গ্রাম-গঞ্জ-শহর
রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও গণহত্যার বিচার শেষ করে নির্বাচন দিতে হবে --- নূরুল ইসলাম বুলবুল
আমরা সমাজ সেবা দলমত ধর্ম বর্ণের ঊর্ধ্বে বিবেচনা করি। জামায়াতে ইসলামী সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগরিষ্ঠের বিভাজনে বিশ্বাস করে না, জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রের প্রতিটি মানুষকে নাগরিক হিসেবে সমান দৃষ্টিতে মূল্যায়ন করে।
Printed Edition
মানুষের প্রয়োজনে মানবিক সেবা করাই জামায়াতে ইসলামীর বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাটি ও মানুষের নেতা মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, যেখানেই মানুষ বিপদে-আপদে পড়ে জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান সেখানেই সবার আগে ছুটে যান। জামায়াতের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অগ্নি দুর্ঘটনা, সড়ক দুর্ঘটনা এবং যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে জরুরি সহায়তা নিয়ে হাজির হয় আমাদের নেতাকর্মী। আমরা সমাজ সেবা দলমত ধর্ম বর্ণের ঊর্ধ্বে বিবেচনা করি। জামায়াতে ইসলামী সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগরিষ্ঠের বিভাজনে বিশ্বাস করে না, জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রের প্রতিটি মানুষকে নাগরিক হিসেবে সমান দৃষ্টিতে মূল্যায়ন করে।
গতকাল সোমবার বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে আত্মকর্মসংস্থান ও স্বনির্ভর করণের লক্ষ্যে দরিদ্র অসচ্ছল পরিবারদের মাঝে সেলাই মেশিন, গবাদিপশু ও নগদ অর্থ বিতরণ এবং প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসনে হুইলচেয়ার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ৪ দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে কাজ করে। আমরা মানুষকে আল্লাহর সত্য দ্বীনের দিকে আহ্বান জানাই। যারা এই আহ্বানে এগিয়ে আসে আমরা তাদেরকে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের দেওয়ার উপযোগী করে তুলতে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। আমাদের তৃতীয় দফা কর্মসূচি হচ্ছে সমাজ সংস্কার ও সমাজ সেবা করা। জামায়াতে ইসলামীর চতুর্থ দফা কর্মসূচি হচ্ছে, অসৎ, দুর্নীতি পরায়ন নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সৎ, যোগ্য ও আদর্শ নেতৃত্ব তৈরি করা। নৈতিক উন্নতি ও দক্ষ নেতৃত্ব গঠনে আমরা, আমাদের নেতাকর্মীদের গড়ে তুলি। আমাদের দলের আমীর শহীদ মতিউর রহমান নিজামী এবং সেক্রেটারি জেনারেল শহীদ আলী আহসান মুজাহিদ ৩টি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু তাদের দ্বারা রাষ্ট্রের এক পয়সাও দুর্নীতি কিংবা লুটপাট হয়নি। এমনকি নিজ দলের কোন নেতাকর্মীও দুর্নীতি কিংবা লুটপাট করেনি। আত্মীয়করণ কিংবা দলীয়করণ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে নাই। জামায়াতে ইসলামী দায়িত্বকে জনগণের আমানত মনে করে। তাই জনগণ জামায়াতে ইসলামীর হাতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিলে জামায়াতে ইসলামী জনগণকে তাদের প্রত্যাশিত বৈষম্যহীন একটি আদর্শ কল্যাণ রাষ্ট্র উপহার দিবে।
রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও গণহত্যার বিচার শেষ করে নির্বাচন দিতে হবে মন্তব্য করে মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, শহীদদের রক্তের সাথে কাউকে বেঈমানী করতে দেওয়া হবে না। জনগণ চায়, অবিলম্বে প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজ ও গণহত্যার বিচার শেষ করে নির্বাচন দিয়ে জনগণের প্রতিনিধির কাছে রাষ্ট্রের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হোক। সংস্কার ও গণহত্যার বিচার শেষ না করে নির্বাচন দিলে ওই নির্বাচন হবে শহীদের রক্তের সাথে তামাশা আর আহতদের সাথে ঠাড্ডা করার শামিল।
সভা শেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চুনাখালি এনায়েতুল্লাহ্ আলিম মাদ্রাসা মাঠে অসচ্ছল পরিবারদের মাঝে সেলাই মেশিন, গবাদিপশু ও নগদ অর্থ বিতরণ এবং প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসনে হুইলচেয়ার বিতরণ করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাটি ও মানুষের নেতা মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আমীর হাফেজ মাওলানা আব্দুল আলিম, সেক্রেটারি আব্দুর রহমান সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
পরে স্থানীয় চুনাখালি আলীম মাদরাসা মাঠে চকবহরম লাকী স্টার ক্লাবের আয়োজনে টিভি কাপ মিনি ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলার উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধান অতিথি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল। খেলায় নিচুধুমী একাদশ ২-১ গোলে চ্যাম্পিয়ান হয়। এতে রানার্স আপ পুরস্কার গ্রহণ করে জমজম ফার্মেসী।
চুনাখালি এনায়েতুল্লাহ সিনিয়র মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. এন্তাজুল হকের সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ৬নং রানীহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফেজ মো. রহমত আলী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আমীর হাফেজ মাওলানা আব্দুল আলিম, বিশিষ্ট সমাজ সেবক মাওলানা মো. হাবিবুর রহমান।
এরআগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার প্রাণকেন্দ্রের লালাপাড়ায় আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি ড. মিজানুর রহমান আজহারী'র তাফসীরুল কুরআন মাহফিলের সার্বিক প্রস্তুতি ও মাঠ পরিদর্শন করে মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, এখানকার মানুষ ইসলাম ও শান্তি প্রিয়। এই অঞ্চলে ড. মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিল ঘিরে মানুষের উৎসাহ-উদ্দীপনার শেষ নেই। মানুষ এখন প্রহর গুনছে মিজানুর রহমানের কাছ থেকে দ্বীনের কথা জানতে। এই মাহফিলের এক মাঠেই সব আয়োজন। যা সারা বাংলাদেশে অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করবে। সুবিশাল মাঠের একপাশে মহিলাদের জন্য ব্যবস্থা এবং নিরাপদ গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা রয়েছে। এসময় মাহফিল বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি জাবালে নূর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবু জাফর গিফারী সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।