DailySangram-Logo

গ্রাম-গঞ্জ-শহর

চাওয়া-পাওয়ার দোলাচলে পাকা ব্রিজ

বাঙালি নদীর ওপর অবশেষে স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ

সোনাতলা উপজেলার জোরগাছা ইউনিয়নের হলিদাবগা এলাকায় বাঙলী নদীর উপর এই ব্রিজটি এলাকার দুঃখ। অবশেষে নিজেদের ভোগান্তি নিরসনে বিভিন্ন গ্রাম থেকে সহস্রাধিক বাঁশ সংগ্রহ করে নিজেদের শ্রম ও কয়েক লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে সুবিধা বঞ্চিতরা।

Printed Edition
bograb

আব্দুল ওয়াদুদ, বগুড়া অফিস : সোনাতলা উপজেলার জোরগাছা ইউনিয়নের হলিদাবগা এলাকায় বাঙলী নদীর উপর এই ব্রিজটি এলাকার দুঃখ। অবশেষে নিজেদের ভোগান্তি নিরসনে বিভিন্ন গ্রাম থেকে সহস্রাধিক বাঁশ সংগ্রহ করে নিজেদের শ্রম ও কয়েক লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে সুবিধা বঞ্চিতরা। নেতৃত্ব দিয়েছেন জোতদার বাউল মুকুল। এতে এই বাঙালি নদীর দুপাশের হাজার হাজার মানুষের যাতায়াতের পথ সুগম হয়েছে। ভোগান্তি থেকে রক্ষা পেয়েছে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। উন্মোচিত হয়েছে নদীর তীরের বাঙালি বাজারটি। তবে এই সুখ বেশি দিনের নয় বলে আক্ষেপ সুবিধা বঞ্চিতদের। কারণ প্রতিবছর এতো পরিমাণ বাঁশ সংগ্রহ করে সাঁকো তৈরি সম্ভব নয়। তাই একটি ব্রিজ নির্মাণের মাধ্যমে লাখো মানুষের ভোগান্তির অবসান করতে জোর দাবি এই অঞ্চলের মানুষের। উত্তরের লোকাল রেল স্টেশনগুলোর মধ্যে সব থেকে বেশি যাত্রী ওঠানামার মধ্যে অন্যতম ছিল সোনাতলার ভেলুরপাড়া স্টেশন। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থায় ভাটা পরার কারণে বর্তমানে প্রায় জরাজীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। গত প্রায় ১০ বছর ধরে স্টেশন মাস্টারও নেই এখানে। এই এলাকায় রয়েছে কলেজ, হাইস্কুল, ইউনিয়ন পরিষদ, সোনালী ব্যাংক, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দপ্তর। কিন্তু বাঙালি নদীর পূর্ব পাড়ের মানুষ এইসব সেবা থেকে বরাবরই বঞ্চিত। যার কারণে এই অঞ্চলটির উন্নয়ন একেবারেই থমকে আছে। বরং ধীরে ধীরে অনুন্নত অঞ্চলে পরিণত হচ্ছে।

ব্রিজটি নির্মাণ হলে কয়েকটি অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের পথ সুগম হবে। দূরত্ব কমবে প্রায় ১৫ কিলোমিটারের এবং স্থানীয় প্রায় অর্ধশত গ্রামের মানুষ প্রতিনিয়ত সুবিধা ভোগ করতে পারবে। রেল স্টেশনটি ফিরবে পূর্বের অবস্থায়, অনায়াসে যাতায়াত করতে পারবে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী, নতুন দ্বার উন্মোচন হবে হাজারো ব্যাবসায়ীর। উন্নয়ন চলে আসবে দ্বারে দ্বারে।

বাঙালি এই নদীর পশ্চিম পারে জোরগাছা ইউনিয়ন আর পূর্বে পাকুল¬্যা। এছাড়া সোনাতলা সদর, মধুপুর, দীগদাইড়, বালুয়া, নারচি, চালুয়াবাড়ি ইউনিয়নসহ সারিয়াকান্দি উপজেলা, শিবগঞ্জ, গাবতলী, গাইবান্ধার সাঘাটা- গোবিন্দগঞ্জ ও জামালাপুরের অসংখ্য মানুষের চলাচলের পথ এটি। বিগত সময়ে এখানে নৌকা দিয়ে পাড়াপার হতো কিন্তু বর্তমানে ১৫ কিলোমিটার দূরের পথ দিয়ে যাতায়াত করলেও এখানে আর কেউ নৌকায় ওঠে না। যার কারণে ঘাটটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তবে নতুন করে যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে এই বাঁশের ব্রিজে।

এ বিষয়ে বাঙালি বাজার ও বাঁশের ব্রিজ তৈরির উদ্যোক্তা বাউল মুকুল বলেন, এক যুগের প্রতিশ্রুতি যখন কেউ বাস্তবায়ন করতে পাড়লো না তখন বাধ্য হয়ে এই অঞ্চলের দুপারের মানুষের মেলবন্ধন সৃষ্টি করতে আমরা সবাই মিলে ৩০০ মিটারের বাঁশের ব্রিজটি তৈরি করেছি।