রবিবার ১৯ মে ২০২৪
Online Edition

মাওলানা হাবিবুর রহমানের দাফন সম্পন্ন

দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) সংবাদদাতা : কুষ্টিয়ার বুলবুলি খ্যাত জামায়াতে ইসলামীর সাবেক শূরা ও সংসদ সদস্য প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন হযরত মাওলানা হাবিবুর রহমানের দাফন গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ৭টা ৫৫ মিনিটে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলাধীন লোকনাথপুরস্থ নিজ বাসভবনে অসুস্থতা ও বার্ধ্যক্য জনিত কারণে তিনি ৭৫ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। ওয়ায়েজীন ও জামায়াতে ইসলামীর প্রবীণ এ নেতা শুধুমাত্র অত্রাঞ্চলে নয় দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিটি জনপদে তার পদচারণা থাকায় জনপ্রিয় এ নেতার মৃত্যু সংবাদ মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়লে গভীর রাত পর্যন্ত তাকে শেষ বারের মতো দেখার জন্য ভিড় জমায়। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় স্থানীয় ফুটবল মাঠে তার জানাযার সময় নির্ধারণ করা হলেও ভোর হতেই বাস-মাইক্রো বাস, আলমসাধু, পাওয়ার ট্রলি, মোটর সাইকেল ও পায়ে হেঁটে হাজার হাজার মানুষ তার জানাযায় যোগ দেয়। বেলা ৯টা না বাজতেই ফুটবল মাঠ জনসমুদ্রে রূপ নেয়। যা ছিলো এ অঞ্চলের সর্ববৃহৎ জানাযা। চুয়াডাঙ্গার সকল রুটের গন্তব্য ছিলো যেন লোকনাথপুর। যানাজাপূর্ব সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য গাজি এনামুল হক, চুয়াডাঙ্গা জেলা আমীর আনোয়ারুল হক মালিক, ঝিনাইদহ আমীর ড. মোজাম্মেল হক, কুষ্টিয়া জেলা আমীর সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াহেদ, নড়াইলের আমীর নুরুন নবী জেহাদী, মেহেরপুরের আমীর হাজি ছমির উদ্দিন, যশোর জেলা সেক্রেটারি নুরুন নবী, শূরা সদস্য প্রফেসর মতিয়ার রহমান, অধ্যক্ষ মাও ইউসুফ আলী, আলমডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান ডাঃ হুমায়ন কবির, জীবননগর পৌর মেয়র নওয়াব আলী, কুমারি ইউপি চেয়ারম্যান আ. কাদের, দামুড়হুদা ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল হাসান তনু, হাউলী চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, জেলা বিএনপি নেতা অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি লিয়াকত আলী শাহ, বিজেপি নেতা রবিউল হোসেন শুকলাল, জেপি নেতা হাবিবুর রহমান হবি, আ.লীগ নেতা আ. লতিফ অমল, এ্যাড সেলিম উদ্দিন, এ্যাড সাজাহান মুকুল, নুরুল ইসলাম, রুহুল আমীন প্রমুখ। বর্ণাঢ্য জীবন অবিভক্ত ভারতের চাপড়া থানায় জন্ম গ্রহণকারি মাও হাবিবুর রহমান ১৯৫০ সালে বাবা-মার সাথে দামুড়হুদা উপজেলার হোগলডাঙ্গা গ্রামে আসেন। প্রথমে কুমিল্লা কামরাঙ্গীরচর ও পরে ঢাকা আলীয়া মাদরাসা থেকে কামিল পাস করেন। তিনি ১৯৬০ সালে ছাত্র সংঘ ও ১৯৬৯ সালে জামায়াতে যোগদান করেন। ১৯৯১ সালে তিনি জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং বিএনপির বিরূপ আচরণে ক্ষুদ্ধ মাওলানা ‘‘কার অছিলায় শিন্নি খাইল্যা.. মোল্লা চিনলা না’’ বলে সংসদে মন্তব্য করে সারাদেশে আলোচিত হন। তিনি ২০০৯ সালে ষড়যন্ত্রের নির্বাচনে লক্ষাধিক ভোট পেয়েও মাত্র ১০ হাজার ভোটে পরাজিত হন। নির্বাচনের সময় দুর্ঘটনা ও অন্যান্য কারণে তিনি দেড় বছর শয্যাগত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার কথিত যুদ্ধাপরাধীর অভিযোগ এনে বিগত এক বছর যাবত বাড়ির প্রধান ফটকে পুলিশী প্রহরা বসালেও গতকাল সরকারকে ফাঁকি দিয়ে আল্লার দরবারে হাজিরা দেন। যুদ্ধাপরাধী নয় বরং নিরপরাধ প্রমাণ করতেই যেন লক্ষ জনতা গতকাল অশ্রুসিক্ত নয়নে আল্লার দরবারে ফরিয়াদ জানায়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ