DailySangram-Logo

গ্রাম-গঞ্জ-শহর

বাস্তবায়ন হচ্ছে দু’টি মেঘা প্রকল্প

শ্রীমতি খালে হাইড্রোলিক ড্যামে স্বপ্ন বুনছে লাখো মানুষ

চট্টগ্রামের পটিয়ার দুঃখ পাহাড়ি শ্রীমতি খালকে ঘিরে বাস্তবায়ন হচ্ছে সরকারের দু’টি মেগা প্রকল্প। এ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে দ্রুতগতিতে। এতে বাড়ছে খালের দুই তীরের লখো মানুষের স্বপ্ন

Printed Edition

নুরুল আমিন মিন্টু, চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামের পটিয়ার দুঃখ পাহাড়ি শ্রীমতি খালকে ঘিরে বাস্তবায়ন হচ্ছে সরকারের দু’টি মেগা প্রকল্প। এ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে দ্রুতগতিতে। এতে বাড়ছে খালের দুই তীরের লখো মানুষের স্বপ্ন। সেখানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচপ্রকল্প এবং শ্রীমতি খালে মাল্টিপারপাস হাইড্রোলিক এলিভেটর ড্যাম নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে এই এলাকার লাখো কৃষকের মুখে এখন যেন বিজয়ের হাসি। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১,২৯১ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে জামান এন্ড ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। প্রকল্প দুটি আগামী ৩১ ডিসেম্বরে শেষ হবে।

কৃষি কর্মকর্তা কল্পনা রহমান বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পটিয়া উপজেলার ১১ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা এবং ৩৪ হাজার একর জমি লবণাক্ততার থেকে রক্ষা পাবে। এছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসন ও ভাঙনরোধে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ উপকৃত হবেন। শ্রীমতি খালে ৮৪ মিটার দৈর্ঘ্যের এই ড্যাম নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৩৩ কোটি টাকা। নদীতীর সংরক্ষণের মাধ্যমে ভাঙন রোধ করা যাবে। প্রকল্পটি ইকো-ট্যুরিজমের সুযোগ সৃষ্টি এবং মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

সেখানে শতাধিক শ্রমিক কাজ করছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাইট ইঞ্জিনিয়ার জুনাইদ শ্রমিকদের সাথে থেকে তদারকি করছেন। আছেন পাউবির কর্মকর্তারাও। জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম ডিভিশন-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ জানান, প্রকল্প দুটির কাজ আগামী ডিসেম্বরেই শেষ হওয়ার লক্ষ্যে দিনরাত কাজ চলছে। প্রতিদিন এই প্রকল্পে ১৫০ জন শ্রমিক কাজে নিয়োজিত রয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতা নিরসন, ভাঙনরোধ ও সেচ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে এলাকার মানুষের জীবনমান ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফরহাদ হোসেন বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্পের আওতায় ৭টি ভাগে কাজ এগিয়ে চলেছে। হাইড্রোলিক ড্যাম নির্মাণ শেষ হলে শীতকালে পানি সংরক্ষণ করা যাবে এবং খালের দুপাড়ে প্লেচিং ওয়াল নির্মাণের ফলে ভাঙন রোধ ও বন্যা থেকে এলাকাবাসীর বাড়িঘর ও চাষাবাদ এবং মাছের পুকুর রক্ষা পাবে। এর মধ্যে জমি অধিগ্রহণ, খালের দুপাড়ে ফুটওভার ব্রীজ নির্মাণ, সেচ অবকাঠামো, খাল পুনঃখনন, বেড়িবাঁধ নির্মাণ, নদীতীর সংরক্ষণ, ফ্লাড ওয়াল নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে।

“হাইড্রোলিক ড্যাম নির্মাণের উজানে ৯ শত ফুট এবং ভাটিতে ৮৫০ ফুট প্লেচিং ওয়ালের কাজ শেষ পর্যায়ে। ৩০ কিলোমিটার খাল পুনঃখননের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২১টি সুইচ গেট নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে ১২.৫০ কিলোমিটার। ফ্লাডওয়াল নির্মাণের ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তবে ভূমি মালিকানা জটিলতাসহ নানাবিধ কারণে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ এখনো শেষ হয়নি।”

স্থানীয় কৃষক মো. আবদুল মালেক জানান, সেখানকার কৃষি, মৎস্য চাষ, যোগাযোগ ও ইকো ট্যুরিজম অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। সৃষ্টি হবে নতুন উদ্যোক্তা। ঘুচবে এলাকার বেকারত্ব। শীতকালে পানির অভাবে রবি চাষের যে ক্ষতি হতো তা কাটিয়ে উঠে জাতীয় পর্যায়েও এই এলাকার উৎপাদিত সব্জি দেশের চাহিদা পূরণে সক্ষম হবে।