রাজধানী
সংসদ কার্যকরে বিলম্ব হলে অস্থিরতা বাড়বে -- তারেক রহমান
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হচ্ছেন
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের লক্ষ্য থেকে কিছুটা হলেও বিচ্যুত হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন তারেক রহমান। গতকাল রোববার ঢাকা বার আইনজীবীদের এক অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই মন্তব্য করেন।
Printed Edition

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের লক্ষ্য থেকে কিছুটা হলেও বিচ্যুত হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন তারেক রহমান। গতকাল রোববার ঢাকা বার আইনজীবীদের এক অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন ব্যক্তির কথাবার্তা থেকে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে, তারা এবং বিভিন্ন ব্যক্তির আলোচনা থেকেও ফুটে উঠছে যে, তারা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) সম্ভবত তাদের লক্ষ্য থেকে কিছুটা হলেও বিচ্যুত হচ্ছেন। ক্ষেত্র বিশেষে এবং বিভিন্ন ব্যক্তির বিভিন্ন স্টেটেমেন্ট থেকে বিভিন্ন রকম কনফিউশন তৈরি হচ্ছে, মানুষ বিভিন্নভাবে কনফিউজড হচ্ছে। খুব স্বাভাবিকভাবে রাজনীতিতে যখন কনফিউশন থাকবে তখন অস্থিরতা দেখা দেবে।
তারেক রহমান বলেন, আমাদের এই অস্থিরতার কারণে দেশের প্রত্যেকটি মানুষ সমস্যার সম্মুখীন হবে। কারণ যখনই রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকবে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যদি আমরা এনসিউর করতে না পারি, তাহলে আমরা যে যত সংস্কারই ঘোষণা করি না কেনো, যে যত নীতি গ্রহণ করি না কেনো কোনটাই সাকসেসফুল হবে না।
সরকারের কর্মকা- সর্বক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, দেশের রাজনীতি অস্থির হলে এটি অ্যাফেক্ট করবে অর্থনীতি এবং অর্থনীতি অ্যাফেক্ট করবে সব কিছুতে। যারা আইন পেশাতে আছেন আপনার পেশাকেও অ্যাফেক্ট করবে খুব স্বাভাবিকভাবে। ক্ষুদ্র মুদি দোকানদার বলি, একজন রিকসাচালক বলি, একজন সিএনজিচালক বলি, একজন মাঝারি ব্যবসায়ী বলি যে কারো কথাই বলি না কেনো, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে অ্যাফেক্ট করবে এবং প্রতিটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সংসদ কার্যকরে বিলম্ব হলে অস্থিরতা বাড়বে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারসহ প্রতিটি মানুষ মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত, দেশকে আগামীদিনে যত দ্রুত সম্ভব একটি স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে আসা। আমরা যখন দেশকে স্থিতি অবস্থার মধ্যে নিয়ে আসব, সারা পৃথিবীতে যেটি গ্রহণযোগ্য বিষয় যে রাজনৈতিক অস্থিরতা বলুন বা রাজনৈতিক আলোচনা বলুন, রাজনৈতিক তর্কবির্তক বলুন সেটিকে সংসদের মধ্যে নিয়ে আসা। সংসদই হচ্ছে সবচেয়ে মূল জায়গা যেখানে আলোচনা সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেনো সেটি সংসদের ভেতরে হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, আমরা সংসদকে কার্যকর করতে যত দেরি করব, এই অস্থিরতা, এই তর্ক-বিতর্ক সবকিছু সংসদের বাইরে চারদিকে ছড়াতে থাকবে। সংসদের বাইরে যত বেশি এটি ছড়াবে তত সব জায়গায় বিভিন্নভাবে অর্থনীতি থেকে শুরু করে, সামাজিক অবস্থা থেকে শুরু করে সকল জায়গায় অস্থিরতা দেখা দেবে যা সামগ্রিকভাবে দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
রোববার বিকালে ঢাকা বার জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের উদ্যোগ ঢাকা বার সমিতির ভবনের মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পক্তি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণের এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
আইনজীবীদের সমাজের দর্পণ হিসেবে আখ্যা দিয়ে ‘দেশে স্থিতিশীলতা আনার ক্ষেত্রে আইনজীবীদের ভূমিকা’ চান তারেক রহমান। তিনি বলেন, আমরা যত দ্রুত দেশে একটি স্থিতি অবস্থাÑÑ এটি আগে করব, নাকি ওটি আগে করব, ওটি আগে করব নাকি এটি আগে করব, এই তর্কবিতর্ক যদি চলতে থাকে তাহলে সামগ্রিকভাবে জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে আরও বেশি, দেশ তো ক্ষতিগ্রস্ত হবেই এবং বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেবে। সেজন্য আমরা বিএনপির অবস্থান থেকে মনে করি, রাজনৈতিক দল হিসেবে, একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে মনে করি দেশে যত দ্রুত সম্ভব একটি স্থিতি অবস্থা আনা সম্ভব হবে, তত দ্রুত দেশকে ধবংসের কিণারা থেকে ধীরে ধীরে বের করে, সরিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, যারা সংস্কারের কথা বলছেন, ও্ইসব সংস্কারের বাস্তবায়নে সংসদের প্রয়োজন হবে। একই সঙ্গে দুই ্ বছরের অধিক সময় আগে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো নিয়ে রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের ৩১ দফা প্রণয়ন হওয়ার বিষয়টি আইনজীবীদের সামনে তুলে ধরে এই ৩১ দফার বুকলেট জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বানও জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ঢাকা বার শাখার আহ্বায়ক অ্যাডভোভেট খোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান, বিএনপি মিডিয়া সেলের মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, ঢাকা বারের অ্যাডভেকেট খোরশেদ মিয়া, অ্যাডভোকেট সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।