DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

রাজধানী

চমক থাকছে নতুন রাজনৈতিক দলে

ঘোষণা হতে পারে ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি

চমক নিয়েই প্রকাশ্যে আসার অপেক্ষায় তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল। দলের নাম থেকে শুরু করে কমিটি ও প্রতীক এবং কমিটির আকার এবং বৈচিত্র্য পর্যন্ত সবকিছুতেই চমক থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইবরাহীম খলিল
Printed Edition

চমক নিয়েই প্রকাশ্যে আসার অপেক্ষায় তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল। দলের নাম থেকে শুরু করে কমিটি ও প্রতীক এবং কমিটির আকার এবং বৈচিত্র্য পর্যন্ত সবকিছুতেই চমক থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। আসছে শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের রাস্তায় অর্থাৎ মানিক মিয়া এভিনিউতে বিশাল সমাবেশের মাধ্যমে তারুন্যদীপ্ত রাজনৈতিক দলটির আত্মপ্রকাশের কথা ঘোষণা করা হয়েছে ইতিমধ্যে। এতদিন আলোচনায় থাকলেও গতকাল মঙ্গলবার উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগের মাধ্যমে পরিষ্কার হলো যে নাহিদ ইসলাম নতুন দলের আহ্বায়ক হচ্ছেন। আর সদস্য সচিব থাকছেন ডাকসুর সাবেক ছাত্রনেতা আখতার হোসেন।

প্রসঙ্গত, এত দিন ঠিক কোনদিন আত্মপ্রকাশ ঘটছে তা নিয়ে এক ধরণে ধোঁয়াশায় ছিল সবাই। জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার পর কিছুটা উত্তেজনা কমেছে। তবে নাম থেকে শুরু করে প্রতীক নির্ধারণ ও কমিটির বৈশিষ্ট্য নিয়ে মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। সবাই তাকিয়ে আছেন নতুন রাজনৈতিক দলের দিকে। কি চমক থাকছে নতুন দলে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এগুলো কেবল ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হবে। এর আগে সুনির্দিষ্টভাবে প্রকাশ করার সুযোগ নাই। জানারও সুযোগ নাই। এতে বোঝা যাচ্ছে বিষয়গুলো খুব গোপনীয়ভাবে এবং নীতি নির্ধারণে গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে। কেউ কেউ অনুমানের ওপর ভিত্তি করে নানা কথা লিখছেন।

অবশ্য দৈনিক সংগ্রামকে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছিল যে, রমযানের আগেই নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটবে। আরেকটি সূত্র নিশ্চয়তা দিয়েছিল যে, নাহিদ-আখতারের নেতৃত্বেই আসবে তরুণদের রাজনৈতিক দল।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে থাকা এক নেতা দৈনিক সংগ্রামকে নিশ্চিত করেছেন যে আত্মপ্রকাশের দিন ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হবে। যে বিষয়গুলো অনিষ্পন্ন অবস্থায় আছে নাহিদ ইসলাম পদত্যাগের ফলে এই সিদ্ধান্তগুলো তাড়াতাড়ি চূড়ান্ত করা সহজ হবে।

সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, শীর্ষ ৬টি পদ ইতিমধ্যে নির্ধারণ হয়ে গেছে। এর আগে ৪টি পদে চার জনের নাম ঠিক করা হলেও দুজনের কি পদ হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা বিলম্ব হয়। তবে গতকাল পর্যন্ত সেই পদ নিয়ে সবাই ঐক্যমতে পৌঁছাতে পেরেছে সিনিয়র নীতি নির্ধারণের পর্যায়ে থাকা নেতারা। দুজনের জন্য সিনিয়র সদস্য সচিব এবং সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক পদ সৃষ্টি করা হয়েছে।

এদিকে নতুন দলের আত্মপ্রকাশের দিন বড় সড় জমায়েতের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেদিন কয়েক লাখ মানুষের সমাগম হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দলটির অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে প্রতিটি জেলা থেকে মানুষ আসবে ওই দিনের সমাবেশে। এজন্য উপস্থিতি কয়েক লাখ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সরগরম কেন্দ্রীয় অফিস : শেষ সময়ে এসে বাংলামোটরের রূপায়ন টাওয়ারে অবস্থিত জাতীয় নাগরিক কমিটির অফিস এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অফিস সব সময় সরগরম থাকছে। গভীর রাত পর্যন্ত এখানে ছাত্র জনতার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। ছাত্রজনতার বাইরেও অনেক পেশার মানুষদের এই অফিসে আসতে দেখা গেছে। সাবেক সেনা কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সব শ্রেণিপেশার মানুষ এসে আড্ডা দেওয়ার পাশাপাশি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দর্শন জানার চেষ্টা করছেন।

প্রাধান্য থাকছে তারুণ্যের : সব বয়সের মানুষকে নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা হলেও নীতি নির্ধারণে তারুণ্যকেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে বয়স বেশি হলেও মনে তারুণ্য এবং এই সময়কে ধারণ করতে পেরেছে এবং তারুণ্যের ভাবনাটাকে বোঝার সক্ষমতা রয়েছে এরূপ মানুষগুলোকেই রাখা হচ্ছে বলে দৈনিক সংগ্রামকে জানিয়েছেন একজন নারী নীতি নির্ধারক।

রাত জেগে অনেককেই কমিটি দেওয়ার কাজ করতে দেখা গেছে গত কয়েকদিন ধরে। সেইসাথে প্রতিদিন একাধিক নীতি নির্ধারণী মিটিংয়ে উপস্থিত হচ্ছেন তারা। দৈনিক সংগ্রামের সাথে আলাপকালে তারা জানান, ঢাকা মহানগর থেকে শুরু করে ঢাকার বাইরে জেলা উপজেলা পর্যায়ে কমিটিগুলো দিতে গিয়ে হিমশিম অবস্থা। তাই রাতদিন কাজ করা লাগছে। আবার কমিটি দেওয়ার পর নতুন নেতাদের ফুল দিয়ে বরণ করতে দেখা গেছে কর্মীদের। ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে কমিটি দেওয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত সমন্বয়ক মেহরাব সিফাত জানান, তার দেওয়া কমিটিতে ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে বয়স, এরকম তরুণদের কমিটিতে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। এরাই দেশ গঠনে ভূমিকা পালন করতে পারবে বলে বিশ^াস তার।

সবার দৃষ্টি নতুন দলে : এদিকে তরুণদের দলের দিতে তাকিয়ে আছে দেশের মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলো। তারুণ্যদীপ্ত নতুন রাজনৈতিক দলকে কেউ কেউ স্বাগত জানালেও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো সতর্ক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে। অবশ্য কেউ কেউ বিরোধীতা এবং কিং দল হিসেবে আখ্যায়িত করছে নতুন রাজনৈতিক দলকে। তবে সাধারণ মানুষ এবং বিজ্ঞজনেরা নতুন রাজনৈতিক দলটির দিকে সতর্ক নজর রাখছেন।