DailySangram-Logo

গ্রাম-গঞ্জ-শহর

শরীয়তপুর থেকে উদ্ধার

গাজীপুর সাফারি পার্কে আশ্রয় পেল বিরল বন্যপ্রাণীরা

বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক ছানাউল্যা পাটওয়ারীর নির্দেশনায় অভিযান পরিচালনা করেন ওই ইউনিটের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস এসময় সাফারি পার্কের নবমিত্র সাথে ছিলেন।

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর: শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কলুকাঠি এলাকায় গোপনে পরিচালিত একটি মিনি চিড়িয়াখানা থেকে উদ্ধার হওয়া বিরল ও বিপন্ন প্রাণীগুলো এখন গাজীপুরের শ্রীপুরে সাফারি পার্কে নতুন আশ্রয় পেয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় পার্ক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

অবৈধভাবে পরিচালিত ওই মিনি চিড়িয়াখানার খোঁজ পেয়ে বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের কর্মীরা গত সোমবার বিকেলে বিশেষ অভিযানে নামেন। তাদের তৎপরতায় উদ্ধার করা হয় একটি কাল ভালুক, একটি মিঠা পানির কুমির, তিনটি বার্মিজ অজগর, আটটি শজারু, দুটি মেছোবিড়াল, দুটি বনবিড়াল, দুটি কালিম পাখি, ১০টি ঘুঘু, দুটি টিয়া এবং দুটি বালিহাঁস।

বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক ছানাউল্যা পাটওয়ারীর নির্দেশনায় অভিযান পরিচালনা করেন ওই ইউনিটের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস এসময় সাফারি পার্কের নবমিত্র সাথে ছিলেন।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ‘মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম নামের একটি শিশু পার্ক ও পিকনিক স্পটের মধ্যে গোপনে স্থাপিত মিনি চিড়িয়াখানায় এসব প্রাণীকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে আটকে রাখা হয়েছিল। শিশু পার্ক কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে, তারা আইন সম্পর্কে সচেতন না হয়েই এসব প্রাণী সংগ্রহ করেছিল।

গাজীপুর সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, উদ্ধার হওয়া প্রাণীগুলোকে পার্কের কোয়ারেন্টিন জোনে রাখা হয়েছে। পর্যবেক্ষণের পর উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে প্রাণীগুলোর স্বাস্থ্যগত অবস্থা ভালো রয়েছে।

বাংলাদেশের বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী, বন্য প্রাণী দখলে রাখা, শিকার করা ও ক্রয়-বিক্রয় আইনপরিপন্থী। এই আইন লঙ্ঘনের ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।

উদ্ধার হওয়া কিছু প্রাণীকে সাফারি পার্কে রাখা হলেও বাকিদের প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।

এই উদ্ধার অভিযান শুধু অবৈধ বন্য প্রাণী বন্দিত্বের বিরুদ্ধে একটি বড় পদক্ষেপ নয়, বরং বিপন্ন প্রাণীগুলোর জন্য নতুন আশার আলো। গাজীপুর সাফারি পার্ক এখন তাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল, যেখানে তারা প্রকৃতির ছোঁয়ায় স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবে।