম্বর রাত ১টা ৩০ মিনিটে কুষ্টিয়া মডেল থানাধীন মোল্লাতেঘরিয়া পূর্ব ক্যানালের পাড়ে সুজন মালিথাকে গুলি করে হত্যা করেছে।
মালিথার পরিবারের লোকজন আসামিদের কাছে উপস্থিত হয়ে তাকে হত্যার কারণ জিজ্ঞাসা করলে কোনো সদুত্তর না দিয়ে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
এছাড়া একাধিকবার উক্ত ঘটনার বিষয়ে মামলা করার চেষ্টা করলে আসামিরা বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখায়। এমন প্রতিকূল ও প্রতিবন্ধকতার কারণে পরিকল্পিত এই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে নিহতের পরিবার থানায় গিয়ে মামলা করতে পারেননি।
আগস্ট বিপ্লবের পর গত ২৯ সেপ্টেম্বর এসপি তানভির আরাফাতকে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি করেন সুজন হোসেন।
এ মামলার এজাহার নামীয় অন্য আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ (কারান্তরীণ), সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা, দৌলতপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান টোকন চৌধুরী।
এছাড়া কুষ্টিয়া মডেল থানার সাবেক ওসি নাসির উদ্দিন, সাবেক ওসি এ কে এম মিজানুর রহমান, সাবেক এসআই সাহেব আলী, এসআই মোস্তাফিজুর রহমানও এই মামলার আসামি।
সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি সিলেট রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোশ ভাতা পাবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।