গ্রাম-গঞ্জ-শহর
শেরেবাংলা নগরে জামায়াতের শহীদ সেনা দিবসের আলোচনা সভা
সেনা হত্যার বিচার না হলে জাতি দায়মুক্ত হবে না ---মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন
‘২০০৯ সালের কথিত বিডিআর বিদ্রোহের নামে দেশপ্রেমী সেনা হত্যা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না বরং তা ছিলো দেশ ও জাতিস্বত্ত্বাবিরোধী গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ এবং পূর্ব পরিকল্পিত’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
Printed Edition
‘২০০৯ সালের কথিত বিডিআর বিদ্রোহের নামে দেশপ্রেমী সেনা হত্যা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না বরং তা ছিলো দেশ ও জাতিস্বত্ত্বাবিরোধী গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ এবং পূর্ব পরিকল্পিত’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
তিনি গতকাল মঙ্গলবার বেলা ২টায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের স্থানীয় একটি মিলনায়তনে শেরেবাংলা নগর উত্তর থানা জামায়াত আয়োজিত জাতীয় শহীদ সেনা দিবসের আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর মু. আব্দুল আউয়াল আজমের সভাপতিত্বে এবং থানা কর্মপরিষদ সদস্য হাফেজ মোহাম্মদ শাহজাহানের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন থানা বায়তুলমাল সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল হালিম কর্মপরিষদ সদস্য সাইফুল আলম, মোঃ নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, পিলখানার তথাকথিত বিদ্রোহের ঘটনা ছিল বাংলাদেশ বিরোধী আধিপত্যবাদী, সম্প্রসারণবাদী এবং তাদের তাবেদারদের গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। ষড়যন্ত্রকারীরা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অরক্ষিত করার জন্যই সেদিন ৫৭ জন চৌকস, মেধাবী ও দেশপ্রেমী সেনা কর্মকর্তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে দেশ ও জাতিকে কলঙ্কিত করেছিলো। কোন যুদ্ধেও এতো সংখ্যক সেনা কর্মকর্তার প্রাণহানীর কোন রেকর্ড নেই। তাই গঠিত তদন্ত কমিশনকে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে এ হত্যাকা-ের জন্য দায়ি শেখ হাসিনা এবং তাদের দোসরদের ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে এদেশ থেকে ফ্যাঁসীবাদী রাজনীতি চিরতরে বিদায় দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে জনগণের শাসন। আগামী দিনে এদেশে কোন দাদাগিরি মেনে নেওয়া হবে না। তিনি পিলখানা শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং তাদের স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
তিনি বলেন, আগামী দিনের বাংলাদেশ হবে জনগণের বাংলাদেশ। এদেশে আর কখনো চাঁদাবাজী, টেন্ডরবাজী, দুর্নীতি ও লুটপাট মেনে নেয়া হবে না। এজন্য জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। সে নির্বাচনকে অবশ্যই রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখা দরকার। মূলত, এজন্যই অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই স্থানীয় সরকারের নির্বাচন হওয়া জরুরি। নির্বাচনের বিকল্প হিসাবে স্থানীয় সরকারে প্রশাসক নিয়োগ কোন সমাধান নয়। কারণ, এরা স্বৈরাচার ও ফ্যাসীবাদের দোসর।
তিনি আগামী নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি প্রবর্তনের দাবি জানিয়ে বলেন, প্রচলিত পদ্ধতিতে নির্বাচন কোন ভাবেই অবাধ, সুষ্টু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। কারণ, এ পদ্ধতির নির্বাচনে হোন্ডা, গুন্ডা এবং বস্তাভর্তি টাকার কারবার হয়। পিআর পদ্ধতি প্রবর্তিত হলে এসবের কোন সুযোগ থাকবে না। থাকবে না নির্বাচনী সহিংসতাও। এ পদ্ধতির ভোটারটা ব্যক্তিকে নয় বরং প্রতীকে ভোট প্রদান করবেন। সংসদে ছোট ছোট রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্বও নিশ্চত হবে। তিনি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি দিতে দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম সম্পাদন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সেলিম উদ্দিন বলেন, দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই সেনা হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়েছিলো। ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছিলো অসংখ্য নিরাপরাধ বিডিআর জওয়ানকে। তারা ফ্যাসীবাদী সরকারের অবিচারের শিকার হয়ে দীর্ঘ পরিসরে কারাগারে অন্তরীণ রয়েছে। কথিত বিচার ছিলো রাজনৈতিক প্রভাবে প্রভাবিত। ফলে অনেকে পরিবার-পরিজন, পিতা-মাতা, স্ত্রী-সন্তান হারিয়ে হয়েছেন সর্বশান্ত হয়েছেন। তাই তাদের আর কারাগারে অন্তরীণ রাখার কোন যৌক্তিকতা নেই। তিনি আটক বিডিআর জোয়ানদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করে বলেন, অবিলম্বে তাদের জামিনে মুক্তি দিন এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার করে দায়িদের শাস্তি নিশ্চত করুন। অন্যথায় জাতি কোন ভাবেই দায়মুক্ত হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।